জুলিয়া রবার্টস থেকে লিওনার্দো ডিক্যাপ্রি, হলিউড তারকাদের স্মৃতিতে আরমানি

জর্জিও আরমানির সঙ্গে জুলিয়া রবার্টসজুলিয়া রবার্টসের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে

ইতালির কিংবদন্তি ফ্যাশন ডিজাইনার জর্জিও আরমানির মৃত্যুতে জুলিয়া রবার্টস, লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও, রাসেল ক্রো, মরগান ফ্রিম্যানসহ আরও অনেকে শোক জানিয়েছেন।

৯১ বছর বয়সে মারা গেছেন আরমানি। গতকাল বৃহস্পতিবার তাঁর মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছে আরমানি গ্রুপ।

আরমানি ও তাঁর প্রতিষ্ঠানের পোশাকের সঙ্গে তারকাদের স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। এর মধ্যে ১৯৯০ সালে ‘স্টিল ম্যাগনোলিয়াস’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য গোল্ডেন গ্লোব জেতেন জুলিয়া রবার্টস। পুরস্কারের মঞ্চে আরমানির স্যুট পরে হাজির হয়েছিলেন এই তারকা অভিনেত্রী।

২০১৯ সালের ব্রিটিশ ফ্যাশন অ্যাওয়ার্ডসের লালগালিচায় ডিজাইনার আরমানির সঙ্গে তোলা একটি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেছেন জুলিয়া রবার্টস। আরমানিকে ‘সত্যিকারের বন্ধু’ ও ‘কিংবদন্তি’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন তিনি।

জর্জ আরমানির সঙ্গে ছবিটি ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে দিয়েছেন লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও
লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিওর ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে

আরমানিকে নিয়ে আবেগঘন পোস্ট দিয়েছেন তারকা অভিনেতা লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও। ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে তিনি জানান, বহু বছর ধরেই আরমানির সঙ্গে তাঁর পরিচয়।

লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও লিখেছেন, ‘জর্জিও আরমানি ছিলেন এমন এক স্বপ্নদ্রষ্টা, যাঁর প্রভাব নকশার গণ্ডি ছাড়িয়ে আরও বহুদূর ছড়িয়ে গেছে। বহু বছর আগে মিলানে আমি তাঁর সঙ্গে প্রথম দেখা করি আর তাঁর সৃজনশীলতা ও প্রতিভা আমাকে বিস্মিত করেছিল। তিনি ছিলেন এক কিংবদন্তি, প্রজন্মের পর প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করেছেন।’

অভিনেতা রাসেল ক্রো এক্সে লিখেছেন, কীভাবে আরমানি স্যুটের প্রতি তাঁর ভালোবাসা শুরু হয়েছিল। তিনি লেখেন, ‘১৯৯৭ সালের কান চলচ্চিত্র উৎসবে আমার ব্যাগ হারিয়ে যাওয়ার পর “এলএ কনফিডেনশিয়াল”–এর প্রযোজক আরনন মিলচান আমাকে আরমানির দোকানে স্যুট কিনতে পাঠিয়েছিলেন। সেখান থেকেই শুরু হয়েছিল আরমানি স্যুটের সঙ্গে আমার ভালোবাসার গল্প, যা এখনো চলছে।’
সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে তাঁর সঙ্গে দেখা করার পরিকল্পনাও ছিল বলে জানান ক্রো, তবে শেষ পর্যন্ত সেটি আর হলো না।

আরও পড়ুন
কিংবদন্তি ফ্যাশন ডিজাইনার জর্জিও আরমানি
ছবি: রয়টার্স

অভিনেতা মরগান ফ্রিম্যানের প্রিয় ডিজাইনার ছিলেন জর্জিও আরমানি। আরমানির মৃত্যুর এক বিবৃতিতে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানান তিনি। মরগান ফ্রিম্যান লিখেছেন, ‘পর্দার সামনে ও পেছনে আমি আরমানি পরার সৌভাগ্য অর্জন করেছি। আজ আমরা সেই মানুষকে স্মরণ করছি, যাঁর প্রতিভা বহু মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে গেছে।’
জর্জিও আরমানির নিজের নামের ব্র্যান্ডের যাত্রা করেন ১৯৭৫ সালে। ফ্যাশনজগতে নতুনত্ব আনা আরমানি ‘কিং অব দ্য ব্লেজার’ উপাধি পান। ‘আমেরিকান গিগোলো’ চলচ্চিত্রে রিচার্ড গিয়ার আরমানির ডিজাইন করা কয়েকটি পোশাক পরলে ব্র্যান্ডটি ১৯৮০ সালে প্রথমবারের মতো বৈশ্বিক পরিচিতি পায়।
১৯৩৪ সালে উত্তর ইতালির পিয়াচেঞ্জায় জন্মগ্রহণ করেন আরমানি। তিনি প্রথমে চিকিৎসাবিদ্যায় তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। তারপর সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে ডিগ্রি শেষ করার আগেই মিলান বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে যান। এর কিছুদিন পরই আরমানি ভিন্ন ধরনের পেশা খুঁজতে শুরু করেন।
২০২১ সালে আরমানি ব্র্যান্ডের পণ্য ও সেবা থেকে আয় ছিল ৩৫০ কোটি পাউন্ড (৫৭ হাজার ২৮৭ কোটি টাকা)। এর মধ্যে ছিল হোটেল, রেস্তোরাঁ, নাইট ক্লাব, কসমেটিকস, চকলেট—এমনকি ফুলের দোকানও।