‘বাইসাইকেল থিভস’-এর সেই শিশুশিল্পী মারা গেছেন

‘বাইসাইকেল থিভস’-এ এনজো স্তাইওলা। আইএমডিবি

ভিত্তোরিও দে সিকার ক্ল্যাসিক সিনেমা ‘বাইসাইকেল থিভস’-এর শিশু তারকা এনজো স্তাইওলা মারা গেছেন। গত বুধবার ইতালিকর দৈনিক লা রেপুব্লিক প্রথম স্তাইওলার মৃত্যুর খবর জানায়। পরে অভিনেতার মৃত্যুর খবর প্রকাশ করে দ্য হলিউড রিপোর্টারসহ বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর।
‘বাইসাইকেল থিভস’ সিনেমায় স্তাইওলার বাবার চরিত্রে অভিনয় করেন লামবের্তো মাজ্জোরানি। সিনেমায় দেখা যায়, কর্মহীন বাবা তাঁর ছেলেকে নিয়ে চুরি হওয়া সাইকেল খুঁজে বেড়ান রোমের রাস্তায়। ওই সাইকেল ছাড়া তাঁর কাজ করার উপায় নেই, ছেলেকে খাওয়ানোরও উপায় নেই। চুরি হওয়া সাইকেল যেন একেবারে ভেঙে দেয় বাবার বুক। হতাশায় ক্লান্ত হয়ে একসময় তিনিও একটি সাইকেল চুরি করেন, কিন্তু ধরা পড়ে যান পথচারীদের হাতে। তারা তাঁকে ছেড়ে দিলেও ছেলের সামনে অপমানিত হন তিনি। এই সিনেমাই চিরতরে চলচ্চিত্র ইতিহাসে অমর করে রাখে ছোট্ট এনজো স্তাইওলাকে।

১৯৩৯ সালের ১৫ নভেম্বর রোমে জন্মগ্রহণ করেন স্তাইওলা। ২০২৩ সালের জুলাইয়ে এক সাক্ষাৎকারে তিনি প্রথমবার ভিত্তরিও দে সিকোর সঙ্গে দেখা হওয়ার স্মৃতি ভাগাভাগি করেন।

‘বাইসাইকেল থিভস’-এর দৃশ্য। আইএমডিবি

তিনি বলেন, ‘স্কুল থেকে ফিরছিলাম, দেখি, একটা বড় গাড়ি আমার পেছনে ধীরে ধীরে আসছে। একসময় গাড়ি থেকে সজ্জিত এক ধূসর চুলের ভদ্রলোক নামলেন, বললেন, “তোমার নাম কী?” আমি চুপ করে রইলাম। তিনি আবার বললেন, “তুমি কথা বলো না?” আমি বললাম, বলতে ইচ্ছা করছে না। মা সব সময় বলতেন, অপরিচিত কেউ কথা বললে সাবধান থাকতে হবে...কিন্তু তিনি আমার পেছন পেছন বাসায় চলে আসেন। মা-বাবা তাঁকে চিনে ফেলেন। তিনি তখন খুব বিখ্যাত ছিলেন। আমাদের বাড়ির টেবিলে বসেই মা-বাবাকে রাজি করাতে থাকেন আমাকে তাঁর নতুন সিনেমায় অভিনয় করানোর জন্য। কিন্তু তাঁরা রাজি হচ্ছিলেন না।’

শেষ পর্যন্ত স্তাইওলার চাচাই তাঁকে দে সিকোর স্টুডিওতে নিয়ে যান। কোনো অডিশন ছাড়াই অভিনয়ের সুযোগ পান তিনি। তবে ‘বাইসাইকেল থিভস’-এর পর আর কখনো দে সিকোর সঙ্গে কাজ হয়নি তাঁর।

আরও পড়ুন

তবে তারকাখ্যাতির শুরুর পর স্তাইওলা ধীরে ধীরে চলচ্চিত্রের জগত থেকে সরে আসেন। পরবর্তী সময়ে তিনি একজন গণিত শিক্ষক ও ভূমি রেজিস্ট্রার অফিসে দীর্ঘদিন কাজ করেন। শেষ বয়সে এসে তিনি চলচ্চিত্রে আসা নিয়ে খানিকটা আক্ষেপও করেন।