এবার মা-স্ত্রী-সন্তান নিয়ে হাজির রিপন মিয়া! জানালেন সেদিন কী হয়েছিল

স্ত্রী ও মায়ের সঙ্গে রিপন মিয়াছবি: প্রথম আলো

কনটেন্ট ক্রিয়েটর রিপন মিয়াকে নিয়ে অনলাইনে চর্চা চলছে তিন দিন ধরে। মঙ্গলবার একটি টেলিভিশনের প্রতিবেদনে তাঁকে নিয়ে বেশ কিছু অভিযোগ উঠে আসে। যেখানে বাবা-মায়ের দেখভালের সঙ্গে স্ত্রী–সন্তানদের অস্বীকারের অভিযোগ আনা হয়। প্রথম আলোর কাছে সেদিনের সব ঘটনা প্রকাশ করেছেন রিপন মিয়া। সব অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছেন, সচ্ছলতার কারণে অনেকের কাছে চক্ষুশূল হয়েছেন। এ ঘটনা তারই বহিঃপ্রকাশ।
বুধবার মা, স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে ঢাকায় আসেন রিপন মিয়া। মঙ্গলবারের পুরো ঘটনার বর্ণনা করেন তিনি। তাঁর মা ফাতেমা বেগমও সেদিন ঠিক কী হয়েছিল, তা তুলে ধরেন। এমন সময় মা ও সন্তান একজন আরেকজনকে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

প্রথম আলোর স্টুডিওতে মায়ের সঙ্গে রিপন মিয়া
ভিডিও থেকে

ঘটনা নিয়ে রিপন মিয়া প্রথম আলোকে স্বভাবসুলভ ভঙিতে বলেন, ‘কী থাইক্যা কী হয়ে গেল, কিছুই বুঝতেছি না। ঘুম থেকে উইট্টা চা স্টলে গেছিলাম। এ সময়ে কয়েকজন সাংবাদিক আইসা ক্যামেরা ধরল, আর আমাকে মজা করতে বলল। আমি ছন্দ বলে মজা করছিলাম। একপর্যায়ে তারা আমার পরিবার নিয়ে উল্টাপাল্টা প্রশ্ন করতে থাকে। তারা যে এখানে আসার আগে আমার বাড়ি থেকে ঘুরে আসছে, তা জানায়নি আমাকে। তারা বলতে থাকে, আমি আব্বু-আম্মুকে দেখি না, আমার বউ–বাচ্চার কথা কাউরে কই না, এসব আরকি। এরপর আমার মাথা গরম হইয়া যায়। আমি মূর্খ, গুছিয়ে কথা বলতে পারি না, এই কারণেই কিন্তু সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলি না।। তবে উনারা ভিডিওতে সব কথা রাখেননি, কাটিং করেছেন। আমি অনেকক্ষণ কথা বলছি উনাদের সাথে। সব কথা ভিডিওতে নাই।’

আরও পড়ুন

টেলিভিশনের প্রতিবেদনে বিয়ে ও স্ত্রীর বিষয় অস্বীকার করেন রিপন। এ বিষয়ে এ কনটেন্ট ক্রিয়েটর বলেন, ‘দেড় বছর আগে ভাইসাবের (কনটেন্ট ক্রিয়েটর) ভিডিওতে আমি বিয়ে, বউ নিয়ে কথা কইছি। কিন্তু উনারা আমাকে এত জেরা করতেছিল, শেষে আমি তেড়ামি করে বলছি, আমি বিয়া করিনি। এইটা যে আমার জীবনরে এমন করব, তা কল্পনা করিনি।’
বাবা-মাকে না দেখার অভিযোগের বিষয়ে রিপন বলেন, ‘একটি আধা পাকা ঘর বানতেছি। কাজ কিন্তু অনেক বাকি। তিনটা রুম, একটায় আমি বউ–বাচ্চা নিয়া থাকুম। আরেকটায় আব্বু-আম্মু থাকবেন। আমি তাঁদের দেখি না কোথায়? কোন মাসে আমি টাকা দিইনি, এটা জিজ্ঞেস করতেন। আপনারা বলতে পারেন, আমার তাঁদের আরও দেখা দরকার, আমি অবশ্যই দেখব। বাপ–মা তো আমার, তাই না?’

রিপন মিয়া
ছবি: ফেসবুক

পেশা নয়, শখে ভিডিও বানান রিপন। জানান, কনটেন্ট ক্রিয়েশন না করলেও তাঁর জীবন চলবে। প্রথম আলোকে রিপন মিয়া বলেন, ‘ভাই আমি কাঠমিস্ত্রি, আল্লাহর রহমতে সব পারি। এটা দিয়েই আমার জীবন চলব। কর্ম জানা মানুষের আটকে থাকতে হয় না। প্রয়োজনে ভিডিও আর বানামু না। এতে কিছুই হবে না।’
আশপাশের কিছু মানুষের ইন্ধনেই এমন করেছেন বলে প্রথম আলোকে জানিয়েছেন রিপন মিয়ার মা ফাতেমা বেগম। তিনি বলেন, ‘আশপাশের কত মানুষ কয়, “তোমার ছেলে লাখ লাখ টাকা কামাই করে, বিদেশ ঘুরে, তোমারে কী দিছে।” এরা আওয়ার পর আমি বুজ্জি না হেরা যে সাংবাদিক। মনে করছি, আমরারে সাহায্য করব আরও। আমার ছেলেও আরও উপরে উঠব। লোভে পড়ছিলাম বাপ। লোভে পড়ে কুড়াল দিয়া আমার বাপটারে (রিপন) শেষ করলাম। কত কষ্ট কইরা বড় করছি ওরে, আইজকা আমি কী করলাম।’

আরও পড়ুন

রিপনসহ তাঁর বাকি ভাইরাও বাবা-মাকে দেখেন বলে জানিয়েছেন ফাতেমা বেগম। তিনি বলেন, ‘হের (রিপন) বাপ তো কাজ করতে পারে না। তিন ছেলে না দেখলে আমরা কেমনে চলতাম। আমার ছোট মাইয়াডারেও তো রিপনই পড়ালেহা করায়।’
মঙ্গলবার দুপুরে রিপন মিয়াকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রচার করে একটি চ্যানেল। সেখানে রিপনের মা অভিযোগ করেন, ‘খুব কষ্ট করে মানুষ করছি, কিন্তু এখন পরিচয় দেয় না। আমরা গরিব। পরিচয় দিলে যদি ওর মানসম্মান না থাকে!’ এরপরই শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা।