২০২৫ সালের সবচেয়ে চমকে দেওয়া সিনেমা কোনটি

‘আ মাইনক্রাফট মুভি’র দৃশ্য। আইএমডিবি

ক্রিস্টোফার নোলানের ‘ওপেনহাইমার’–এর সঙ্গে আপনাকে যদি একটি ভিডিও গেম থেকে অনুপ্রাণিত সিনেমার তুলনা দেওয়া হয়, তাহলে নিশ্চয়ই অবাক হবেন। যেখানে ‘ওপেনহাইমার’ সিনেমায় কিলিয়ান মার্ফিকে দেখা গেছে পারমাণবিক বোমার জনক হিসেবে, সেখানে  ‘আ মাইনক্রাফট মুভি’তে জ্যাক ব্ল্যাককে ‘লাভা চিকেন’ নিয়ে গান গাইতে দেখা যায়। তবে দর্শকচাহিদা বিবেচনা করলে আপনাকে মেনে নিতে হবে, এই সম্পূর্ণ বিপরীতধর্মী দুটি সিনেমার মধ্যেও মিল রয়েছে।

প্রথমত, দুটি সিনেমাই বিশ্বজুড়ে প্রায় ১ বিলিয়ন (১০০ কোটি) ডলার ব্যবসা করেছে। ‘আ মাইনক্রাফট মুভি’ বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে ২০২৫ সালের সর্বোচ্চ এবং বিশ্বে চতুর্থ সর্বোচ্চ আয় করা সিনেমা। অন্যদিকে ‘ওপেনহাইমার’ ২০২৩ সালে বিশ্বব্যাপী তৃতীয় সর্বোচ্চ আয় করা সিনেমা ছিল।

‘আ মাইনক্রাফট মুভি’র দৃশ্য। আইএমডিবি

তবে আসল মিলটি অন্য জায়গায়। দুটি চলচ্চিত্রই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে যে করোনা মহামারির পর প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে সিনেমা দেখার অভিজ্ঞতা আমূল বদলে গেছে। দর্শকেরা যেভাবে এখন সিনেমাকে দেখেন, তা আধুনিক সংস্কৃতিতে এক বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে। আর এ কারণেই ‘আ মাইনক্রাফট মুভি’কে বলা হচ্ছে চলতি বছরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিনেমা।

কেন এই সাফল্য
এই সাফল্য কিন্তু একেবারেই অপ্রত্যাশিত ছিল না। ২০২৩ সালে ‘দ্য সুপার মারিও ব্রোস মুভি’ কিংবা ২০২৪ সালের ‘সনিক দ্য হেজহগ ৩’—সবই ছিল ভিডিও গেমভিত্তিক সিনেমা। এমনকি ‘দ্য লাস্ট অব আস’ বা ‘ফলআউট’-এর মতো টিভি সিরিজগুলোও এখন দারুণ জনপ্রিয়।

সুপারহিরো সিনেমার দাপট কিছুটা কমে আসায় ভিডিও গেমগুলোই এখন হলিউডের নতুন সোনার খনি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

‘আ মাইনক্রাফট মুভি’র দৃশ্য। আইএমডিবি

গেম যখন হয়ে উঠল বড় পর্দার গল্প
যদিও বড় পর্দার জন্য ‘মাইনক্রাফট’ গেমের চরিত্রগুলোকে তুলে ধরা খুব একটা সহজ বিষয় ছিল না। এটি বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া ভিডিও গেম। এর উজ্জ্বল রঙের চারকোনা ব্লকের সঙ্গে সবাই পরিচিত। এটি এমন এক জগৎ যেখানে সবকিছু পিক্সেলযুক্ত ব্লকের সমন্বয়ে গঠিত; খেলোয়াড়ের কাজ হলো জিনিসপত্র তৈরির জন্য এই ব্লকগুলো ভাঙা বা ‘মাইন’ করা।

