মুম্বাইয়ে ‘স্মরণে সব্যসাচী’

‘স্মরণে সব্যসাচী’ সন্ধ্যার প্রধান অতিথি ছিলেন কাজী সব্যসাচীর কন্যা খিলখিল কাজীপ্রথম আলো

কাজী নজরুল ইসলামের লেখা ‘নমঃ নমঃ নমো বাংলা দেশ মম/ চির-মনোরম চির–মধুর’ গানের মাধ্যমে কাজী সব্যসাচীকে স্মরণ করে এক কবিতাময় রাতের সূচনা করেন আবৃত্তিশিল্পী তাপস মাইতি। তাঁর সঙ্গে কণ্ঠ মেলান ৯ নারী শিল্পী।
৯ মার্চ মুম্বাইয়ের গাইমুখে সংঘমিত্র কালীবাড়ির প্রাঙ্গণে ‘স্মরণে সব্যসাচী’ শীর্ষক এক কবিতাপাঠের আসর বসেছিল। এই সন্ধ্যায় বরেণ্য আবৃত্তিশিল্পী কাজী সব্যসাচীর প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করেন তাপস মাইতি আর তাঁর দল ‘আবৃত্তির অনুভবে’। ব্যতিক্রমী এই সন্ধ্যার আয়োজক ছিলেন সংঘমিত্রর কর্ণধার পার্থ রায়। ‘স্মরণে সব্যসাচী’ সন্ধ্যার প্রধান অতিথি ছিলেন কাজী সব্যসাচীর কন্যা খিলখিল কাজী। মুম্বাইয়ে আধুনিক আবৃত্তিশিল্পের পথিকৃৎ কাজী সব্যসাচীকে স্মরণ করে এই প্রথম অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল।

এদিন বাবার আত্মাকে যেন খুঁজে পেয়েছিলেন খিলখিল কাজী
প্রথম আলো

‘স্মরণে সব্যসাচী’ অনুষ্ঠানের সূচনা হয় মুম্বাইয়ের প্রথম আবৃত্তির দল ‘আবৃত্তির অনুভবে’র ৯ উদীয়মান আবৃত্তিশিল্পীর সমবেত পরিবেশনা দিয়ে। এরপর ‘সংঘমিত্র’ ও ‘আবৃত্তির অনুভবে’র পক্ষ থেকে প্রধান অতিথি হিসেবে পুষ্পস্তবক, স্মারক ও উত্তরীয় দিয়ে বরণ করা হয় খিলখিল কাজীকে। দুই ঘণ্টাব্যাপী কথায়, কবিতায় এই রাতকে জমজমাট ও আকর্ষণীয় করে তোলেন খিলখিল কাজী আর তাপস মাইতি। এ আসরে কাজী সব্যসাচীকে ঘিরে নানান স্মৃতি মেলে ধরেন খিলখিল। তাঁর স্মৃতিতে উঠে আসেন কাজী নজরুল ইসলামও। খিলখিল কাজীর কবিতাপাঠ মুগ্ধ করেছিল উপস্থিত শ্রোতাদের।

কাজী সব্যসাচীকে স্মরণ করে এক কবিতাময় রাতের সূচনা করেন আবৃত্তিশিল্পী তাপস মাইতি
প্রথম আলো

এদিন বাবার আত্মাকে যেন খুঁজে পেয়েছিলেন খিলখিল কাজী। মুম্বাইয়ের বুকে কাজী সব্যসাচীকে ঘিরে মানুষের উন্মাদনা অবাক করেছিল তাঁকে। হয়েছিলেন আবেগাপ্লুত। কান্নাভেজা কণ্ঠে খিলখিল কাজী বলেন, ‘কলকাতা থেকে প্রায় দুই হাজার কিলোমিটার দূরে বাবার প্রতি মানুষের এই ভালোবাসা দেখে আমি সত্যি হতবাক। এত ভালোবাসা আর সম্মানে আমি আপ্লুত।’

‘স্মরণে সব্যসাচী’ অনুষ্ঠানের সূচনা হয় মুম্বাইয়ের প্রথম আবৃত্তির দল ‘আবৃত্তির অনুভবে’র ৯ উদীয়মান আবৃত্তিশিল্পীর সমবেত পরিবেশনা দিয়ে
প্রথম আলো

এই রাত আরও ব্যতিক্রমী হয়ে ওঠে তাপস মাইতির অসাধারণ কবিতাপাঠে। তিনি শোনান রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম ছাড়াও মৃণালকান্তি দাশ, সব্যসাচী দেব, শামসুর রাহমান, বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের রচনা থেকে। তাপস মাইতি বলেন, ‘এই প্রথম দেশের মাটিতে কাজী সব্যসাচীকে নিয়ে এ রকম অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলো আর তাঁকে স্মরণ করা হলো। প্রতিবছরের মার্চে (কাজী সব্যসাচীর প্রয়াণের মাস) “স্মরণে সব্যসাচী” অনুষ্ঠানের আয়োজন করব। আমি মনে করি, কবিতা উত্তরণের কথা বলে, জীবনসংগ্রামের সাহস জোগায়।’