টাইমের চোখে প্রভাবশালী যাঁরা

প্রভাবশালী অভিনয়শিল্পী স্কারলেট জোহানসন, কণ্ঠশিল্পী বিলি আইলিশ ও অভিনেত্রী কেট উইন্সলেট

কে অস্বীকার করবে? বছরজুড়ে তাঁরাই ছিলেন সবচেয়ে আলোচিত জুটি। তাই তো টাইম সাময়িকীর প্রভাবশালী তালিকায় শীর্ষে প্রিন্স হ্যারি–মেগান মার্কেল। নানা আলোচনার জন্ম দিয়ে রাজপরিবার ছেড়ে স্বাধীন জীবনযাপনে যাওয়া প্রিন্স হ্যারি ও মেগান মার্কেল যে একপ্রকার সংগ্রামই করেছেন। নিয়মকানুন আর ঐতিহ্যের চাপে পড়ে জীবন পিষ্ট হয়ে যাচ্ছিল। তার সঙ্গে ‍যুক্ত হয়েছিল বর্ণবাদ। যে কথা গুমরে মরত ব্রিটিশ রাজভবনে, সেটাই বের করে এনেছিলেন এই দম্পতি, তা হবেই না কেন? মা প্রিন্সেস ডায়ানার রক্ত যে প্রিন্স হ্যারির শরীরে। ব্রিটিশ রাজপরিবারকে পেছনে ফেলে স্বাধীন জীবনযাপনে বদ্ধপরিকর হ্যারি ও মেগান যে শীর্ষে থাকবেন, এটাই তো স্বাভাবিক।

প্রিন্স হ্যারি ও মেগান মার্কেল
ইনস্টাগ্রাম

বরাবরের মতো এবারও ১০০ প্রভাবশালীর তালিকা করেছে টাইম সাময়িকী। সেখানে ‘আইকনস’, ‘পায়োনিয়ার্স’, ‘টাইটানস’, ‘আর্টিস্ট’, ‘লিডার্স’ ও ‘ইনোভেটর্স’ ক্যাটাগরিতে সারা বিশ্বে প্রভাব বিস্তার করা বিভিন্ন অঙ্গনের ব্যক্তিদের তালিকা তুলে ধরা হয়েছে।

স্কারলেট জোহানসন

তালিকায় বিনোদন দুনিয়ার তারকারাও আছেন। আইকনস ক্যাটাগরিতে বিশেষ করে চোখ পড়বে মার্কিন পপ গায়িকা ব্রিটনি স্পিয়ার্সের নাম। বলাই বাহুল্য এই সময়ে ব্রিটনির মতো আলোচনায় খুব কম তারকাই ছিলেন। কাজ নয়, বাবার সঙ্গে আইনি অভিভাবকত্ব নিয়ে দ্বন্দ্ব তাঁকে তুলে এনেছিল খবরের শিরোনামে। আদালতে ‍ব্রিটনির আবেগঘন বক্তব্য, রাস্তায় ভক্তদের ‘ফ্রি ব্রিটনি’ আন্দোলন নিশ্চয়ই তাঁকে আলোচনায় রেখেছে। আর অবশেষে আইনি অভিভাবকত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন তাঁর বাবা। এগুলো তাঁকে প্রভাবশালী তালিকায় রাখার অন্যতম কারণ হতে পারে। পায়োনিয়ার্স তালিকায় আছেন আরেক মার্কিন সংগীতশিল্পী বিলি আইলিশ। গত বছরের গ্র্যামির মঞ্চে বিলি আইলিশের দুই হাতভর্তি পুরস্কারই বলে দেয় সংগীতজগতে কতটা প্রভাবশালী তিনি। বয়সে ছোট হলে কী হবে, গত বছরের গ্র্যামি আসরে চারটি বিভাগে সেরা হয়ে ইতিহাস গড়েছিলেন এই তারকা। এই ক্যাটাগরিতে টাইম রেখেছে কানাডিয়ান ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর ও ফ্যাশন ডিজাইনার অরোরা জেমসকেও।

টাইটানস ক্যাটাগরিতে আছেন মার্কিন টেলিভিশন প্রযোজক শন্ডা রাইমস, দক্ষিণ কোরীয় অভিনেত্রী ইয়ুন ইয়ো-জং এবং বেনিনীয় সংগীতশিল্পী ও গীতিকার অ্যাঞ্জেলি কিচো। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অতটা জনপ্রিয় না হলেও নিজ নিজ জায়গায় তাঁরা অনন্য অবদান রেখেছেন।

কনসার্টে বিলি আইলিশ
ছবি: ইনস্টাগ্রাম

আর্টিস্ট ক্যাটাগরিতে তারার মেলা বসে গেছে। প্রথমেই বলতে হয় প্রবাসী চীনা নির্মাতা ক্লোয়ি ঝাওয়ের কথা। অস্কার আসরে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন এই তরুণ নির্মাতা। তাঁর ছবি নোমাডল্যান্ড ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা ছবির পুরস্কার জেতে। তখনই আঁচ করা গিয়েছিল অস্কারে কিছু একটা ঘটাবে এই ছবি। আর অস্কারে সেরা ছবি, সেরা পরিচালক ও সেরা অভিনেত্রী ক্যাটাগরিতে পুরস্কার ঘরে তোলে। তবে চীন এই নির্মাতাকে খুব একটা ভালোভাবে গ্রহণ করেনি। এই তালিকায় আরেক আলোচিত নাম স্কারলেট জোহানসন। ব্ল্যাক উইডো ছিল কোভিড–পরবর্তী সবচেয়ে ব্যবসাসফল ছবি। আর এই ছবিই কিনা দুম করে ছেড়ে দেওয়া হলো ওটিটিতে। পারিশ্রমিক নিয়ে ডিজনির সঙ্গে তাই আইনি লড়াই শুরু করেন স্কারলেট। হলিউডে এমনিতেই নারীরা কোণঠাসা। সেখানে ডিজনির মতো এত বড় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে জোহানসনের এই লড়াই তাঁকে আলোচনায় রেখেছিল।

কেট উইন্সলেট
ছবি: এএফপি

এ ছাড়া এই ক্যাটাগরিতে আছেন ব্রিটিশ অভিনেত্রী কেট উইন্সলেট; পুয়ের্তো রিকান র‍্যাপার ও গায়ক ব্যাড বানি; মার্কিন অভিনেতা, কমেডিয়ান, প্রযোজক ও লেখক জেসন সুডেকিস; মার্কিন র‍্যাপার ও গায়ক লি নাজ এক্স; অস্ট্রেলীয় বংশোদ্ভূত চীনা–আমেরিকান অভিনেতা, কমেডিয়ান ও পডকাস্টার বোয়েন ইয়াং; মার্কিন অভিনেত্রী, গায়িকা ও টেলিভিশন উপস্থাপক ট্রেসি এলিস রস; মার্কিন অভিনেতা ও প্রযোজক স্টিভেন ইয়ুন; উগান্ডান-ব্রিটিশ অভিনেতা ডেনিয়েল কলুয়া, ফরাসি অভিনেতা ওমার সি এবং মার্কিন সংগীতশিল্পী ও গীতিকার কেন ব্রাউন।