আরও পড়ুন

এই অদ্ভুত কাহিনিকে যখন ‘নেপোলিয়ন ডিনামাইট’খ্যাত জ্যারেড হেসের হাতে তুলে দেওয়া হয়, তখন সমালোচকেরা খুব একটা আশাবাদী ছিলেন না। সিনেমা রিভিউ সাইট রোটেন টমেটোজে এর রেটিং ছিল মাত্র ৪৮ শতাংশ।

‘দ্য টাইমস’-এর কেভিন মাহের তো একে মাত্র ‘এক স্টার’ রেটিং দিয়ে ‘চোখধাঁধানো কিন্তু বিরক্তিকর এবং বাণিজ্যিক প্রচারণার বিদঘুটে মিশেল’ বলে উল্লেখ করেছিলেন।

সিনেমাটির পরিচালনার দায়িত্ব শুরুতে দেওয়া হয়েছিল শন লেভিকে। তবে মাইনক্রাফটের নির্মাতাদের সঙ্গে মতবিরোধের কারণে তিনি প্রকল্পটি ছেড়ে দেন। নির্মাতাদের ধারণা ছিল, লেভির ভাবনাটি গেমটির মূল ভাবনার সঙ্গে মানানসই নয়। নতুন পরিচালক জ্যারেড হেসের আগের সিনেমা ‘নেপোলিয়ন ডায়নামাইট’–এর একাধিক প্রভাব রয়েছে এই ছবিতে। জ্যাক ব্ল্যাকের গাওয়া গান ‘স্টিভস লাভা চিকেন’ ২০২৫ সালের ১৮ এপ্রিল যুক্তরাজ্যের টপ ৪০ চার্টে ২১ নম্বরে উঠে আসে। এটি শুধু জ্যাক ব্ল্যাকের ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় হিটই নয়, একই সঙ্গে যুক্তরাজ্যের চার্ট ইতিহাসে সবচেয়ে ছোট দৈর্ঘ্যের হিট গান হিসেবেও রেকর্ড গড়েছে—গানটির দৈর্ঘ্য মাত্র ৩৪ সেকেন্ড। শুরুতে ম্যাট বেরিকে স্টিভ চরিত্রে নেওয়া হয়েছিল; কিন্তু শিল্পীদের ধর্মঘটের কারণে তাঁর শিডিউলে পরিবর্তন আসায় তিনি সরে দাঁড়াতে বাধ্য হন। এরপর চরিত্রটি যায় জ্যাক ব্ল্যাকের হাতে। মজার ব্যাপার হলো, জ্যাক ব্ল্যাককে শুরুতে শুধু একটি কথা বলা শূকরের চরিত্রে ক্যামিও করার কথা ছিল। পরে ম্যাট বেরি ছবিতে নিটউইট চরিত্রে কণ্ঠ দিয়েছেন।

প্রেক্ষাগৃহে লেখা হলো অন্য এক গল্প
সমালোচকেরা যা-ই বলুন না কেন, দর্শকেরা তা কানে তোলেননি; বরং সমালোচকের মুখে চুনকালি মেখে এই সিনেমার এগিয়ে যাওয়ার গতি চমকে দিল সবাইকে। এপ্রিল মাসে এই সিনেমা মুক্তির পর বড়দের পাশাপাশি শিশুদের মধ্যেও ব্যাপক সাড়া ফেলে।

‘আ মাইনক্রাফট মুভি’র দৃশ্য। আইএমডিবি

বিবিসির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, সিনেমাটি শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ক—উভয়কেই সমানভাবে বিনোদিত করেছে। বিনোদনশিল্প–বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান ‘এন্ট টেলিজেন্স’-এর প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা স্টিভ বাক বলেন, ‘এ সিনেমাটি পরিবারের বাবারাও পছন্দ করেছেন। আর বাবারা যখন কোনো ফ্যামিলি মুভি পছন্দ করেন, তখন বুঝতে হবে, সেটি ইতিবাচক কিছু।’

তবে অবাক করার মতো বিষয় ছিল অন্য জায়গায়। দর্শক শুধু জাঁকজমকপূর্ণ ‘ওভারওয়ার্ল্ড’-এ জ্যাক ব্ল্যাকের কর্মকাণ্ড দেখে হেসেই থেমে যাননি; বরং তাঁরা সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছেন।

