ইতালির কিংবদন্তি অভিনেত্রী জিনা লোলোব্রিজিদা মারা গেছেন; দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপিয়ান সিনেমার অন্যতম আবেদনময়ী নায়িকাদের একজন ছিলেন তিনি। মঙ্গলবার রোমে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। জিনা লল্লোব্রিজিদার বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর।
শৈশবেই বেশ কয়েকটি সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে দ্যুতি ছড়ান জিনা। ১৮ বছর বয়সে মঞ্চনাটকে নাম লেখান। চল্লিশের দশকের মাঝামাঝি থেকে ইতালির সিনেমায় ছোট ছোট চরিত্রে তাঁকে দেখা যায়। ১৯৫৩ সালে মুক্তি পাওয়া ব্রেড, লাভ অ্যান্ড ড্রিমস তাঁকে এনে দেয় বক্স অফিস সাফল্য আর বাফটা মনোনয়ন। একই বছর মুক্তি পায় তাঁর প্রথম ইংরেজি সিনেমা বিট দ্য ডেভিল। বেশ কয়েকটি হলিউডি সিনেমাও করেছেন তিনি।
তাঁর উল্লেখযোগ্য ছবির মধ্যে আছে ‘কাম সেপ্টেম্বর, ‘সলোমন অ্যান্ড শেবা’, ‘দ্য হাঞ্চব্যাক অব নতমডেম’, ‘ব্রেড’, ‘লাভ অ্যান্ড জেলাসি’, ‘দ্য ওয়ার্ল্ডস মোস্ট বিউটিফুল উইমেন’। হামফ্রে বোগার্ট, ফ্রাঙ্ক সিনাত্রা, রক হাডসন, এরল ফ্লিনের মতো খ্যাতিমান অভিনেতার বিপরীতে অভিনয় করেছেন জিনা। অভিনয়ের স্বীকৃতি হিসেবে ষাটের দশকেই পেয়েছেন ইতালির সম্মানজনক পুরস্কার ডেভিড ডি ডোনাটেলো। এ ছাড়া বাফটা, গোল্ডেন গ্লোব মনোনয়ন পেয়েছিলেন তিনি।
ষাটের দশকের পর আস্তে আস্তে অভিনয়ে অনিয়মিত হয়ে পড়েন জিনা লোলোব্রিজিদা। ১৯৯৭ সালে মুক্তি পাওয়া এক্সএক্সএল ছবিতে শেষবারের মতো তাঁকে পাওয়া গেছে; এরপর আর কোনো সিনেমায় দেখা যায়নি। অভিনয়কে বিদায় জানানোর পর ফটোগ্রাফি ও নির্মাণে মনোযোগ দিয়েছিলেন তিনি। ১৯৭৩ সালে তাঁর তোলা ছবি নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে বই ইতালিয়া মিয়া। পরে তাঁর আরও তিনটি ছবির বই বেরিয়েছে। কিউবার নেতা ফিদেল কাস্ত্রোকে নিয়ে একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করেন জিনা; যেটি বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছে। ইতালির রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন এই অভিনেত্রী।
ইতালির রোমে বাস করছিলেন তিনি। গত বছরের সেপ্টেম্বরে শরীরে একটি অস্ত্রোপচারের পর কয়েক সপ্তাহ হাসপাতালে থাকতে হয়েছিল। হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরে বিশ্রামে ছিলেন তিনি। এর মধ্যেই তাঁর মৃত্যুর খবর এল।
মিকো স্কোফিক নামের এক চিকিৎসককে বিয়ে করেছিলেন জিনা, ১৯৭১ সালে তাঁদের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়।