মা ভাবেন, আমি এখনো স্কুলের ছোট্ট খোকা

তানজীব সারোয়ার
সংগৃহীত
গত বছর ইউটিউবে চারটি গান প্রকাশিত হয়েছে কণ্ঠশিল্পী তানজীব সারোয়ারের। তার মধ্যে ভ্যালেন্টাইনে প্রকাশিত ‘ডুবে ডুবে’ গানটি বেশ প্রশংসিত হয়েছিল। এ বছরের প্রথম ছয় মাসের প্রস্তুতির কথা জানালেন তিনি। প্রথম আলোর সঙ্গে মুঠোফোনে আলাপচারিতায় জানালেন গানের বাইরে ব্যক্তিগত নানা কথা।

প্রশ্ন :

কী করছেন?

এই তো বাসায় আছি। বাসাতেই আমার স্টুডিও। স্টুডিওতে বসে নতুন গানের কাজ করছি।

প্রশ্ন :

কী কী গান?

তিনটি নতুন গান নিয়ে কাজ করছি। পূজা আর আমি দ্বৈতকণ্ঠে ‘বন্ধু থেকো’ শিরোনামে একটি গান করেছি। গানটির ভিডিও ধারণ করা হয়েছে। ‘ভুল থেকে শিখেছি’ শিরোনামে আরেকটি একক গান করেছি। ভিডিও করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। দুটি গানের কথা ও সুর আমার। মিউজিক সাজিদ সরকারের। এ ছাড়া রাধারমণ দত্তকে ট্রিবিউট করে ‘ভ্রমর কইয়ো গিয়া’ গানটি আমি নিজেই করেছি। এগুলো নিয়েই স্টুডিওতে চলছে টুকটাক কাজ।

প্রশ্ন :

করোনাভাইরাসের প্রকোপের মধ্যে গত এক বছরে গান নিয়ে কতটুকু এগোতে পারলেন?

খারাপ না। করোনার এই দুঃসময়েও চারটি গান প্রকাশ করেছি। তার মধ্যে দুটি নাটকের গান। তিনটি গান সেভাবে আলোচিত হয়নি। তবে ভ্যালেন্টাইনে প্রকাশিত ‘ডুবে ডুবে’ শিরোনামে গানটি এখনো আলোচনায় আছে।

তানজীব সারোয়ার
সংগৃহীত

প্রশ্ন :

কেমন?

প্রায় এক বছর ধরে গানটির ভিডিও থেকে খুব ভালো সাড়া পাচ্ছি। এ পর্যন্ত ইউটিউবে গানটির দর্শক ভিউ ১ কোটি ১১ লাখ পার হয়ে গেছে।

প্রশ্ন :

আপনি নিজে গান লেখেন, সুর করেন ও কণ্ঠ দেন। শিল্পী হিসেবে আপনার ওপর কার কার প্রভাব রয়েছে?

নুসরাত ফতেহ আলী খান আমার আইকন। তাঁকে গুরু মানি। এ ছাড়া রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, লালন সাঁই ও এ যুগের প্রিন্স মাহমুদের দ্বারা আমি প্রভাবিত।

প্রশ্ন :

আর কার কার গান শোনেন?

লাকী আখন্দের গান বেশি শুনি। এ ছাড়া প্রিন্স মাহমুদের অ্যালবামগুলোও শোনা হয়। কারণ, প্রিন্স ভাইয়ের অ্যালবামগুলোতে একাধিক শিল্পীর ভিন্ন ভিন্ন ধরনের গান শোনার সুযোগ আছে।

তানজীব সারোয়ার
সংগৃহীত

প্রশ্ন :

‘ডুবে ডুবে’ গানটিতে আপনার সঙ্গে মডেল হয়েছিলেন লাক্স তারকা সৌমী। শোনা যায় তাঁর সঙ্গে আপনার প্রেম ছিল। ঘটনা কি সত্য?

বিশ্বাস করেন, সে আমার ভালো বন্ধু। শুধুই বন্ধুর সম্পর্ক তাঁর সঙ্গে। এ নিয়ে যদি কেউ অন্য সম্পর্কের কথা ভাবেন, তাহলে ভুল হবে। কারণ, প্রেম বিষয়ে বাসা থেকে বাধা আছে।

প্রশ্ন :

কেমন?

আমি মা–বাবার একমাত্র ছেলে। মা আমাকে চোখে চোখে রাখেন। বোঝেন না, আমার স্টুডিওটাও বাসার বাইরে নিতে দেননি। কাজ না থাকলে মা বাসা থেকে বের হতে দেন না। এমনকি গত থার্টি ফার্স্ট নাইটেও বাইরে বের হতে দেননি মা। মা ভাবেন, আমি এখনো স্কুলের ছোট্ট খোকা।

প্রশ্ন :

সম্পর্কের ব্যাপারে বাসা থেকে বাধা আছে। তাহলে জীবনে প্রেম করেননি?

ঠিক তা না। পাঁচ বছর একটি মেয়ের সঙ্গে প্রেম করেছি। হঠাৎ একদিন মেয়ের মা–বাবা তাঁকে বিয়ে দিয়ে দিলেন। এরপর আর প্রেম করিনি। মায়ের নির্দেশনামতো চলছি। বিয়ের জন্য বাসা থেকে মেয়ে দেখা হচ্ছে।

তানজীব সারোয়ার
সংগৃহীত

প্রশ্ন :

গানের বাজার কেমন দেখছেন?

অনেকটাই ধুঁকে ধুঁকে চলছে। যাঁরা বেশি স্টেজ শো করতেন, তাঁদের অবস্থা সবচেয়ে বেশি খারাপ। তা ছাড়া এখন যে কেউ এসেই শিল্পী হয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের গানের কথা, সুর বা গায়কি কোনো কিছুরই ঠিক থাকছে না। কোনো তালিম নেই, পরিশ্রম নেই। এভাবে গান করে ইউটিউবে গান ছেড়ে দিচ্ছেন, ব্যস। আরেকটি বিষয় হলো, গানের কোম্পানিগুলোর ভূমিকা। অডিও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানগুলো এখন গান তৈরির চেয়ে নাটক নির্মাণে মন দিয়েছে। তবে সবকিছুরই ওঠানামা থাকে। গানের বেলাতেও তাই হয়েছে। আমার বিশ্বাস, অচিরেই এই ক্রান্তিকাল কেটে যাবে।

প্রশ্ন :

নতুন বছরে গানের প্রস্তুতি কেমন?

নতুন বছরের প্রথম ছয় মাসের গান ঠিক করে ফেলেছি। ছয়টি গান প্রকাশ করার ইচ্ছা আছে। ‘সানাই’ শিরোনামে বছরের প্রথম গান এই ভ্যালেন্টাইনে প্রকাশিত হবে সিডি চয়েস থেকে। এটি একটি আইটেম গান। পুরান ঢাকার ভাষায় করা হয়েছে গানটি।