হৃদয়ে নয়া ভাল্‌ভ লাগিয়ে সুখী আর্নল্ড শোয়ার্জেনেগার

আর্নল্ড শোয়ার্জেনেগার
ছবি:ইনস্টাগ্রাম

জেনে অবাক হবেন, এই অস্ত্রোপচার সফল হওয়ার সম্ভাবনা ছিল মাত্র ৬ শতাংশ। রোগীর বয়স ৭৩!
বলছি ‘টার্মিনেটর’ আর্নল্ড শোয়ার্জেনেগারের কথা। অস্ত্রোপচারটা হয়েছিল তাঁর। তিনি জনপ্রিয় হলিউড অভিনেতা, পেশাদার বডিবিল্ডার। এ কারণেই বিখ্যাত। বড় পর্দায় যাঁর ধুন্ধুমার মারামারি দেখে আপনি আশ্চর্য হয়ে যান, সেই মানুষটারই কিনা হৃদয়ে সমস্যা! হ্যাঁ, দীর্ঘদিন ধরে হার্টের নানান অসুখে ভুগছেন ৭৩ বছর বয়সী আর্নল্ড। গত শুক্রবার তাঁর হার্টে একটা জটিল সার্জারি শেষে সফলভাবে নতুন ‘অ্যাওর্টিক ভাল্‌ভ’ প্রতিস্থাপন করা হয়।

হৃদ্‌যন্ত্রের সমস্যাকে সঙ্গী করেই জন্ম শোয়ার্জেনেগারের।
ছবি:ইনস্টাগ্রাম

হৃদয়ে নতুন ভাল্‌ভ লাগানোর অভিজ্ঞতার কথা নিজেই জানিয়েছেন আর্নল্ড শোয়ার্জেনেগার। অস্ত্রোপচার শেষে হাসপাতালের আশপাশটা ঘুরে ঘুরে দেখেছেন এই তারকা।

সেখানকারই কয়েকটা ছবি শেয়ার করে নিজের ইনস্টাগ্রাম, টুইটার আর ফেসবুকের দেয়ালে শেয়ার করে লিখেছেন, ‘দারুণ লাগছে! আমি এরই মধ্যে বেশ সুস্থ। রাস্তা আর হাসপাতালের আশপাশটা ঘুরে দেখলাম। ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের চিকিৎসক আর নার্সরা অসাধারণ। তাঁদের আমার অশেষ ধন্যবাদ আর কৃতজ্ঞতা।’

আর্নল্ড শোয়ার্জেনেগার
ছবি:ইনস্টাগ্রাম

হৃদ্‌যন্ত্রের সমস্যাকে সঙ্গী করেই জন্ম এই অ্যাকশন হিরোর। শোয়ার্জেনেগারের মা ও নানিও ভাল্‌ভ-সংক্রান্ত জটিলতায় ভুগেছেন। এর আগে ২০১৮ সালের মার্চে জরুরি ভিত্তিতে ‘ওপেনহার্ট সার্জারি’র দরকার পড়েছিল এই অভিনেতার। ১৯৯৭ সালে প্রথম ভাল্‌ভ প্রতিস্থাপন করা হয় তাঁর।
অনেক বড় স্বপ্ন নিয়ে অস্ট্রিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন আর্নল্ড শোয়ার্জেনেগার। দিনের বেলায় নির্মাণশ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। সেই কাজ করে পাওয়া পারিশ্রমিক দিয়ে সন্ধ্যা থেকে ইংরেজি শেখার ক্লাস করতেন। এভাবেই নিজের হাতে সফলতার ইতিহাসের এক অধ্যায় হয়েছেন আর্নল্ড শোয়ার্জেনেগার।

এ অভিনেতার চলচ্চিত্রের জগতে যাত্রাটা খুব কঠিন ছিল। এজেন্ট, ব্যবস্থাপক, স্টুডিওপ্রধান—সবাই শুরুতে তাঁকে বলেছিলেন, ‘তুমি কখনো নায়ক হতে পারবে না। নিজের শরীরের গঠন দেখেছ? তুমি তো দেখতে দৈত্যের মতো!’

হৃদয়ে নতুন ভাল্‌ভ লাগানোর অভিজ্ঞতার কথা নিজেই জানিয়েছেন আর্নল্ড শোয়ার্জেনেগার
ছবি:ইনস্টাগ্রাম

শুরুর দিকে শুধু দেহের গঠনই নয়, উচ্চারণ নিয়েও তাঁকে কটু কথা শুনতে হয়েছে। লোকে বলত, ‘তোমাকে আঘাত দিতে চাই না। কিন্তু সত্যি বলছি, তোমার জার্মানি স্বরে ইংরেজি উচ্চারণ রীতিমতো ভয়ংকর!’ তারা বলত, ‘এই উচ্চারণ নিয়ে তুমি বরং “হোগান’স হিরোজ”–এ (দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পটভূমিতে, জার্মান কয়েদিদের নিয়ে বানানো একটি টিভি কমেডি শো) চেষ্টা করে দেখতে পারো।’ কিন্তু সমালোচকদের তোয়াক্কা না করে তিনি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের চ্যালেঞ্জটাও বডিবিল্ডিংয়ের মতো দৃঢ়চিত্তে গ্রহণ করেছিলেন। বেশ জোরেশোরে অভিনয়, ইংরেজি উচ্চারণ আর বক্তৃতার প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন।
চলতি বছর সমাবর্তন পাওয়া তরুণ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে গত ১৮ মে স্ন্যাপচ্যাটের হয়ে একটি বক্তৃতা দিয়েছেন এই হলিউড অভিনেতা। বলেছেন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণেও নিজের লক্ষ্যে অটুট রাখার কথা।

এ অভিনেতার চলচ্চিত্রের জগতে যাত্রাটা খুব কঠিন ছিল।
ছবি:ইনস্টাগ্রাম