‘ধন্যবাদ, ধন্যবাদ, ধন্যবাদ মেগান’

ব্রিটিশ রাজপরিবারের বধূ হওয়ার ক্ষেত্রে হলিউড অভিনেত্রী মেগান মার্কেল ছিলেন সব দিক থেকেই প্রথাবিরোধী। কারণ, তিনি কৃষ্ণাঙ্গ, মার্কিন, অভিনেত্রী ও ‘ডিভোর্সি’। শুরু থেকেই রাজপরিবারের পিতৃতান্ত্রিক নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে পথ চলেছেন তিনি। একা, আহত আর আপোসহীন। রাজপরিবারের নিয়মের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে ইতিহাস গড়ে ছেড়েছেন প্রাসাদ, ছেড়েছেন ইংল্যান্ড। সম্প্রতি মার্কিন উপস্থাপক অপরাহ উইনফ্রেকে দেওয়া বিশেষ এক সাক্ষাৎকারে কথা বলেছেন মেগান। সেখানে তিনি প্রাসাদে তাঁর তিক্ত অভিজ্ঞতার গল্প ভাগ করে নিয়েছেন সবার সঙ্গে। প্রথম সন্তান আর্চির জন্মের আগে অনাগত সন্তান ‘কতটা কালো হবে’—তা নিয়েও উঠেছিল প্রশ্ন। মেগান সেসব জানিয়েছেন অকপটে।

মেগান মার্কেল
ইনস্টাগ্রাম

অস্ট্রেলীয় অভিনেতা, গায়ক ও প্রযোজক হিউ জ্যাকম্যান এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, ‘আমরা দুর্দান্ত একটা সাক্ষাৎকারের সাক্ষী হলাম। “হাই প্রোফাইল” একজন সাহসী নারী তাঁর স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে নিজের মনের দুয়ার যেন খুলে দিলেন। সততা আর সাহসকে সঙ্গী করে তিনি জানান, প্রাসাদে থেকে তিনি কেঁদেছেন, তিনি সাহায্য চেয়েছেন। আমি দীর্ঘদিন ধরে অস্ট্রেলিয়ায় আত্মহত্যা আর মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করছি। আমার মনে হয়, এই সাক্ষাৎকার সবার দেখা উচিত। তাহলে সবাই জানবে যে তিনি একা নন। মানসিক সংকটে সাহায্য চাওয়ার কোনো বিকল্প নেই। আমি শুধু বলতে চাই, ধন্যবাদ, ধন্যবাদ, ধন্যবাদ মেগান আর হ্যারি।’

মেগান, হ্যারি আর আর্চি
ইনস্টাগ্রাম

হলিউড অভিনেত্রী সোফি টার্নার লিখেছেন, ‘মেগানকে নিয়ে যাঁরা আজেবাজে মন্তব্য করছেন, সেগুলো কিন্তু মেগান পড়তে আসবেন না। সেগুলো আপনাদের পরিবার আর বন্ধুরা পড়বেন। তাঁরা জেনে যাবেন, আপনি কেমন মানুষ। আপনারা বিপদে পড়লে তাঁরা কিন্তু সাহায্য করতে আসবেন না। তাই এমন মানুষ হবেন না।’

হ্যারি ও মেগান
ইনস্টাগ্রাম

স্বীকার করেছেন যে তিনি আত্মহত্যাও করতে চেয়েছিলেন। মেগান বলেছেন, ‘বেঁচে থাকার ইচ্ছেই চলে গিয়েছিল। জীবন অবিশ্বাস্য রকমের কঠিন হয়ে উঠেছিল। হ্যাঁ, আমি আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলাম।’ এই সাক্ষাৎকার দুই মহাদেশ ছাড়িয়ে রীতিমতো তোলপাড় সারা বিশ্বে। চাপে পড়ে গেছে ব্রিটিশ রাজপরিবার। এদিকে এই সাক্ষাৎকার নিয়ে বিশ্ব দুই ভাগে ভাগ হয়েছে। অনেকে বলছেন, ‘বাড়িয়ে বাড়িয়ে বলছে মেগান’ বা ‘মেগানের কোনো কথাই বিশ্বাস করি না’। এ রকম মন্তব্যের কারণে ৪১ হাজার দর্শকের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে চাকরি হারিয়েছেন ইংল্যান্ডের টেলিভিশন আইটিভির উপস্থাপক পিয়ার্স মর্গান। বোঝা যাচ্ছে, সমর্থনের দিক থেকে ভারী হচ্ছে মেগানের পাল্লা। সাধারণ মানুষ থেকে হলিউড তারকারা সমর্থন করছেন মেগানকে।

মেগান মার্কেল
ইনস্টাগ্রাম

মার্কিন সংগীত তারকা বিয়ন্সে লিখেছেন, ‘মেগান, আপনাকে দুই হাত ভরে অভিবাদন জানাই। আপনার সাহস আর নেতৃত্বের জন্য আমার শ্রদ্ধা। আমরা আপনাকে দেখে শক্তি পাই। অনুপ্রাণিত হই।’

মেগানের মঙ্গে তুলনা চলছে ডায়নার
ইনস্টাগ্রাম