'অভিষেক শব্দটিতে আমার আপত্তি আছে'

আজ মুক্তি পাচ্ছে সরকারি অনুদানে নির্মিত মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ছবি ভুবন মাঝি। গত বুধবার এই ছবির উদ্বোধনী প্রদর্শনী হয় রাজধানীর একটি মাল্টিপ্লেক্সে। ফাখরুল আরেফীন পরিচালিত এই ছবিতে অভিনয় করেছেন ভারতীয় অভিনেতা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। ছবির উদ্বোধনী প্রদর্শনীর আগে এই অভিনেতা চলে আসেন প্রথম আলোর কার্যালয়ে। কথা বলেন তাঁর মুক্তি পাওয়া প্রথম বাংলাদেশি ছবিটি নিয়ে

পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় ছবি: খালেদ সরকার
পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় ছবি: খালেদ সরকার

ছবি মুক্তির দিনগুলো কেমন কাটে?
এই যে এখানে যেমন কাটছে। বিভিন্ন সংবাদপত্র, টিভি চ্যানেল, রেডিওতে সাক্ষাৎকার দিয়ে, দর্শকদের সঙ্গে ছবি নিয়ে কথা বলে। এখানে (বাংলাদেশ) তো ছবি মুক্তির আগে ছবির প্রচারে সময় দিতে পারলাম। আজই এলাম। তাই ব্যস্ততা অনেক বেশি। তবে কলকাতায় এতটা থাকে না।
ছবি ব্যবসা করবে কি করবে না—এ নিয়ে চিন্তা হয় না?
নাহ্। শিল্পী হিসেবে আমার সবটুকু দিয়ে অভিনয় করি আমি। বক্স অফিসের হিসাব মাথায় রাখি না।
২০১৫ সালে ‘ভয়ংকর সুন্দর’ দিয়ে বাংলাদেশে আপনার অভিনয় শুরু, ‘ভুবন মাঝি’ দিয়ে বাংলাদেশের দর্শকদের সামনে হচ্ছে অভিষেক। কেমন লাগছে?
অভিষেক শব্দটিতে আমার আপত্তি আছে। বাংলাদেশের দর্শক আমার অভিনয় নানা মাধ্যমে আগেই দেখেছে। তবে হ্যাঁ, বড় পর্দায় আমার অভিনয় বাংলাদেশের দর্শক এবারই প্রথম দেখবেন। এটা নিয়ে একধরনের উত্তেজনা তো কাজ করছেই।
ঢাকা আর কলকাতা—দুই শহরের মধ্যে বড় পার্থক্য কী?
যানজট! (হাসি) তবে ঠাট্টার অংশটা বাদ দিয়ে যদি সিরিয়াসলি বলি তাহলে বলব, এই শহরের মানুষের আন্তরিকতার সঙ্গে আর কোনো শহরের মিল নেই। কলকাতা হচ্ছে আমার প্রাণের শহর। ওই শহর ছেড়ে বেশি দিন দূরে থাকার কথা ভাবতেও পারি না। কলকাতার সঙ্গে কোনো শহরেরই তুলনা হয় না। তবে এটা বলব যে ঢাকার মানুষের মতো আন্তরিকতা আর সবাইকে আপন করে নেওয়ার ব্যাপারটি সেখানেও এতটা দেখা যায় না।
কাজের ক্ষেত্রে দুই ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে কোনো পার্থক্য?
দুই বছর ধরে এখানে কাজ করছি আমি। বাংলাদেশের মতো গ্রোয়িং একটি ইন্ডাস্ট্রিতে অনেক পরিবর্তন এখন দেখতে পাই। বিশেষত আয়নাবাজি ছবির পর থেকে পুরো ইন্ডাস্ট্রিতে একধরনের নতুন এনার্জি দেখতে পাচ্ছি। যাঁরা সিনেমায় আসতে চান, তাঁদের মধ্যে নতুন একটা তাড়না কাজ করতে শুরু করেছে।
‘ভুবন মাঝি’তে কাজ করার আগে আপনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ব্যাপারে কার কাছ থেকে শুনেছেন?
আমার বাবার কাছ থেকে। যদিও এ দেশের সঙ্গে তাঁর সরাসরি কোনো যোগাযোগ ছিল না। তবে তিনিই আমাকে মুক্তিযুদ্ধের গল্পগুলো সবচেয়ে বেশি বলতেন। শেখ মুজিবুর রহমানের কথাও তাঁর কাছে শোনা সেই ছোটবেলাতেই। আর ঢাকায় আমার যে মাসি থাকেন, তিনিও শুনিয়েছেন অনেক গল্প। এ ছাড়া মায়ের কাছেও মুক্তিযুদ্ধের বিস্তর গল্প শুনেছি।
ছবির স্ক্রিপ্ট পাওয়ার পর চরিত্রটির জন্য কীভাবে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন?
বলার মতো বিশেষ কোনো প্রস্তুতি নিইনি। তবে ভুবন মাঝির শুটিংয়ে যোগ দেওয়ার জন্য সড়কপথে ভারত থেকে বাংলাদেশে আসি আমি। কলকাতা থেকে গাড়ি নিয়ে আসি সীমান্ত পর্যন্ত। এরপর এপারে এসে সেখানে অবস্থানরত শুটিং দলের সঙ্গে গাড়িতে করে আসি কুষ্টিয়ায়। এই সড়কপথের ভ্রমণ এবং কুষ্টিয়ায় শুটিংয়ের সময় সেখানকার পরিবেশ আমাকে অনেক সাহায্য করেছে চরিত্রের ভেতরে ঢোকার জন্য।
সাক্ষাৎকার: আদর রহমান