স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে কেন যুক্তরাষ্ট্র ছেড়েছেন ক্লুনি

জর্জ ক্লুনি। রয়টার্স

বছর কয়েক আগেই স্ত্রী-সন্তান নিয়ে লস অ্যাঞ্জেলেস ছেড়ে ফ্রান্সে চলে যান জর্জ ক্লুনি। এসকয়ার সাময়িকীতে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অস্কারজয়ী হলিউড অভিনেতা বলেছেন, নিজের এ সিদ্ধান্তে তিনি দারুণ খুশি।

ওখানে ওরা কখনো ঠিকভাবে বড় হতে পারত না। হলিউডের সংস্কৃতি সেটা হতে দেয় না। আমি চাই না ওরা পাপারাজ্জিদের ভয়ে বড় হোক বা অন্য কোনো তারকার সন্তানদের সঙ্গে ওদের তুলনা করা হোক।
জর্জ ক্লুনি

‘শহরের কোলাহল আর হলিউডের প্রভাব থেকে দূরে গিয়ে সন্তানদের একটা স্বাভাবিক জীবন দিতে পেরেছি। ফ্রান্সে একটা খামারে থাকি আমরা। আমার জীবনের বড় একটা সময় খামারে কেটেছে, তখন সেটা খুব অপছন্দ করতাম। কিন্তু এখন আমার সন্তানদের জন্য ওটাই সবচেয়ে ভালো,’ বলেন ৬৪ বছর বয়সী ক্লুনি। খামারে সন্তানদের জীবনযাপন নিয়ে তিনি আরও যোগ করেন, ‘ওরা সারাক্ষণ আইপ্যাড নিয়ে বসে থাকে না, বড়দের সঙ্গে ডিনার করে, নিজের থালা ধুয়ে রাখে, এটাই আসল জীবন।’

‘হলিউডের সংস্কৃতি শিশুদের জন্য নয়’
ক্লুনি জানান, লস অ্যাঞ্জেলেসে সন্তানদের মানুষ করার ভাবনাতেই তিনি চিন্তিত ছিলেন। অভিনেতার ভাষ্যে, ‘ওখানে ওরা কখনো ঠিকভাবে বড় হতে পারত না। হলিউডের সংস্কৃতি সেটা হতে দেয় না। আমি চাই না ওরা পাপারাজ্জিদের ভয়ে বড় হোক বা অন্য কোনো তারকার সন্তানদের সঙ্গে ওদের তুলনা করা হোক।’

স্ত্রী আমাল ক্লুনিন সঙ্গে জর্জ ক্লুনি। এএফপি

ক্লুনি ও তাঁর স্ত্রী মানবাধিকার আইনজীবী আমাল ক্লুনি ২০১৭ সালে যমজ সন্তান আলেকজান্ডার ও এলার বাবা-মা হন। শুরু থেকেই সন্তানদের গোপনীয়তা রক্ষায় সচেতন তাঁরা। ২০২১ সালে ক্লুনি গণমাধ্যমের উদ্দেশে খোলা চিঠিতে অনুরোধ করেছিলেন, যেন কোনো সংবাদমাধ্যম তাঁর সন্তানদের ছবি প্রকাশ না করে।
‘আমার স্ত্রীর কাজের ধরন তাঁকে সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর হুমকিতে ফেলে। তাই পরিবারের নিরাপত্তা আমাদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ,’ ক্লুনি লিখেছিলেন।

‘আমি বুড়ো হব, তখন ওরাও স্বাধীন হবে’
সাক্ষাৎকারে নিজের ও সন্তানদের বয়সের পার্থক্য নিয়েও রসিকতা করেন ক্লুনি, ‘আমার বয়স এত বেশি যে আমার ছেলে যখন কিছু করে দেখাবে, তখন আমার হয়তো একটা দাঁতও অবশিষ্ট থাকবে না। চিবানোর বদলে রুটি গিলব।’

অন্তরঙ্গ মুহূর্তে আমাল ও জর্জ ক্লুনি। এএফপি

আমাল ক্লুনি সম্প্রতি গ্ল্যামার সাময়িকীতে দেওয়া আরেকটি সাক্ষাৎকারে জানান, তাঁদের বাড়িতে ‘নো ফোন’ নিয়ম চালু রয়েছে। অতিথিদেরও ফোন ব্যবহার করতে দেওয়া হয় না, সবাই যাতে পরস্পরের সঙ্গে সময় কাটায় এবং শিশুদের গোপনীয়তা বজায় থাকে।

চলতি বছরের শুরুর দিকে দ্য নিউইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ক্লুনি বলেন, ফ্রান্সের খামার এখন তাঁর প্রধান বাসস্থান। ‘কেন্টাকিতে বড় হতে গিয়ে আমি শুধু একটা জিনিসই চেয়েছিলাম; খামার থেকে পালাতে। আর এখন দেখুন, আমি আবার সেই জীবনে ফিরে এসেছি। ট্রাক্টর চালাই, কাজ করি। এর চেয়ে স্বাভাবিক জীবন আর হয় না।’
নতুন সিনেমা ‘জে কেলি’র প্রচারে ব্যস্ত এখন জর্জ ক্লুনি। আগামী ১৪ নভেম্বর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে সিনেমাটি।