বিশ্বের সেরা ১০ হাসির সিনেমা কোনগুলো

বিশ্বের সেরা ১০ হাসির সিনেমাছবি: কোলাজ
চলচ্চিত্রের যাত্রার শুরু থেকেই নির্মাতারা ভর করেছেন কমেডি গল্পে। সময়ের সঙ্গে চলচ্চিত্রজগতে কমেডি হয়ে উঠেছে অনন্য এক আশ্রয়। চার্লি চ্যাপলিন বলতেন, ‘সময় বদলাবে, গল্প বদলায়, কিন্তু হাসির উপকরণ বা চাহিদা কখনোই কমবে না।’ চলচ্চিত্রবিষয়ক মার্কিন গণমাধ্যম ভ্যারাইটি সম্প্রতি সেরা কমেডি সিনেমার তালিকা প্রকাশ করেছে। সেই তালিকা থেকে জেনে নেওয়া যাক শীষ ১০ কমেডি সিনেমার গল্প।
‘দ্য নেকেড গান: ফ্রম দ্য ফাইলস অব পুলিশ স্কোয়াড’ সিনেমার পোস্টার

১. ‘দ্য নেকেড গান: ফ্রম দ্য ফাইলস অব পুলিশ স্কোয়াড’
তালিকায় প্রথমেই রয়েছে ১৯৮৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই ক্ল্যাসিক কমেডি চলচ্চিত্রটি। সিনেমাটির কেন্দ্রীয় চরিত্র ফ্রাঙ্ক ড্রেবিন (লেসলি নিলসেন), যিনি পুলিশ চরিত্রে অভিনয় করেছেন। তিনি একজন অতিমাত্রায় আত্মবিশ্বাসী কর্মকর্তা। নানা ঘটনা নিয়ে তদন্ত করতে গিয়ে সব সময়ই এমন কিছু ঘটে, যা দেখে দর্শকেরা অপ্রস্তুতভাবে হেসে ফেলেন। সিনেমাটির আইএমডিবি রেটিং ৭.৬। সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন ডেভিড জুকার।

‘সাম লাইক ইট হট’ সিনেমার পোস্টার

২. ‘সাম লাইক ইট হট’
সিনেমাটি ১৯৬০ সালে ছয়টি শাখায় অস্কারে মনোনয়ন পায়। সেরা কস্টিউম ডিজাইনে অস্কার জিতে। সিনেমায় অভিনয়শিল্পীদের কস্টিউম দর্শকদের হাসিয়েছে। প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন মেরিলিন মনরো। সিনেমার গল্পে দেখা যায়, হঠাৎই দুজন পুরুষ সংগীতশিল্পী একটি হত্যাকাণ্ডের সাক্ষী হন। এ সাক্ষী হওয়া থেকে রক্ষা পেতে তাঁরা নারীর ছদ্মবেশ ধরে একটি নারী ব্যান্ডে যোগ দিয়ে শহর ছাড়েন। এ ঘটনায় পরে আরও জটিলতা তৈরি হয়। এটি পরিচালনা করেছেন বিলি ওয়াইল্ডার। সিনেমাটির আইএমডিবি রেটিং ৮.২।

‘অ্যানি হল’ সিনেমার পোস্টার

৩. ‘অ্যানি হল’
উডি অ্যালেন পরিচালিত সিনেমাটি এখনো কমেডি সিনেমার মধ্যে শীর্ষের একটি। এটি ১৯৭৭ সালে মুক্তি পায়। সেই বছর চারটি শাখায় অস্কার জয় করে এ সিনেমা। এর আইএমডিবি রেটিং ৭.৯। সিনেমার প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন পরিচালক নিজেই। এলভি সিংগার (উডি অ্যালেন) নিউইয়র্কে বসবাস করেন। তিনি প্রেম ও ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে চিন্তিত। হঠাৎ এক গানের অনুষ্ঠানে অ্যানি হলের সঙ্গে পরিচিত হন। ধীরে ধীরে তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্ব ও প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

