যা চেয়েছি, তার চেয়ে অনেক বেশি পেয়েছি

শাবনূর এখন অস্ট্রেলিয়া প্রবাসীসংগৃহীত
ঢালিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শাবনূর এখন প্রবাসী। থাকেন অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে। গতকাল ছিল তাঁর জন্মদিন। এবারের জন্মদিন কেমন কাটল তাঁর? ব্যক্তিগত নানা বিষয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বললেন এই তারকা।

প্রশ্ন :

শুভ জন্মদিন

ধন্যবাদ। আপনাকে ও প্রথম আলোর পাঠকদের শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা।

শাবনূর
ছবি : সংগৃহীত

প্রশ্ন :

জন্মদিনে ফেসবুকে একটি কবিতা পোস্ট করেছেন দেখলাম!

জীবনের রং বড় বিচিত্র/ কখনো লাল কখনো নীল/ কখনো মুক্ত পাখির মতো / কখনো আবার চুপসে যাওয়া ফুলের মতো/ হারিয়ে যায় কত চেনা মুখ/ থেকে যায় শুধু অনাবিল সুখ—এ ধরনের কিছু কথা মনের মধ্যে উঁকিঝুঁকি দিচ্ছিল। তাই লিখে রাখলাম। ইদানীং লিখে রাখি। এমনটা মাঝেমধ্যেই হয়। কিন্তু কখনো প্রকাশ করিনি। এখন যেহেতু ফেসবুকে সময় দিই, তাই সবার সঙ্গে শেয়ার করলাম।

শাবনূর
ছবি : প্রথম আলো

প্রশ্ন :

জন্মদিন কেমন কাটল?

আমার বোন ও তাঁর পরিবারের সবাই ছুটি কাটাতে গেছে। এদিকে আমার ছেলেটার ছোট্ট একটা অপারেশন হয়েছে। তার দেখাশোনায় ব্যস্ত। এর মধ্যেও অনেকে দেখা করতে এসেছিলেন, খাবার এনেছেন। ৯টি কেক কাটতে হয়েছে।

প্রশ্ন :

জন্মদিন এলে কী কী মনে হয়?

সবাই আমাকে এখনো এতটা ভালোবাসেন, এই দিনে সেটা আবার নতুন করে উপলব্ধি হয়। দেশে থাকলে জন্মদিনের প্রথম প্রহরে আমার এক বান্ধবী সব সময় চমকে দিত। অন্য কথা বলে আমাকে তাঁর বাসায় ডেকে নিয়ে বিরাট একটি কেক কাটাত। এবার তা হলো না। তবে বাংলাদেশ সময় রাত ১২টা বাজতে না বাজতেই ফোনে এসএমএস করেছে, অনেকে কথাও বলছে। আর ফেসবুকে কত সুন্দর সুন্দর কথা লিখেছে। সহকর্মীদের ভালোবাসায়ও আমি মুগ্ধ। দেশ ছেড়ে যে এত দূরে আছি, তাঁরা আমাকে সেটা বুঝতেও দেননি।

শাবনূর। ছবি: প্রথম আলো

প্রশ্ন :

দীর্ঘ সময় ধরে চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। আপনার সফলতাও ঈর্ষণীয়। এই সাফল্যকে কীভাবে দেখেন?

দেশের মানুষের মনে শাবনূর হয়ে জায়গা করতে পেরেছি। সবাই আমাকে এখনো নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসেন, এর চেয়ে বড় অর্জন আর কীই–বা হতে পারে। ফেলে আসা জীবনের দিকে তাকালে দেখতে পাই, আমি যা চেয়েছি, তার চেয়ে অনেক বেশি পেয়েছি। মানুষের এই ভালোবাসা আমাকে আপ্লুত করে।

প্রশ্ন :

অনেক দিন আগে খবর বেরিয়েছিল আপনি পরিচালনায় আসছেন। এরপর তো আর খবর নেই।

অভিনয়ে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা থেকেই একটা সময় সিনেমা পরিচালনার পরিকল্পনা করি। সেই পরিকল্পনা থেকে অমন ঘোষণা দিয়েছিলাম। এখন যেহেতু করোনাকাল চলছে, সবকিছু স্বাভাবিক হলে আবার বিষয়টি নিয়ে ভাবব। অন্যদিকে সংসারের ব্যস্ততাও আছে। সব কাজ গুছিয়ে নেওয়ার পর পরিচালনার বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে।

ছেলে বড় হয়ে ক্রিকেটার হোক, এ স্বপ্ন শাবনূরের
কোলাজ : প্রথম আলো

প্রশ্ন :

তিন দশকের অভিনয়জীবনে নিশ্চয় অসংখ্যবার প্রেম ও বিয়ের প্রস্তাব পেয়েছেন?

এতটুকু বলতে পারি, হাজারের বেশি বিয়ের প্রস্তাব পেয়েছি। তবে প্রথম বিয়ের প্রস্তাব কবে পেয়েছিলাম, তা মনে নেই।

প্রশ্ন :

তিন দশকের চলচ্চিত্রজীবন, পেছন ফিরে তাকালে কী দেখেন?

দেশের মানুষ এখনো ভালোবাসে, সম্মান করে। এসব কজনের ভাগ্যে জোটে। এই চলচ্চিত্র আমাকে শাবনূর বানিয়েছে। খ্যাতি, অর্থ সবই দিয়েছে। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছি, মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার পেয়েছি ১০ বার। আরও কত কত সম্মাননা যে পেয়েছি, তার হিসাব নেই। অনেক প্রিয় মানুষকে হারিয়েছি, তাঁদের অনেকের কথা মনে পড়ে। ইদানীং চলচ্চিত্রের অবস্থা দেখে খারাপ লাগে। কী সুন্দর ছিল আমাদের চলচ্চিত্র। এফডিসি ঘিরে এখন নানা রেষারেষি, কত অপ্রীতিকর ঘটনা! তবে বিশ্বাস করি, এসব কেটে যাবে। চলচ্চিত্রের আকাশে আবার ঝলমলে সূর্যের দেখা পাব।

শাবনূর। ছবি: প্রথম আলো