বিয়ের শখ পুরোপুরি মিটে গেছে, আর ইচ্ছা নেই : শাবনূর

সন্তানকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় থাকেন শাবনূর। সেখানে কেমন কাটছে তাঁর সময়। তাঁকে নিয়ে ভক্তদের কৌতূহলের শেষ নেই। গতকাল মঙ্গলবার জনপ্রিয় এই অভিনেত্রীর সঙ্গে যখন কথা হয়, তখন তিনি মা–বোনকে নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছিলেন। কথায় কথায় শাবনূর জানালেন তাঁর নতুন পরিকল্পনার কথা।

প্রশ্ন :

করোনায় কেমন কাটছে?

এখানকার নিয়মকানুন কড়া। সবাই নিয়ম মেনে চলে। দেশের মানুষের জন্য খুব চিন্তা হয়। নিও নরমালে সুযোগ পেলেই ঘুরে বেড়িয়েছি। কিছুদিন ধরে মাথায় নতুন কিছু পরিকল্পনা ঘুরপাক খাচ্ছে।

প্রশ্ন :

কী পরিকল্পনা?

আমার অভিনয় করা সিনেমার জনপ্রিয় গানগুলোর নতুন সংগীতায়োজন করলে মন্দ হয় না। তরুণ প্রজন্মেরও ভালো লাগবে। এসব গান আমার ইউটিউব চ্যানেলে থাকবে।

শাবনুর। ছবি: প্রথম আলো

প্রশ্ন :

ইউটিউব চ্যানেল করছেন?

বলিউডের অনেকের নিজের চ্যানেল আছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও তাঁরা খুব অ্যাকটিভ। ভাবলাম, আমিও করতে পারি, ব্যস্ত থাকা হবে। ভক্তদের কাছাকাছি থাকা যাবে। আমার বোন সহযোগিতা করবে বলেছে।

প্রশ্ন :

বলিউডে আপনার প্রিয় কে? যার সঙ্গে অভিনয় করতে চাইবেন।

কাজল, মাধুরী ও শ্রীদেবী। নায়কদের মধ্যে শাহরুখ খান, সালমান খান ও আমির খান। সালমান শাহ বেঁচে থাকলে শাহরুখের সঙ্গে একটা সিনেমা কিন্তু করা হতোই।

প্রশ্ন :

একটু বিস্তারিত বলবেন?

সালমান মারা যাওয়ার আগে শাহরুখের সঙ্গে দেখা হয়েছিল। যত দূর জানতে পেরেছি, তখনই আমাদের চারজন একসঙ্গে একটা ছবিতে অভিনয়ের ব্যাপারে কথাও বলেছিল। আমি-শাহরুখ ও সালমান শাহ-কাজলের জুটি বেঁধে একটা ছবি করার কথা মোটামুটি চূড়ান্তও ছিল। পরে আবার ভারতে গিয়ে এ নিয়ে শাহরুখের সঙ্গে সালমান শাহর আলাপের কথা ছিল। ভাগ্য খারাপ, তার আগেই সালমান শাহ আমাদের মাঝ থেকে হারিয়ে গেল।

প্রশ্ন :

আপনার ছেলে আইজানের কথা বলুন।

ও ছয় পেরিয়েছে। ক্লাস ওয়ান শেষ। সিডনিতে পুরোদমে স্কুল চলছে। আইজানের খুব একটা দেখাশোনা করতে হয় না। সে নিজের খেয়াল নিজে রাখতে শিখেছে। এখানকার বাচ্চারা এমনিতে খুব স্মার্ট।

শাবনূর।
ছবি: প্রথম আলো

প্রশ্ন :

আপনার সময় কেমন কাটছে?


বাংলাদেশের চেয়েও এখানে আমার বেশি বন্ধুবান্ধব। অনেক ঘোরাঘুরি করি। ভাবছি, স্বল্পমেয়াদি প্রশিক্ষণ নেব। বাচ্চা যেহেতু বড় হয়ে যাচ্ছে, এখন অনেক কিছু করা সম্ভব।

শাবনূর।
ছবি: প্রথম আলো

প্রশ্ন :

জীবনসঙ্গী নিয়ে কিছু ভেবেছেন?

