স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র, নাটক ও বিজ্ঞাপনচিত্র বানিয়ে হাত পাকিয়েছেন নুহাশ হুমায়ূন। এবার তিনি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে মাঠে নামছেন। সত্যিকারের ঘটনা নিয়ে নির্মিত এই ছবির নাম ‘মুভিং বাংলাদেশ’। ছবিটিসহ অন্যান্য প্রসঙ্গে কথা হলো তাঁর সঙ্গে।
প্রশ্ন :
যত দূর জানতে পেরেছি, আপনার পরিচালিত পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র একটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে তৈরি হবে। কেন এই গল্পটা বেছে নিলেন?
সত্যিকারের ঘটনা অবলম্বনে ছবি বানানো খুবই চ্যালেঞ্জিং। নিজের তৈরি গল্পে অনেক স্বাধীনতা থাকলেও এটাতে সত্যিকারে ঘটনায় তা সম্ভব হয় না। সত্যিকারের ঘটনা অবলম্বনে হলেও এটা কিন্তু ডকুমেন্টারি না। মূল গল্পটা রেখে নিজের মতো করে গল্প সাজানো হয়েছে। আমার কাছে এই চ্যালেঞ্জটা খুবই ইন্টারেস্টিং লেগেছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সত্যিকারের গল্প নিয়ে সিনেমা খুব একটা হয়নি। সত্যিকারের গল্প নিয়ে অনেক সিনেমা তৈরি হওয়া উচিত। এর বাইরেও কিছু ব্যাপার ছিল।
প্রশ্ন :
সেটা কেমন?
চলচ্চিত্র ‘ইতি তোমারই ঢাকা’ যখন বুসান উৎসবে দেখানো হয়, সেই সময় দর্শকের কাছ থেকে অসাধারণ অভ্যর্থনা পেয়েছি। নেটফ্লিক্সে ছবিটি দেখানোর পর এই অভ্যর্থনা তা আরও বাড়ে। এরপর মাথায় ঘুরছিল, আমার নিজের দেশকে উপস্থাপন করতে চাই। সিনেমার পৃথিবীকে আন্তর্জাতিক মানের কিছু একটা দিতে চাই। কারণ, এখন পুরো পৃথিবীটাই একটা দেশ। এই ছবির মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটু অন্যভাবে দেখাতে চাই। সাধারণত, সবাই যেভাবে দেখে না। এটা অনুপ্রেরণার গল্প, একজন তরুণের ভ্রমণের গল্প।
প্রশ্ন :
ছবিটি এখন কোন পর্যায়ে আছে?
এক বছর ধরে গবেষণা চলেছে। চিত্রনাট্য চূড়ান্ত হয়েছে। ছবির গল্পটা ভারতের ফিল্ম বাজারে প্রথম লঞ্চিং হবে। কো-প্রোডাকশন মার্কেটে, যেখানে ভারতের বড় বড় প্রযোজকও থাকবেন। আমি এটা নিয়ে খুবই এক্সাইটেড।
প্রশ্ন :
কবে নাগাদ শুটিং শুরু হতে পারে?
২০২১ সালের শেষ অথবা ২০২২ সালের প্রথমে কাজ শুরু হবে।
প্রশ্ন :
এত দিন কী করবেন?
বিজ্ঞাপনচিত্র আর নাটকের কাজ চলবে। এর ফাঁকে ফাঁকে সিনেমার কাজও এগিয়ে নিয়ে যাব।
প্রশ্ন :
কারা অভিনয় করবে?
একদম নতুন কেউও হতে পরে। তবে এখনো সিদ্ধান্ত নিইনি। অভিনয়শিল্পী বাছাইয়ের প্রক্রিয়াটা দীর্ঘ হবে। অডিশনসহ অন্যান্য প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আসতে হবে। ছবির অভিনয়শিল্পী বাছাইয়ে এক চুলও ছাড় নয়।
প্রশ্ন :
যত দূর জানি, মা আপনাকে ছোটবেলায় ক্যামেরাও কিনে দিয়েছিলেন। তিনিই কি আপনার চলচ্চিত্রে আসার অনুপ্রেরণা?
বড় পর্দায় আসার পেছনে আমার একমাত্র অনুপ্রেরণা মা। তিনি আমাকে ১২-১৩ বছর বয়সে ক্যামেরা কিনে দেন। মা শুরুতে ভেবেছিল, শখের বশে আমি ক্যামেরা ব্যবহার করব। পরে দেখল, শর্টফিল্ম বানাচ্ছি। মা আমাকে বাসায় শুটিং করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। বাবাকেও মা এই অনুমতি দেননি! মা আমার এই ভ্রমণের সঙ্গে সব সময় ছিলেন। বাবা তো আছেনই, তবে সাপোর্ট মা-ই দিয়েছেন।
প্রশ্ন :
১ জানুয়ারি আপনার জন্মদিন ছিল। জন্মদিন এলে কেমন লাগে? আলাদা কোনো ভাবনা...
খুব ভালো লাগে। এই একটা দিন শুধু উদ্যাপনে থাকতে ভালো লাগে। কারণ আমি সারা বছর কোনো না কোনো কাজে থাকি। জন্মদিন এলেই মনে হয়, কিছু মাইলস্টোন সেট করতে হবে। ২০২০ সালে আমাদের সবার ওপর অনেক চাপ গেছে। তাই নতুন বছরে কোনো রেজ্যুলেশন ঠিক করিনি। যা হওয়ার হবে, আমি আমার মতো করে যা ভালো লাগে করে যাব।
প্রশ্ন :
নুহাশ কী করতে চায়, কিন্তু সময়ের অভাবে পারে না?
আমি ছবি আঁকতে খুব পছন্দ করতাম, কিন্তু এখন সময় পাই না। সামনে সময় বের করে এটাও করতে চাই।