
নিজ মেধার স্বীকৃতি চান, শুধু বাইরের সৌন্দর্য দিয়ে হলিউড জয় করা তাঁর লক্ষ্য নয়। তিনি অস্ট্রেলীয় অভিনেত্রী মারগট রবি, দ্য লিজেন্ড অব টারজান ছবির নায়িকা। অভিনয় করেছেন ‘বনের রাজা’র প্রেয়সী জেনের ভূমিকায়। তবে এই জেন অন্য রকম, দুর্দশার কবলে পড়া সেই গতানুগতিক আবেদনময়ী তরুণী নন। রবি যেমনটা বলেন, এই ছবিতে তিনি জেনকে একজন সাংঘাতিক স্বাধীনচেতা ও সমর্থ নারীতে রূপান্তরিত করেছেন। এই জেন টারজানকে চান, কিন্তু কারও ওপর নির্ভরশীল নন। নিজের দেখভাল জেন নিজেই করতে পারেন। আর কারও সাহায্য ছাড়াই একের পর এক বিপদ অতিক্রম করেন।

ব্যতিক্রমী বলেই কাজটি হাতে নিয়েছিলেন রবি। ২৫ বছর বয়সী এই স্বর্ণকেশী বললেন, দ্য লিজেন্ড অব টারজান মহাকাব্যিক লড়াই আর অভিযাত্রার গল্প—অনেকটা ইন্ডিয়ানা জোনস বা পাইরেটস অব দ্য ক্যারিবিয়ান-এর মতো। তাতে উন্মাদনা যেমন আছে, তেমনি আছে চমৎকার এক জগৎ আর বিচিত্র সব চরিত্রের সমাহার। কিছুটা রোমান্টিক ও অন্যান্য উপাদানের মিশেলও রয়েছে।
হলিউডে ২০১৩ সালে লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিওর বিপরীতে দ্য উল্ফ অব ওয়াল স্ট্রিট ছবিতে অভিনয় করে আলোচনায় আসেন মারগট রোবি। তাঁর ইচ্ছা এমন কিছু চলচ্চিত্রে অভিনয় করবেন, যেখানে তাঁর চরিত্রটা বিশেষ গুরুত্ব পাবে। কেবল পুরুষ চরিত্রের সঙ্গে সম্পর্কের ভিত্তিতে নয়, বরং সেই নারী চরিত্রকে ঘিরেই আবর্তিত হবে কাহিনি।
মার্কিন লেখক এডগার রাইস বারোজের জনপ্রিয় সৃষ্টি টারজানকে নিয়ে ছায়াছবি আগেও বানানো হয়েছে। আফ্রিকার জঙ্গলে বেড়ে ওঠা টারজান একপর্যায়ে ভিক্টোরীয় যুগের লন্ডনের বাসিন্দা হন। আসল নাম জন ক্লেটন। তাঁর স্ত্রীর নাম জেন। ব্যবসায়িক অভিযানে সস্ত্রীক কঙ্গো যাত্রা করেন ক্লেটন ওরফে টারজান। সেখানে গিয়ে জড়িয়ে পড়েন এক ভয়ংকর লড়াই আর অজানা ষড়যন্ত্রের জালে। তাঁকে জিম্মি করেন ক্যাম্পেন রম নামের এক বেলজিয়ান সেনা। আর মুক্তিপণ হিসেবে দাবি করেন বহুমূল্য হীরা। ছায়াছবির কাহিনি এভাবেই এগোয়।
ত্রিমাত্রিক (থ্রিডি) প্রযুক্তির নতুন ছবিটি মুক্তি পাচ্ছে আগামীকাল শুক্রবার ১ জুলাই। ডেভিড ইয়েটসের পরিচালনায় এতে অভিনয় করেছেন আলেক্সান্ডার স্কার্সগার্ড, স্যামুয়েল এল জ্যাকসন, ক্রিস্তোফ ওয়ালৎস, জিমন হুনসু, জন হার্ট প্রমুখ। টারজানের চরিত্রে রয়েছেন ৩৯ বছর বয়সী সুইডিশ অভিনেতা স্কার্সগার্ড। তিনি সম্প্রতি এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে বলেছেন, টারজান চরিত্রে প্রয়াত তারকা জনি ওয়েইসমুলারের অভিনয় দেখে ছেলেবেলায় মুগ্ধ হয়েছিলেন। তখনই বাবাকে বলেছিলেন, বড় হয়ে টারজানের চরিত্রে কাজ করবেন।
স্কার্সগার্ডের বাবা স্টেলানও সুইডেনের একজন নামী অভিনেতা। সে যাহোক, টারজান হওয়ার প্রস্তুতি নিতে যথেষ্ট কাঠখড় পোড়াতে হয় স্কার্সগার্ডকে। শরীর সুগঠিত করতে প্রতিদিন সাত হাজার ক্যালরি গ্রহণ করেছেন টানা তিন মাস। প্রচুর পরিমাণে মাংস ও আলু খেয়েছেন তখন। আর ভারোত্তোলন করেছেন নিয়মিত। এতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তাঁর ওজন বাড়ে প্রায় ১১ কেজি। দ্য লিজেন্ড অব টারজান ছবিতে তাই স্বর্ণকেশী রবির পাশে সুঠামদেহী স্কার্সগার্ডকেই দেখা যাবে।
আশিস আচার্য
নিউজিল্যান্ড হেরাল্ড ও মুভিনিউজগাইড অবলম্বনে