বাবা দেখলে ‘হার্ট অ্যাটাক’ করবেন, তাই ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে অভিনয় করেননি নায়িকা
হলিউড অভিনেত্রী গিনেথ প্যালট্রো সম্প্রতি জানালেন, কেন তিনি ক্যারিয়ারের শুরুতে ইথান হকের সঙ্গে একটি ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে অভিনয় করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। সে সময় সিনেমার সেটে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়ে খোলাখুলি আলোচনা খুব একটা হতো না। তবু নিজের অন্তর্দৃষ্টির ওপর ভরসা রেখেই তিনি ওই দৃশ্যে ‘না’ বলেছিলেন বলে জানান প্যালট্রো
প্রায় তিন দশক পর সেই অভিজ্ঞতার কথা ফিরে দেখেন অস্কারজয়ী এই অভিনেত্রী। চার্লস ডিকেন্সের ক্ল্যাসিক উপন্যাস অবলম্বনে অলফোনসো কুয়ারোন পরিচালিত ১৯৯৮ সালের সিনেমা ‘গ্রেট এক্সপেকটেশনস’-এ একসঙ্গে কাজ করার স্মৃতি নিয়ে ইথান হকের সঙ্গে একটি ভিডিও আলাপচারিতায় অংশ নেন তিনি।
পিপল সাময়িকীর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আলোচনার এক পর্যায়ে ইথান হক প্যালট্রোকে জিজ্ঞাসা করেন, পরিচালক তাঁদের চরিত্র দুটির মধ্যে একটি ঘনিষ্ঠ দৃশ্যের প্রস্তাব দিয়েছিলেন কি না। প্রশ্নটি শুনে প্যালট্রোর প্রতিক্রিয়া ছিল তাৎক্ষণিক। তিনি বলেন, ‘ওহ, মাই গড’। এরপর দৃশ্যটি নিয়ে পরিচালকের ভাবনার বিস্তারিত বর্ণনা দেন।
প্যালট্রোর ভাষ্য অনুযায়ী, পরিচালক কল্পনা করেছিলেন এমন একটি দৃশ্য, যেখানে ক্যামেরা ধীরে ধীরে তাঁর শরীরের ওপর দিয়ে এগোবে, তারপর চূড়ান্ত মুহূর্তে তাঁর মুখের ওপর স্থির হবে। দৃশ্যটির শেষটা হবে তীব্র আলোয়, যেন ‘সূর্যের মতো’ এক বিস্ফোরণ!
এই স্মৃতিচারণায় ইথান হক হেসে ফেলেন। তিনি বলেন, ‘আমার মনে আছে, আমি গিনেথ প্যালট্রোর দিকে তাকিয়েছিলাম, আর সে তখন শুধু বলেছিল, “অলফোনসো, আমি এটা কখনোই করব না।”’
প্যালট্রো জানান, প্রস্তাবিত দৃশ্যটি তাঁকে ভীষণ অস্বস্তিতে ফেলেছিল, বিশেষ করে তখন তিনি ছিলেন ক্যারিয়ারের একেবারে শুরুর দিকে। তিনি বলেন, ‘আমি তখন ভাবছিলাম, আমার বাবা এটা দেখলে হার্ট অ্যাটাক করে বসবেন।’ অভিনেত্রী জানান, তাঁর বাবা ও দাদু ওই ধরনের দৃশ্যে তাঁকে দেখবেন—এই ভাবনাই তাঁকে বেশি বিচলিত করেছিল। ‘এটা আমাকে সত্যিই খুব বিরক্ত করেছিল’, বলেন তিনি।
তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি বদলেছে বলেও স্বীকার করেন প্যালট্রো। তিনি বলেন, ‘এখন হলে আমি আর কিছু মনে করতাম না।’ বয়স ও অভিজ্ঞতার সঙ্গে নিজের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ও নিরাপত্তাবোধ বেড়েছে বলেই এমনটা মনে করেন তিনি।
ইথান হক এই সিদ্ধান্তে প্যালট্রোর দৃঢ়তা ও আত্মবিশ্বাসের প্রশংসা করেন। তাঁর মতে, প্যালট্রো খুব স্পষ্টভাবে বুঝেছিলেন, চলচ্চিত্রশিল্প কীভাবে কাজ করে এবং কোনো দৃশ্য বা ছবি মানুষের চোখে কী অর্থ বহন করতে পারে। ইথান বলেন, ‘তুমি বুঝেছিলে এর মানে কী—শুধু তোমার জন্য নয়, তোমার বাবার জন্যও।’ তিনি আরও যোগ করেন, প্যালট্রো পরিস্থিতি সামলেছিলেন দৃঢ়ভাবে, কিন্তু কোনো রকম আগ্রাসী না হয়েই।
আরও ভাবতে গিয়ে প্যালট্রো প্রশ্ন তোলেন, সে সময় তিনি কি খুব বেশি ‘সংকীর্ণ’ ছিলেন? এই প্রশ্নে ইথান হক দ্রুতই দ্বিমত জানান। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি না তুমি তা ছিলে।’ প্যালট্রোও একমত হয়ে বলেন, তাঁর সিদ্ধান্তের পেছনে ছিল মূলত উদ্বেগ ও সতর্কতা। ‘আমি বিষয়টি নিয়ে সত্যিই চিন্তিত ছিলাম’, স্বীকার করেন তিনি।
পিপলডটকম অবলম্বনে