ন্যাড়া একবারই বেলতলায় যায় (হাসি)। আমার আর ইচ্ছা নেই। বিয়ের শখ পুরোপুরি মিটে গেছে। আমি মনে করি, দুষ্টু গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল ভালো। পরিবারের সবাইকে নিয়ে বেশ ভালোই আছি। শান্তি নষ্ট করতে চাই না।

প্রশ্ন :

কিন্তু প্রস্তাব তো নিশ্চয় পাচ্ছেন?

সাধারণ একজন মেয়ে যেখানে প্রস্তাব পায়, সেখানে আমার তো প্রস্তাব না পাওয়ার কোনো কারণ নেই। আমার কাছেও বিয়ের প্রস্তাব প্রতিনিয়ত আসে। আমি ওসবে মাথা ঘামাই না, আসতেই থাকুক। আমি বাপু ওসবে আর নেই।

প্রশ্ন :

বাংলাদেশে কি আসবেন?

করোনার মধ্যে অস্ট্রেলিয়া থেকে বাইরে যেতে হলে অনেক ফরমালিটি মেইনটেন করতে হয়। অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়। তাই এই মুহূর্তে যাওয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই। সবকিছু স্বাভাবিক হোক, তারপরই যাব।

বেশ কয়েক বছর ধরে অস্ট্রেলিয়ায় আছেন শাবনূর।
ছবি:ফেসবুক থেক

প্রশ্ন :

বেশ কয়েক বছর ধরে অস্ট্রেলিয়ায় আছেন। সেখানকার কোন বিষয়টি আপনার বেশি ভালো লাগে?

অস্ট্রেলিয়া খুবই শান্তিপ্রিয় একটা দেশ। এখানে সবাই যে যার মতো কাজে ব্যস্ত। কেউ কারও পেছনে লেগে থাকে না। সবচেয়ে বড় কথা, এখানে মানুষকে মানুষ হিসেবেই মূল্যায়ন করা হয়। একজন মানুষ হিসেবে সবারই সমান অধিকার আছে, এটা বিশ্বাস করে।

প্রশ্ন :

বাংলাদেশের কী মিস করেন?

বাঙালি খাবার সবচেয়ে বেশি মিস করি। আর মিস করি দেশি রাজহাস, দেশি মুরগি। অস্ট্রেলিয়ায় ফল আছে, কিন্তু বাংলাদেশে গাছ থেকে আম পেড়ে খাওয়ার কথা মনে পড়ে। গ্রাম আমার বরাবরই ভালো লাগত, ছুটি পেলেই গ্রামে চলে যেতাম। কোন বাড়িতে দেশি মুরগি, ডিম, কলা আছে, নিয়ে আসতাম। আর ঢাকার তিন শ ফিটে প্রায়ই বোরকা পরে যেতাম। ওই দিকের গ্রামে ভালো মাছ, মুরগি আর ফ্রেশ শাকসবজি, ফলমূল পাওয়া যেত।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো ২২ বছরে পদার্পণ করল। পত্রিকাটিকে কীভাবে পাশে পেয়েছেন?

চলচ্চিত্রে ক্যারিয়ার শুরুর কয়েক বছর পরই প্রথম আলোর যাত্রা। সব সময় নানাভাবে পত্রিকাটিকে পাশে পেয়েছি। দেশের সব তারকাকে সম্মান দেওয়ার ক্ষেত্রে পত্রিকাটি অনন্য। প্রথম আলোর তুলনা হয় না। মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারে আমি কয়েকবার সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছি। এই পুরস্কারের মর্যাদা অন্য রকম। এখন দেশের খোঁজখবর নিতে আমি অনলাইনে প্রথম আলো দেখি। প্রথম আলোর জন্য অন্তর থেকে শুভকামনা।

সালমান শাহ ও শাবনূর।
ছবি:সংগৃহীত