মেয়ে, লড়াই কর...

‘ব্যালেরিনা’ সিনেমার দৃশ্য। আইএমডিবি

আগে ‘নো টাইম টু ডাই’ সিনেমায় ‘বন্ড গার্ল’ হয়েছেন, আলোচিত মিস্ট্রি সিনেমা ‘নাইভস আউট’ করেছেন, ব্লন্ড-এ হয়েছেন মেরিলিন মনরো। তবে অস্কার ও গোল্ডেন গ্লোব মনোনীত অভিনেত্রী আনা দে আরমাসকে অ্যাকশন তারকা হিসেবে দেখা যায়নি। ‘জন উইক’ ফ্র্যাঞ্চাইজির ‘ব্যালেরিনা’ দিয়ে অ্যাকশন তারকা হিসেবেও তাঁর অভিষেক হলো। ৬ জুন মুক্তি পেয়েছে ‘ব্যালেরিনা’, ছবিটির জন্য উচ্চকণ্ঠ প্রশংসা পাচ্ছেন ৩৭ বছর বয়সী কিউবার এই অভিনেত্রী।

ছবিতে ইভ চরিত্রে অভিনয় করেছেন আনা। তাঁর কাছে চরিত্রটি যেন নিজের অতীতেরই প্রতিচ্ছবি। বাবার মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে মরিয়া এক নারী ইভ।

‘ব্যালেরিনা’র প্রিমিয়ারে আনা দে আরমাস। ছবি: এএফপি

আনার মতে, চরিত্রটি অনেকটা স্প্যানিশ সিরিজ এল ইন্টারনাডোর ক্যারোলিনার মতো—জেদি, দৃঢ়চেতা ও নিজের লক্ষ্যে অবিচল এক নারী। ‘শুটিংয়ে মনে হয়েছে, আমি যেন আমার নিজের পথেই হাঁটছি,’ বলেন আনা। দুই চরিত্রের মধ্যেই মিল রয়েছে—কেউই ভেঙে পড়েন না, লড়াই করতে জানেন। ‘মেয়ে, লড়াই কর’—সিনেমার মতো নিজের জীবনেও এই মূলমন্ত্র মেনে চলেন অভিনেত্রী।

রেমেজকলা সাময়িকীতে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আনা বলেন, ‘“মেয়ে, লড়াই কর” কথাটা আমার ভেতর গভীরভাবে দাগ কেটেছে। এটার মানে নিজের শক্তিটা খুঁজে বের করা—“জন উইক”-এর শক্তি নয়, আশপাশের কারও শক্তি নয়, নিজেরটা।’ তিনি আরও বলেন, ‘চরিত্রটা তখন এমন এক সময় পার করছিল, যখন ও খুব হতাশ, কষ্ট আর দ্বিধায় ভুগছিল। ঠিক তখনই মেন্টরের দেওয়া পরামর্শটা ওকে যেন একটা ঝাঁকুনি দিল। বোঝাল, যেটা ওর দুর্বলতা মনে হচ্ছিল, সেটাই হতে পারে ওর সবচেয়ে বড় শক্তি।’

‘ব্যালেরিনা’ সিনেমার দৃশ্য। আইএমডিবি

সিনেমায় দেখা যায়, এক অপরাধী সংগঠনে ইভের প্রশিক্ষণ শুরু হয়। ঠিক যেখান থেকে আততায়ী জন উইকও তৈরি হয়েছেন। প্রশিক্ষণের সময়ই ইভ বুঝতে পারে, বাকিদের থেকে সে আলাদা। ওজন, উচ্চতা কিংবা শক্তিতে অন্যদের থেকে পিছিয়ে। প্রথমে রাগ হয়। কিন্তু পরে প্রশিক্ষকেরা বোঝান, যদি প্রতিপক্ষ তোমাকে ছোট করে দেখে, শুধু মেয়ে বলে তোমাকে অবহেলা করে, তাহলে মেয়ে হয়ে লড়ো, এটাই হোক তোমার জবাব। এ শিক্ষা শুধু পর্দায় নয়, বাস্তব জীবনেও বয়ে নিয়ে চলেছেন আনা।
‘জন উইক’-এর মতো বিশ্বজুড়ে আলোচিত ফ্র্যাঞ্চাইজিতে যুক্ত হয়ে রোমাঞ্চিত আনা। ছবিতে অনেক ঝুঁকিপূর্ণ স্টান্ট নিজেই করেছেন তিনি।

ওমেনস ওয়ার ডেইলি অনলাইনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী বলেন, ‘এটা একটা বিশাল দায়িত্ব। ছবিটি নিয়ে মানুষ যে ভালোবাসা দেখাচ্ছে, তা আমি টের পাচ্ছি। আর আমার বিশ্বাস, দর্শক এ ছবির জন্য যেমনটা আশা করছে, আমরা তেমন কিছুই দিতে পেরেছি।’

‘ব্যালেরিনা’ সিনেমার প্রিমিয়ারে কিয়ানু রিভস ও আনা দে আরমাস। এএফপি

‘ব্যালেরিনা’ আনা দে আরমাস ও কিয়ানু রিভসের পুনর্মিলনীও বলা যায়। ২০১৫ সালের নক নক ছিল তাঁদের প্রথম একসঙ্গে কাজ। সেটাই ছিল আনার প্রথম পুরোপুরি ইংরেজি ভাষার চলচ্চিত্র। ‘কিয়ানুকে আমি প্রথম দিনই লাঞ্চে দেখি। তখন সে সদ্য প্রথম “জন উইক” শেষ করেছে, সেটার গল্প বলছিল। ভাবা যায়? আমি যে মানুষটার সিনেমা—“স্পিড”, “দ্য ম্যাট্রিক্স”—দেখে বড় হয়েছি, তার সঙ্গেই কাজ করছি!’ বলেন আনা।

আরও পড়ুন

৯০ মিলিয়ন ডলার বাজেটের ছবিটি মুক্তির পর এরই মধ্যে ৬০ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে। ‘ব্যালেরিনা’ পরিচালনা করেছেন লেন ওয়াইজম্যান।