‘দ্য গ্রেট ডিক্টেটর’ সিনেমার পোস্টার

৪. ‘দ্য গ্রেট ডিক্টেটর’
বলা হয় চার্লি চ্যাপলিনের জীবনের সেরা সিনেমার একটি এটি। একজন স্বৈরাচারের গল্প নিয়েই এই সিনেমার গল্প। সিনেমায় দ্বৈত চরিত্রে অভিনয় করেছেন চ্যাপলিন। গল্পটি হাস্যরস ও ব্যঙ্গের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। সিনেমাটি ১৯৪০ সালে মুক্তি পায়। সিনেমার আইএমডিবি রেটিং ৮.৪। এটি পাঁচটি শাখায় অস্কার মনোনয়ন পেয়েছিল।

‘ওয়েটিং ফর গাফম্যান’ সিনেমার পোস্টার

৫. ‘ওয়েটিং ফর গাফম্যান’
কমেডি সিনেমার মধ্যে সেরা সিনেমার একটি এটি। এ সিনেমার গল্প, পরিচালনা ও অভিনয় করেছেন ক্রিস্টোফার গেস্ট। সিনেমার আইএমডিবি রেটিং ৭.৪। ১৯৯৬ সালে মুক্তি পাওয়া এ সিনেমায় তুলে ধরা হয়েছে একটি স্থানীয় থিয়েটারের গল্প। ছোট্ট মিজৌরি শহরের স্থানীয় অভিনেতা ও থিয়েটার পরিচালক লুইস ফ্ল্যান্ডার্স একটি অরিজিনাল মিউজিক্যাল গল্পের মঞ্চায়ন করার পরিকল্পনা করছেন। তিনি কাজটি নিয়ে আত্মবিশ্বাসী হলেও বাস্তবে অভিজ্ঞতা কম। এ নিয়েই ঘটতে থাকে নানা হাস্যকর কর্মকাণ্ড। তাঁরা গুফম্যান নামের থিয়েটারের অভিজ্ঞ এক ব্যক্তি আসার অপেক্ষা করেন।

‘মন্টি পাইথন অ্যান্ড দ্য হলি গ্রেইল’ সিনেমার পোস্টার

৬. ‘মন্টি পাইথন অ্যান্ড দ্য হলি গ্রেইল’
১৯৭৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই ব্রিটিশ কমেডি এই সিনেমার আইএমডিবি রেটিং ৮.২। প্রায় ছয় লাখ দর্শক সিনেমাটিকে ভোট দিয়েছেন। হাস্যরসে ভরা এ সিনেমায় দেখা যাবে কিং আর্থার রাউন্ড টেবিলে বসে আছেন। তাঁকে ঘিরে রয়েছেন নাইটরা। কিং আর্থার নির্দেশ দেন হলি গ্রেইল নামের একজনকে খুঁজে বের করতে হবে। এ জন্য খুবই স্বল্প বাজেট দিয়ে অভিযান শুরু করেন। এ অভিযানের প্রতিটি মুহূর্ত দর্শকদের হাসায়। সিনেমাটি যৌথভাবে পরিচালনা করেছেন টেরি গিলিয়াম ও টেরি জোনস। এতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন গ্রাহাম চ্যাপম্যান।