আরও পড়ুন

ট্রেলার দেখে যেন আগে থেকেই তাঁরা প্রস্তুত ছিলেন; জ্যাক ব্ল্যাকের চরিত্রটি হলে দারুণভাবে উদ্‌যাপন করেছেন হলের দর্শকেরা। জ্যাক ব্ল্যাকের প্রতিটি সংলাপ বা মিম দেখে দর্শকেরা প্রেক্ষাগৃহে চিৎকার করে উঠছিলেন, কেউ কেউ পপকর্ন ছুড়ে মারছিলেন।

অনেকটা কয়েক দশক আগের কাল্ট ক্ল্যাসিক ‘দ্য রকি হরর পিকচার শো’র মতো আচরণ করছিলেন তাঁরা।

‘আ মাইনক্রাফট মুভি’র দৃশ্য। আইএমডিবি

সবচেয়ে বড় হইচই হয় একটি দৃশ্য নিয়ে—যখন একটি জম্বি শিশু একটি মুরগির পিঠে চড়ে বসে, আর জ্যাক ব্ল্যাক চিৎকার করে বলেন, ‘চিকেন জকি’!

মাইনক্রাফট ভক্তরা এতে এতটাই মজা পেয়েছেন এই দৃশ্যে যে যুক্তরাষ্ট্রের উটাহ অঙ্গরাজ্যের কিছু দর্শক তো জ্যান্ত মুরগি নিয়ে প্রেক্ষাগৃহে হাজির হয়েছিলেন! কিছু জায়গায় পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশও ডাকতে হয়েছিল।

‘দ্য রকি হরর পিকচার শো’র অন্ধ ভক্ত তৈরি হতে সময় লেগেছিল দীর্ঘ কয়েক বছর; কিন্তু ‘আ মাইনক্রাফট মুভি’ মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যেই সেই জনপ্রিয়তা অর্জন করে।

ভাইরাল ভিডিও আর বদলে যাওয়া সিনেমা–সংস্কৃতি
স্বাভাবিকভাবেই প্রেক্ষাগৃহের এই হট্টগোল সবাই ভালোভাবে নেননি। ‘দ্য গার্ডিয়ান’-এর একটি কলামে লেখা হয়—‘দর্শকেরা তো উদ্‌যাপন করবেনই; কিন্তু চিকেন জকি নিয়ে এই উন্মাদনা বিশৃঙ্খলতার সীমায় পৌঁছেছে।’ লেখাটির শেষে কড়া ভাষায় বলা হয়, ‘বোধ হয় বড়দেরও এখন রাশ টেনে ধরার সময় এসেছে।’

তবে টিকিট বিক্রির হিসাব বলছে, অনেক ‘বড়’রাও এই ‘চিকেন জকি’ উন্মাদনা বেশ উপভোগ করেছেন। ব্রিটিশ কমেডিয়ান স্যাম অ্যাভেরি বিবিসিকে জানান, তাঁর ছেলেদের নিয়ে ‘আ মাইনক্রাফট মুভি’ দেখাটা ছিল তার জীবনের ‘সবচেয়ে আনন্দদায়ক সিনেমা দেখার অভিজ্ঞতা।’

‘আ মাইনক্রাফট মুভি’র দৃশ্য। আইএমডিবি

পরিচালক জ্যারেড হেস দর্শকদের এই পাগলামিকে ইতিবাচকভাবেই দেখছেন। ‘এন্টারটেইনমেন্ট উইকলি’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘এটা দারুণ মজার ছিল। কিশোর-কিশোরীরা সিনেমা শুরুর আগে অনেক মজার মজার কথা বলছিল, লোকে আমাকে সেসবের ভিডিও পাঠাচ্ছিল। মানুষ যখন একে অপরের কাঁধে চড়ে দাঁড়িয়ে উল্লাস করছিল, তখন দেখতে ভালোই লাগছিল। মানুষ বন্ধু আর পরিবার নিয়ে সুন্দর স্মৃতি তৈরি করছে, এটাই বড় কথা।’

