১১ ফুট লম্বা সাপ নিয়ে নাচ, ভয়কে সেদিন জয় করেছিলেন সালমা
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে নানা ধরনের চরিত্রে দেখা গেছে সালমা হায়েককে। কিন্তু এর মধ্যে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং দৃশ্য কোনটি? আজ মেক্সিকান এই অভিনেত্রীর জন্মদিন। এ উপলক্ষে অনলাইন গণমাধ্যম ফার আউট অবলম্বনে জেনে নেওয়া যাক সালমার চ্যালেঞ্জিং দৃশ্যের কথা।
হলিউডে সালমা হায়েকের যাত্রাপথে কঠিন দৃশ্যের অভিজ্ঞতা রয়েছে। কিন্তু তাঁর নিজের ভাষায়, সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং ছিল সেই দৃশ্য, যেখানে তাঁকে জয় করতে হয়েছিল ভয়কে।
১৯৯০-এর দশকে রবার্ট রদ্রিগেজের ‘ডেসপারাডো’ ছবির মাধ্যমে প্রথমবার আলোচনায় আসেন হায়েক। তবে শুরুর কয়েক বছর তাঁকে বারবার এমন চরিত্রেই অভিনয় করতে হয়েছিল, যা পুরোটাই পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গিতে নির্মিত চরিত্র। তাই ২০০২ সালে ‘ফ্রিদা’ ছবির মাধ্যমে সেই ইমেজ ভাঙার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন তিনি।
ফ্রিদা কাহলোর জীবন অবলম্বনে নির্মিত সেই বায়োপিক সালমাকে প্রথমবারের মতো নিজের অভিনয়শক্তি প্রদর্শনের সুযোগ দেয়। ভালোবাসা, বেদনা, দীর্ঘস্থায়ী যন্ত্রণা, এমনকি অঙ্গহানির দৃশ্যও ছিল সেখানে। ছবিটি তাঁকে এনে দেয় অস্কারের সেরা অভিনেত্রীর মনোনয়ন। অথচ এর কিছু বছর আগেই তিনি ‘ওয়াইল্ড ওয়াইল্ড ওয়েস্ট’-এর মতো ছবিতে নিছক গ্ল্যামার চরিত্রে অভিনয় করে চলেছেন।
তবু হায়েকের মতে, ‘ফ্রিদা’ ছিল তাঁর কাছে আনন্দময় অভিজ্ঞতা। প্রতিদিন শুটিং সেটে যাওয়ার জন্য তিনি অধীর হয়ে থাকতেন। তাঁর মতে, সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ এসেছিল ১৯৯৬ সালের ‘ফ্রম ডাস্ক টিল ডন’ সিনেমায়। যে সিনেমা মুক্তির পর রাতারাতি আবেদনময়ী অভিনেত্রীর তকমা পান তিনি।
সেই বিখ্যাত দৃশ্যে হায়েককে দেখা যায় বিকিনি আর কাঁধজুড়ে বিশালাকার বার্মিজ পাইথন নিয়ে নাচতে। পর্দায় হায়েকের আত্মবিশ্বাসী উপস্থিতি যেন আগুন ঝরায়।
কিন্তু বাস্তবে সেটি ছিল ভয়ের চূড়ান্ত পরীক্ষা। কারণ, তিনি প্রকৃত সাপের সঙ্গেই নেচেছিলেন, অথচ সাপের প্রতি তাঁর গভীর আতঙ্ক ছিল ছোটবেলা থেকেই। কাঁধে ১১ ফুট লম্বা সাপ জড়িয়ে কীভাবে কেউ এতটা নির্ভীকভাবে নাচতে পারেন?
ভয় কাটানোর জন্য সালমা খুঁজে দেখেন, বিভিন্ন সংস্কৃতিতে সাপকে আত্মশক্তির প্রতীক হিসেবে দেখা হয়। তখনই মনে হয়, তিনি আসলে সাপের সঙ্গে নাচছেন না; বরং নিজের ভেতরের শক্তি ও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই নাচছেন। এ উপলব্ধিই তাঁকে নিয়ে যায় এক ট্রান্স অবস্থায়।
হায়েক পরে বলেন, ‘আমি মনে মনে এই সাপের সঙ্গে এক সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলাম। নাচটিকে আমি স্রেফ নাচ হিসেবে দেখিনি, এটা ছিল একধরনের রীতি। মাসের পর মাস প্রস্তুতি নিয়েছি, এমনকি হিপনোসিস পর্যন্ত করতে হয়েছে।’