‘মন্টি পাইথন অ্যান্ড দ্য হলি গ্রেইল’ সিনেমার পোস্টার

৭. ‘ডাক স্যুপ’
সিনেমাটি ১৯৩৩ সালের। সাদা–কালো সিনেমাটি এখনো দর্শকদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে। লিও মেক্যারি পরিচালিত সিনেমাটির আইএমডিবি রেটিং ৭.৭। মার্কস ব্রাদার্স নামে পরিচিত তিন অভিনয়শিল্পী। চিকো মার্কস, হারপো মার্কস ও গ্রুচো মার্কস। তাঁদের মজার কর্মকাণ্ড সব সময়ই দর্শকদের তুমুল বিনোদন দিত। সিনেমায় তুলে ধরা হয়েছে কাল্পনিক একটি দেশ। কাল্পনিক এই দেশের নাম ফ্রুটল্যান্ড। দেশের রাজনীতি ও ক্ষমতার লোভকে কেন্দ্র করেই এই গল্প। রাজনৈতিক নানা সিদ্ধান্তের ঘটনাকে ব্যঙ্গ করে গল্পটি পর্দায় তুলে ধরা হয়েছে।

‘ফার্গো’ সিনেমার পোস্টার

৮. ‘ফার্গো’
জোয়েল ও ইথান কোয়েন মিলেই কোয়েন ব্রাদার্স। তাঁদের উল্লেখযোগ্য সিনেমার একটি ‘ফার্গো’। সিনেমাটির আইএমডিবি রেটিং ৮.১। ভোট দিয়েছেন প্রায় আট লাখ দর্শক। গল্পের কেন্দ্রবিন্দু হলো জেরি লুন্ডগার্ডকে ঘিরে। তিনি তাঁর স্ত্রীকে মুক্ত করার জন্য দুই অপরাধীকে ভাড়া করেন। ক্রমেই পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়। পরিস্থিতি দ্রুত হাতের বাইরে চলে যায়। এ ঘটনায় এক সময় কয়েকজন মানুষ নিহত হন। ‘ফার্গো’ একই সঙ্গে ক্রাইম ড্রামা ও ব্ল্যাক কমেডি জনরার গল্প।

আরও পড়ুন
‘ইয়াং ফ্রাংকেনস্টাইন’ সিনেমার পোস্টার

৯. ‘ইয়াং ফ্রাংকেনস্টাইন’
সিনেমাটি মুক্তি পায় ১৯৭৪ সালে। কমেডি এই সিনেমার আইএমডিবি রেটিং ৮। ১ লাখ ৭৯ হাজার দর্শক ভোট দিয়েছেন। সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন মেল ব্রকস। সিনেমাটি দুটি শাখায় অস্কার মনোনয়ন পায়। মজার ছলে যুক্তরাষ্ট্রের এক বিজ্ঞানীর গল্প বলা হয়েছে। বিজ্ঞানীর এক তরুণ নাতি বিজ্ঞানী দাবিদার, তিনি প্রমাণ করার চেষ্টা করেন, যতটা লোকে বিশ্বাস করে ততটা পাগল ছিলেন না তাঁর দাদা। গল্পটি বেশ আলোচনায় এসেছিল। এটি ভ্যারাইটিতে সমালোচকদের পছন্দের তালিকায় ৯ নম্বরে রয়েছে।

‘গ্রাউন্ডহগ ডে’ সিনেমার পোস্টার

১০. ‘গ্রাউন্ডহগ ডে’
নব্বই দশকে তুমুল আলোচনা তৈরি করেছিল সিনেমাটি। জয় করেছিল বাফটা পুরস্কার। হরলড রামিস পরিচালিত সিনেমাটির গল্প সিনেমার নামেই এক দিবস কেন্দ্র করে। ফেব্রুয়ারির দুই তারিখ গ্রাউন্ডহগ ডে। দিনটি পালন করতে নতুন এক জায়গায় এসে অদ্ভুত সব কর্মকাণ্ডের জন্ম দেন ফিল কনর্নিস। এই চরিত্রে অভিনয় করেছেন বিল মারে। তাঁর মজার ঘটনাগুলোই হাস্যরসের জন্ম দেয়। এ গল্পের মধ্যে জীবনকে খোঁজার গল্প দেখানো হয়েছে। সিনেমার আইএমডিবি রেটিং ৮। ভোট দিয়েছেন ৭ লাখ ২৯ হাজার দর্শক।