অ্যান্ড্রা ডে যেভাবে হলেন বিলি হলিডে

১১ বছর বয়সে শিল্পী বিলি হলিডের গান শুনে বদলে গিয়েছিল এক কিশোরীর জীবন। ‘সুগার’ আর ‘স্ট্রেঞ্জ ফ্রুট’ গান দুটো শুনে ছোট্ট মেয়েটি বুঝে গিয়েছিল ‘মহৎ শিল্পী’ কাকে বলে! মনে মনে সে-ও হতে চেয়েছিল ‘গ্রেট সিঙ্গার’। তারপর একদিন পূরণ হলো তার সেই চাওয়া। এটা ছিল অ্যান্ড্রা ডে নামে এক কণ্ঠশিল্পীর শৈশবস্মৃতি। সম্প্রতি নিজের প্রিয় কণ্ঠশিল্পী বিলি হলিডের চরিত্রে অভিনয় করে তিনি পেয়েছেন বিশ্বস্বীকৃতি।

বিলি হলিডেরূপে অ্যান্ড্রা ডে
ইনস্টাগ্রাম

পেশাদার অভিনয়শিল্পী হিসেবে আগে অভিনয় করা হয়নি অ্যান্ড্রার। যখন শুনলেন, বিলি হলিডের জীবনীচিত্র তৈরি হচ্ছে, মনে হলো, ‘ইশ্‌, আমি যদি পর্দার বিলি হতে পারতাম!’ কিছু না ভেবেই অডিশন দিলেন। নির্বাচিত হলেন, ছবিটায় অভিনয়ও করলেন। জীবনের প্রথম ছবির জন্য সেরা অভিনেত্রী হিসেবে গোল্ডেন গ্লোব জিতে নিলেন এই কৃষ্ণাঙ্গ নারী। এই পুরস্কার জিতে সে রাতে তিনি গড়েছেন বেশ কয়েকটি ইতিহাস। বিশ্ব চলচ্চিত্রে হইচই পড়ে যায় ৩৬ বছর বয়সী এই গায়িকা কাম নায়িকাকে নিয়ে।

অ্যান্ড্রা ডে
ইনস্টাগ্রাম

‘দ্য ইউনাইটেড স্টেটস ভার্সেস বিলি হলিডে’ ছবিতে বিলি হয়ে ওঠা প্রসঙ্গে অ্যান্ড্রা বলেন, ‘শারীরিক, মানসিক ও আত্মিকভাবে আজ আমি যা, সেটা বিলির গানেরই প্রভাবে। পর্দায় বিলি হয়ে ওঠার চেয়ে সম্মান এই জীবনে আর কিছু হতে পারে না। বিলি যা যা করেছেন, সেসব আমাকে দারুণভাবে প্রভাবিত করেছে। তাঁর গান, কণ্ঠ, জীবনযাপন, কৃষ্ণাঙ্গদের অধিকারের জন্য লড়াই, আন্দোলন—সব মিলিয়ে তিনি আমার কাছে সৃষ্টির সুন্দরতম রূপ।’

অ্যান্ড্রা ডে
ইনস্টাগ্রাম

বড় পর্দায় বিলি হয়ে মোটেও তৃপ্ত ছিলেন না অ্যান্ড্রা। কেবলই মনে হচ্ছিল, এই জায়গা এভাবে না করে অন্যভাবে করলে বোধ হয় আরও ভালো হতো। মনে হচ্ছিল, জায়গাটায় বিলির অভিব্যক্তি হয়তো অন্য রকম হতো। বিলিকে ঠিকমতো উপস্থাপন করতে পারলেন কি না, এসব চিন্তা আর অস্বস্তিতে ঠিকমতো ঘুম হচ্ছিল না অ্যান্ড্রার। হঠাৎ এক সকালে ঘুম থেকে উঠে মুঠোফোনের পর্দায় দেখেন নিজের ব্যবস্থাপকের কয়েকটা মিসড কল। ভ্রু কুঁচকে কল ব্যাক করতেই শুনলেন তাঁর উত্তেজিত কণ্ঠস্বর, ‘অ্যান্ড্রা, তুমি গোল্ডেন গ্লোবে দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে মনোনয়ন পেয়েছ। সেরা অভিনেত্রী আর সেরা গান।’ শুনে ফুঁপিয়ে কান্না শুরু করেন অ্যান্ড্রা।

অ্যান্ড্রা ডে
ইনস্টাগ্রাম

আরও একবার কেঁদেছিলেন এই কণ্ঠশিল্পী, গীতিকার ও অভিনয়শিল্পী। যেদিন বাঘা বাঘা সব অভিনেত্রীকে রেখে সেরা অভিনেত্রী হিসেবে ঘোষণা করা হলো তাঁর নাম। বাড়ি থেকেই অনলাইনে তিনি অংশ নিয়েছিলেন এই আয়োজনে। নিজের নাম ঘোষণা হতেই কেঁদে ভাসিয়েছেন বুক। কান্না থামিয়ে বক্তৃতা দেওয়ার সময় তাঁকে ঘিরে বসে থাকা বাড়ির লোক আর বন্ধুরাও কান্না জুড়ে দেন। ভেজা চোখে অ্যান্ড্রা বলেন, ‘মানুষ কেবল দুঃখেই কাঁদে না। সুখের কান্না এই পৃথিবীর সেরা কান্না। যখন বাঁধভাঙা সুখ আসে, তখন চোখের জলও যোগ দেয় আনন্দের মিছিলে।’  

অ্যান্ড্রা ডে
ইনস্টাগ্রাম

ওই ছবিতে ‘টাইগ্রেস অ্যান্ড টুইড’ গানের জন্য বেস্ট অরিজিনাল সং শাখায় গোল্ডেন গ্লোবে আরেকটি মনোনয়ন পেয়েছিলেন অ্যান্ড্রা।

সূত্র: নিউইয়র্ক টাইমস