মা ভালো না থাকলে কিছুই ভালো লাগে না
ঢালিউডের জনপ্রিয় তারকা আরিফিন শুভ অভিনীত দুটি সিনেমা মুক্তির অপেক্ষায়। খুব শিগগির কাজ শুরু করবেন আরও তিনটি ছবির। করোনাকালে করেছেন দুটি বিজ্ঞাপনচিত্র। একটি মেরিল পেট্রোলিয়াম জেলির অন্যটি একটি মুঠোফোনের। এসব নিয়ে গতকাল সন্ধ্যায় তাঁর সঙ্গে কথা হলো। তখন তিনি নিকেতনে একটি কর্মশালা করছিলেন।
প্রশ্ন :
কর্মশালা করছেন কিসের?
প্রতিটি কাজ শুরুর আগে আমি কর্মশালা করি। সেই ধারাবাহিকতায় নতুন একটি ওটিটি প্ল্যাটফর্মের জন্য ওয়েব সিরিজে অভিনয়ের ব্যাপারে কথা হয়েছে। তার কর্মশালা করছি।
প্রশ্ন :
এ ক্ষেত্রে নিজের আগ্রহটাই কি বেশি থাকে?
দেশের বাইরে দেখেছি, শুটিংয়ের আগে কর্মশালা করে কাজ শুরু করে। আমিও মনে করি, শুটিংয়ের আগে স্ক্রিপ্ট নিয়ে একটা রিডিং সেশন থাকা উচিত। সংলাপ ও দৃশ্য নিয়ে আলোচনা থাকা দরকার। যাতে শুটিংস্পটে গিয়ে পরিচালক ও অভিনয়শিল্পীর মধ্যে কোনো কনফিউশন না থাকে। শুটিংয়ে শুধু কাজ হবে। যত ধরনের আলোচনা–গবেষণা, তা কর্মশালায় করে নিলে ভালো হয়। এটা পৃথিবীব্যাপী হয়। দুর্ভাগ্য, আমাদের দেশে এটা হয় না। কাকতালীয়ভাবে যাঁরা আবার এই ধরনের কর্মশালা করে কাজ করেন, তাঁদের সঙ্গেই আমার কাজ পড়ে যায়।
প্রশ্ন :
কর্মশালায় অতটা কেউ নেই বলছিলেন। এটা কি হুট করেই আয়োজিত হয়েছে?
আজকের কর্মশালা এক মাস আগে থেকেই ঠিক করা। কিন্তু আর কোনো শিল্পীকে আসতে দেখিনি। আমি, পরিচালক আর অন্য আরেকজন ছিলেন। তাঁরা কেন আসেননি, জানি না। কিন্তু আমাকে প্রতিনিয়ত শিখতে হয়, বুঝতে হয়। তাই বাধ্য হয়ে কর্মশালায় আসি। প্রতিবার শূন্য থেকেই শেখা শুরু করি। সে অনুযায়ী নিজেকে গড়ার চেষ্টা করি।
প্রশ্ন :
কর্মশালা কি বাধ্য হয়ে করা উচিত, নাকি অভিনয়শিল্পীর নিজ দায়িত্বে?
কর্মশালা একজন অভিনয়শিল্পীর নিজের দায়িত্বে করা উচিত। কিছুদিন পর আমাদের দেশেও দেখা যাবে, অনেকেই করছেন। আমাদের এখানে একজন শিল্পীর শুটিংয়ে যাওয়াটা প্রথম কাজ মনে করেন। পৃথিবীতে কোথাও এভাবে হয় না। কর্মশালা, কস্টিউম ঠিক করায় সময় দেওয়া; শুটিং, ডাবিং, প্রমোশন, সবকিছু মিলেই একটা প্যাকেজ। একজন অভিনয়শিল্পীকে সব দায়িত্বের মধ্যেই জড়াতে হয়।
প্রশ্ন :
করোনা শুরুর আগে দুটি সিনেমার শুটিং শেষ করেছিলেন। কী অবস্থা?
‘মিশন এক্সট্রিম’ ও ‘মিশন এক্সট্রিম টু’ ছবি দুটির পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ শুরু হবে। কবে মুক্তি পাবে, তা প্রযোজক ভালো বলতে পারেন।
প্রশ্ন :
নতুন কাজ শুরু করবেন কবে?
আমার তিনটা ছবির শুটিং লাইনআপ চূড়ান্ত। অফিশিয়ালি বলার সময় আসেনি, তাই বলতে চাই না। একটি ছবির কাজ করার পরে আরেকটি কাজ করব।
প্রশ্ন :
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বায়োপিকের খবর কী?
আশা করছি খুব শিগগির এই ছবির কাজ শুরু হবে। তবে বাংলাদেশ, নাকি বাংলাদেশের বাইরে শুটিং হবে, তা কিছুই জানি না।
প্রশ্ন :
খুব শিগগির যদি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বায়োপিকের শুটিং শুরু হয়, তাহলে বড় ধরনের প্রস্তুতির বিষয় আছে...
আমার তিনটি কাজের প্রস্তুতি একসঙ্গে চলছে। সকালে একটা সিনেমার, বিকেলে আরেকটা আর রাতে আরেকটার কর্মশালা করি। তার মধ্যে ফিটনেস ট্রেনিং, ডায়েট ট্রেনিংও চলছে।
প্রশ্ন :
করোনাকালে বদলে যাচ্ছে অনেক কিছু, সিনেমাও...
জানি না। সামনের বছর আসার আগপর্যন্ত কিছুই বলা যাচ্ছে না। সবাই যেভাবে অনিশ্চয়তার দিকে তাকিয়ে আছে, আমিও তাদের মতো। কোন দিকে যাচ্ছি, সেটাই তাকিয়ে দেখছি শুধু। যত দিন ভ্যাকসিন না আসবে, তার আগে কিছু বলা মুশকিল।
প্রশ্ন :
করোনাকালে আপনার সহকর্মীদের অনেকে সিনেমার শুটিং করেছেন, কিন্তু আপনি নেই।
আমি নিজেকে অন্যভাবে সময় দিয়েছি। আর দুটি বিজ্ঞাপনচিত্রের শুটিং করলাম। একটি মোবাইল ফোন সেটের, অন্যটি মেরিল পেট্রোলিয়াম জেলির। পরের বিজ্ঞাপনচিত্রে আমার সহশিল্পী নাবিলা। এটি আমাদের দুজনের একসঙ্গে দ্বিতীয় বিজ্ঞাপন। এই টিমটাও অসাধারণ। তাদের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতাও অসাধারণ।
প্রশ্ন :
নাবিলার সঙ্গে দুটি বিজ্ঞাপনের কাজ করলেন। একসঙ্গে চলচ্চিত্রে দেখার সম্ভাবনা আছে কী?
আমি জানি না। তবে কোনো পরিচালক বা প্রযোজক আমাদের নিয়ে ভাবতেই পারেন। তাঁরা ভাবলে আমাদের দুজনকে একসঙ্গে সিনেমায় দেখা যেতে পারে। নাবিলা এমনিতে খুবই সিনসিয়ার একজন অভিনয়শিল্পী।
প্রশ্ন :
শুনেছি, আপনার মায়ের শরীরটা খারাপ...
অনেক দিন ধরেই মা অসুস্থ। সপ্তাহখানেক হলো একটু ভালো। মা ভালো না থাকলে কিছুই ভালো লাগে না।