আরও পড়ুন

পরিচালকের কথায় একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ফুটে উঠেছে, মানুষ কেবল চিৎকার বা তালি দিতেই প্রেক্ষাগৃহে যাচ্ছে না; বরং তারা এসব কর্মকাণ্ডের ভিডিও করে টিকটক বা অন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করছে। এই উন্মাদনার পেছনে স্মার্টফোন আর সোশ্যাল মিডিয়ার বড় ভূমিকা আছে বলা যায়।

এই ভাইরাল ভিডিওগুলো সিনেমাটির জন্য বিশাল এক বিনা মূল্যে প্রচারণার কাজ করেছে। ২০২৫ সালে স্মার্টফোন আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে যা অর্জন করা গেছে মাত্র কয়েক দিনেই।

গত মে মাসে দর্শকদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে ওয়ার্নার ব্রাদার্স ‘আ মাইনক্রাফট মুভি’র বিশেষ প্রদর্শনীর ঘোষণা দেয়। যেখানে দর্শকেরা ইচ্ছেমতো সাজপোশাকে এসে সবাই মিলে উৎসবের মেজাজে সিনেমাটি উপভোগ করতে পারেন।

উন্মাদনা এটিই প্রথম নয়
২০২২ সালে টিকটকে ‘জেন্টলমিনিয়ন’ ট্রেন্ড তৈরি হয়েছিল। যে ট্রেন্ডে গা ভাসিয়ে দলে দলে কিশোরেরা স্যুট পরে আর হাতে কলা নিয়ে ‘মিনিয়নস: দ্য রাইজ অক গ্রু’ সিনেমা দেখতে গিয়েছিল। তবে স্টুডিওগুলো পিছিয়ে নেই। তারাও দর্শকদের ছবির সঙ্গে সম্পৃক্ত করার নিত্যনতুন উপায় বের করছে।

‘আ মাইনক্রাফট মুভি’র দৃশ্য। আইএমডিবি

যেমন ‘উইকেড’ সিনেমার প্রদর্শনীতে দর্শকেরা যেন গান গাইতে পারেন, সে ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। বড় পর্দায় যখন গানের কথা ভেসে উঠছিল, সব তখন সেই তালে গলা মিলিয়েছেন।

চলচ্চিত্রবিষয়ক মার্কিন গণমাধ্যম ‘ভ্যারাইটি’র জেনেল রাইলি লিখেছেন, ‘সিনেমাটি এমনিতেই দারুণ, তবে আপনি যদি আরও ভালো অভিজ্ঞতা চান, তবে ভক্তদের সঙ্গে গলা মেলানোর চেয়ে ভালো কী আর হতে পারে?’

প্রেক্ষাগৃহের বদলে যাওয়া অভিজ্ঞতা
চলুন আবার ফেরা যাক ‘ওপেনহাইমার’ প্রসঙ্গে। ২০২৩ সালে যখন ক্রিস্টোফার নোলানের বায়োপিক আসার খবর পাওয়া যায়, তখন ‘ওপেনহাইমার’–এর সঙ্গে একই দিনে ‘বার্বি’ও মুক্তি পায়। একই দিনে এই দুই বিপরীতধর্মী ছবির লড়াইকে নাম বলা হয়েছিল ‘বার্বেনহাইমার’।

প্রথমে ধারণা করা হয়েছিল যে দর্শকেরা যেকোনো একটি ছবি বেছে নেবেন; কিন্তু দেখা গেল, বেশির ভাগ দর্শক দুটি ছবিই একের পর এক দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এমনকি তারা নিজেদের পছন্দ বোঝাতে গোলাপি কিংবা কালো রঙের পোশাক পরে প্রেক্ষাগৃহে হাজির হোন। ‘বার্বেনহাইমার’ স্রেফ সিনেমা দেখার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি, এটিও একটি উৎসবে পরিণত হয়েছিল।

