বিমানবন্দরে তিন ঘণ্টা আটকা ‘টার্মিনেটর’ তারকা, দিতে হলো বিপুল অঙ্কের জরিমানা

আর্নল্ড শোয়ার্জেনেগারকে শুল্ক বিভাগের জেরার মুখে পড়তে হয়েছিল
ছবি: সংগৃহীত

জার্মানির মিউনিখ বিমানবন্দরে আর্নল্ড শোয়ার্জেনেগারকে শুল্ক বিভাগের জেরার মুখে পড়তে হয়েছিল। পণ্য ঘোষণা ফরমে সঙ্গে কী কী রয়েছে, সব তথ্য সঠিকভাবে জানালেও ভুলবশত নিজের দামি একটি ঘড়ির কথা ভুলে যাওয়ায় আটকে যান জনপ্রিয় এই হলিউড অভিনেতা। ৭৬ বছর বয়সী এই তারকাকে বিমানবন্দরের শুল্ক বিভাগের মুখোমুখি হতে হয়। তিন ঘণ্টা নাটকীয়তার পর এই অভিনেতা বের হতে পারেন।

মিউনিখ বিমানবন্দরের প্রেস অফিসার টমাস মেইস্টার গণমাধ্যমে জানান, যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার সাবেক গভর্নর ও সিনেমার তারকা মুক্তি পেয়েছেন। তিনি আবার যাত্রা করতে পেরেছেন। কী ঘটেছিল, সেটা নিয়ে টমাস বলেন, তিনি একটিমাত্র পণ্যের ঘোষণা করেননি। এটা তাঁর ঘড়ি। যে পণ্য ইউরোপের বাইরে থেকে আমদানি করে ইউরোপে ব্যবহার করার জন্য নিয়ে আসা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে সবার জন্য যে প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়, সেটাই করা হয়েছে।

হলিউড অভিনেতা আর্নল্ড শোয়ার্জেনেগার
ছবি: রয়টার্স

এ ঘটনা নিয়ে আর্নল্ড শোয়ার্জেনেগার মুখ না খুললেও তাঁর ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, আর্নল্ড প্রায় তিন ঘণ্টার মতো মিউনিখ বিমানবন্দরে আটকে ছিলেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে একটি ঘড়ি ছিল। এই ঘড়ি সম্ভবত জলবায়ু সংকট মোকাবিলা করার তহবিলে দেওয়ার জন্য সঙ্গে নিয়েছিলেন।

দামি ঘড়ি তিনি চাইলেই সঙ্গে নিতে পারতেন। কিন্তু ভুলটা হয় বিমানবন্দরের ঘোষণা ফরম পূরণ করার সময়। এটি নিয়ে অভিনেতার ঘনিষ্ঠ সেই সূত্র আরও জানায়, শুল্ক কর্মকতার সব প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিয়েছেন আর্নল্ড।

তিনি আরও বলেন, প্রতিটি পদক্ষেপেই তিনি শুল্ক কর্তৃপক্ষকে সহায়তা করেছেন। জিনিসগুলো সামনে ছড়ানো ছিল। এটা পুরোপুরি ‘কমেডি অব এরর’। এটা নিয়ে অবশ্য মজার একটা পুলিশি মুভি বানানো যায়। শোয়ার্জেনেগারের সঙ্গে থাকা ঘড়িটা ছিল সুইস লাক্সারি ব্র্যান্ড অডেমার্স পিগুয়েটের। এটি একটি দামি ঘড়ি। ঘড়ির জন্য জরিমানাসহ ৩৫ হাজার ইউরো গুনতে হয় এই অভিনেতাকে। কাস্টমসের নিয়ম অনুযায়ী এই অর্থ অর্ধেক নগদে পরিশোধ করতে হয়। এই নিয়েই বাধে বিপত্তি।

হলিউড অভিনেতা আর্নল্ড শোয়ার্জেনেগার
এএফপি

ঘড়িটি জব্দ করার পরে এই অভিনেতাকে পুনরায় ঘড়ির জন্য জরিমানা ও শুল্ক গুনতে হয়। কিন্তু কাস্টমস কর্মকর্তারা এক ঘণ্টা ধরে তাঁদের ক্রেডিট কার্ড মেশিন ব্যবহার করতে ব্যর্থ হন। একসময় তাঁরা ক্রেডিট কার্ড মেশিন থেকে ট্যাক্স আদায় করার আশা ছেড়ে দেন। এই অভিনেতাকে নিয়ে যাওয়া হয় ব্যাংকে। তাঁকে বলা হয় এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলতে। কিন্তু এখানেও টাকা উত্তোলন করতে গিয়ে বিপত্তি বাধে। অন্যদিকে ব্যাংকও বন্ধ। নানা নাটকীয়তার পর একজন নতুন কাস্টমস অফিসার নতুন একটি ক্রেডিট কার্ড মেশিন নিয়ে আসেন। অগত্যা এই ঝামেলা থেকে রেহাই পান হলিউড তারকা। উল্লেখ্য, তিনি ২০ বছরের বেশি সময় ধরে দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কাজ করছেন। এগুলো নিয়ে খুব কমই কথা বলেন এই ‘টার্মিনেটর’ তারকা।