নিষিদ্ধ নির্দেশকের ছবি পেল স্বর্ণভালুক

উৎসবে যোগ দেওয়া দূরের কথা, দেশের বাইরে যাওয়াই নিষেধ ছিল মোহাম্মদ রসৌলফের। তাঁর সিনেমা দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি, এমন অভিযোগে এক বছর জেল খাটতে হয়েছিল এই নির্দেশককে। ইরানের মৃত্যুদণ্ড নিয়ে নির্মিত তাঁর সিনেমা দেয়ার ইজ নো এভিল এ বছর বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে জিতে নিয়েছে সর্বোচ্চ পুরস্কার স্বর্ণভালুক বা গোল্ডেন বিয়ার।
সশরীরে উৎসবে যোগ দিতে পারেননি ইরানি চলচ্চিত্রকার মোহাম্মদ রসৌলফ। বাবার পক্ষে পুরস্কার গ্রহণ করেছেন ছবির অন্যতম অভিনয়শিল্পী কন্যা বারান। উৎসবের জুরি বোর্ডের প্রধান জেরেমি আইরনস বলেন, ছবিতে মৃত্যুদণ্ডের চারটি গল্প বলা হয়েছে। সেখানে সাধারণ মানুষের ওপর স্বৈরশাসকের অত্যাচারের দৃশ্য ফুটে উঠেছে। উৎসবে যোগ দিতে না পারলেও মোবাইল ফোনে ভিডিও কলের মাধ্যমে সেখানকার একটি সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন মোহাম্মদ রসৌলফ। সে সময় তিনি বলেন, ‘ওপর মহলের সিদ্ধান্তে যাঁরা হত্যার কাজ থেকে নিজেদের সরিয়ে রাখতে পারেননি, আমি তাঁদের গল্প বলতে চেয়েছি। তাঁরা অন্তত ‘না’ বলতে পারতেন, সেটা অন্তত একটা ভালো কাজ হতো।’
নিজের পঞ্চম ছবি আ ম্যান অব ইন্টিগ্রিটির জন্য ২০১৭ সালে নিষিদ্ধ হন মোহাম্মদ রসৌলফ। ছবি বানানো এবং দেশের বাইরে বের হওয়া, দুটোই বারণ ছিল তাঁর জন্য। নিজের ষষ্ঠ ছবি গোপনে তৈরি করেন তিনি। পুরস্কার ঘোষণার আগে স্কাইপে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘এ ছবির গল্পগুলো আমার নিজের অভিজ্ঞতারই গল্প। জেলে থাকাকালীন আমি দেখতাম, কোনো শয়তান নয়, একজন মানুষই নির্ধারণ করছেন বহু মানুষের মৃত্যু। আর সে দায়িত্ব যাঁরা পালন করতেন, তাঁরা ছিলেন ভীষণ নির্বিকার।’

বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসবে দ্বিতীয় পুরস্কার জিতেছে যুক্তরাষ্ট্রের তরুণীদের গর্ভপাত নিয়ে নির্মিত এলিজা হিটম্যানের ছবি নেভার রেয়ারলি সামটাইমস অলওয়েজ।
সিলভার বিয়ার পেয়ে উৎসবের সেরা পরিচালক হয়েছেন হং স্যাং সু, নায়িকা পলা বিয়ার, অভিনেতা এলিয়ো জার্মানো। এ ছাড়া উৎসবে আরও ৮টি শাখায় পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। গত ২০ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে গতকাল শেষ হয় উৎসব। সূত্র: বিবিসি ও গার্ডিয়ান