‘আ মাইনক্রাফট মুভি’র দৃশ্য। আইএমডিবি

বন্ধুবান্ধব মিলে থিম অনুযায়ী পোশাক পরা কিংবা থিমভিত্তিক ককটেল পানের এক আনন্দময় অভিজ্ঞতা হয়ে উঠেছে সিনেমা দুটি দেখা। ‘আ মাইনক্রাফট মুভি’র আবেদনও ছিল অনেকটা একই রকম।

কোভিড মহামারি সময়ে স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মগুলোর উত্থান প্রেক্ষাগৃহের জন্য ছিল এক বিপর্যয়; কিন্তু চলচ্চিত্রশিল্প এবং সাধারণ মানুষ এখন বুঝতে পারছে যে একা টেলিভিশনে সিনেমা দেখার চেয়ে ভিড়ের মধ্যে সবার সঙ্গে বসে সিনেমা দেখার অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণ আলাদা।

এটি বন্ধুদের সঙ্গে পার্টি বা প্রিয় দলের ফাইনাল খেলা দেখার মতো রোমাঞ্চকর। সিনেমা দেখাও হয়ে উঠতে পারে একটি বিশেষ মুহূর্ত। ২০২৫ সালের বিশ্বব্যাপী শীর্ষ ২০টি চলচ্চিত্রের তালিকায় ‘দ্য কনজ্যুরিং: লাস্ট রাইটস’, ‘ফাইনাল ডেস্টিনেশন: ব্লাডলাইনস’, ‘সিনার্স’ এবং ‘ওয়েপনস’-এর মতো হরর মুভিগুলোর সাফল্য এর প্রমাণ দেয়।

‘আ মাইনক্রাফট মুভি’র দৃশ্য। আইএমডিবি

‘সিনার্স’-এর লেখক-পরিচালক রায়ান কুগলার একটি রক কনসার্টের মতো বৈদ্যুতিক আবহ তৈরি করার ইচ্ছার কথা বলেছেন। ‘স্ক্রিন ইন্টারন্যাশনাল’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, অন্যদের সঙ্গে বসে দেখলে ভৌতিক চলচ্চিত্রের মজা বহুগুণ বেড়ে যায়।

রায়ান কুগলার বলেন, ‘আমার মনে হয় মহামারির পর থেকে সবাই এটি নতুন করে ভাবার সুযোগ পেয়েছেন, কমেডির মতো হরর মুভিও ভিড়ের মধ্যে দেখা বেশ মজার। অন্ধকারে অপরিচিত মানুষে ভরা একটি ঘরে বসে ভয় পাওয়ার মধ্যে একধরনের রোমাঞ্চ আছে... হয়তো আমি ভয় পাব, নয়তো অন্য কাউকে ভয় পেতে দেখব। এটি একটি ছোঁয়াচে প্রতিক্রিয়ার মতো কাজ করে। সিনেমার সেই হরর উপাদানগুলোর মধ্যে একধরনের মিথস্ক্রিয়া থাকে, যা দুর্দান্ত।’

স্ট্রিমিং সার্ভিসের সঙ্গে পাল্লা দিতে গিয়ে প্রেক্ষাগৃহগুলো যখন ধুঁকছিল, তখন এই ‘ইভেন্টিফাইং’ বা সিনেমাকে একটি উৎসবে রূপ দেওয়ার প্রবণতা প্রেক্ষাগৃহকে নতুন প্রাণ দিচ্ছে। ভবিষ্যতে হয়তো এমন উম্মাদনা আরও বাড়বে। হয়তো শৈল্পিক ঘরানার ধীরগতির সিনেমায় দর্শকেরা থিমভিত্তিক পোশাক পরে গান গাইবেন না; কিন্তু বড় বাজেটের বিনোদনমূলক সিনেমাকে ব্যবসায় টিকে থাকার জন্য ‘আ মাইনক্রাফট মুভি’র ‘চিকেন জকি’ পাগলামিই হয়তো এখন সময়ের দাবি।

বিবিসি অবলম্বনে