‘বৃষ্টিতে ১৫ জন শিল্পী নিয়ে মাতামাতি করছি, টেনশনে আছি’

তিন দিন ধরে চলা বৃষ্টিতে বেকায়দায় পড়েছে শুটিং ইউনিট
ছবি: তুহিন হোসেনের সৌজন্যে

তিন দিন ধরে চলা বৃষ্টিতে বেকায়দায় পড়েছে শুটিং ইউনিট। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে একাধিক শুটিং ইউনিট বৃষ্টির মধ্যে শুটিং করতে পারেননি। কেউ রুমের মধ্যে শুটিং করলেও রাতে বাসায় ফিরতে পারেননি। গভীর রাত পর্যন্ত বৃষ্টিতে আটকা পড়েন। গাজীপুরের পুবাইল, রাজশাহী ও ঢাকার উত্তরা শুটিং বাড়িতে খবর নিয়ে এই তথ্য জানা যায়। প্রযোজক ও পরিচালকেরা বলছেন, শুটিং করতে না পেরে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বৃষ্টির মধ্যের কিছু অংশের শুটিং হলেও সেগুলোতে সন্তুষ্ট নন কেউ কেউ। আবার একসঙ্গে সব তারকার শিডিউল নিয়ে শুটিং করাও কঠিন।

২ অক্টোবর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ধারাবাহিক নাটক ‘ক্যাম্পাস’–এর শুটিং শুরু করেছেন পরিচালক পরিচালক তুহিন হোসেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র–শিক্ষক সম্পর্ক, প্রেম, রাজনীতিসহ নানা ঘটনা এই নাটকে আসবে। শুটিংয়ে অংশ নিয়েছেন আহসান হাবীব নাসিম, রওনক হাসান, অর্ষা, চাষী আলম, সুষমা সরকার, মিহি, পাভেলসহ ১৫ জনের বেশি অভিনয়শিল্পী। সবাইকে নিয়ে বিপাকে পড়েছেন এই পরিচালক। কারণ, ২ তারিখ থেকে শুটিং হওয়ার কথা থাকলেও যাওয়ার পরই বৃষ্টির কারণে শুটিং বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

তুহিন বলেন, ‘১৫ জন অভিনয়শিল্পী নিয়ে মাতামাতি করছি, খাচ্ছি আর টেনশনে আছি। কারণ, বৃষ্টির জন্য শুটিং করতে পারছি না। আমার শুধু ক্ষতিই নয়, অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেল। প্রতিদিন যে কাজ করার দরকার, সেখানে কোনো দিন ১৫ ভাগ, কখনো ২০ ভাগ করতে পারছি। বাইরে একদম শুটিং করতে পারছি না। আবার কন্টিউনিটির ঝামেলা আছে। সব মিলিয়ে টার্গেটের ২০ থেকে ২৫ ভাগ কাজ করতে পারছি। আর বাকি সময় বসে আছি। উপায় নেই। শুটিংয়ে এসে এমন প্রতিকূল আবহাওয়া আগে কখনোই পাইনি।’

অভিনয় শিল্পী সংঘের সভাপতি ও নাটকটির অভিনেতা আহসান হাবীব নাসিম রাজশাহী থেকে বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে পরিচালক একটু বিপদেই পড়েছেন। কিছু তো করার নেই। পরিচালককে ক্ষতির মুখে পড়তে হবে হয়তো। বিশ্ববিদ্যালয়ের লবি, রুমে, ডাইনিংসহ কিছু জায়গায় শুটিং হলেও কাঙ্ক্ষিত শুটিং করতে পারেননি। বাকি যে কয় দিন শুটিং আছে সেটা সবাই মিলে সহযোগিতা করতে হবে।’

অভিনেতা আহসান হাবীব নাসিম
ছবি: সংগৃহীত

উত্তরার একটি শুটিং বাড়ি থেকে অভিনেতা তৌসিফ মাহবুব বলেন, ‘বৃষ্টির মধ্যে ইনডোর শুটিং করতে পারছি। আমাদের বাইরে তেমন কোনো শুটিং নেই। যে কারণে তেমন সমস্যায় পরতে হচ্ছে। কিন্তু শুনছি বৃষ্টির জন্য অনেকেই ঠিক মতো শুটিং করতে পারছে না।’

পুবাইলে বিলবিলাই শুটিং হাউসের গতকালের শুটিং বাতিল করতে হয়েছে টিমকে। আজ শুক্রবার তড়িঘড়ি করে শুটিং ইউনিট শুটিং করে ঢাকা ফিরেছে। এদিকে পুবাইলের হাসনাহেনা শুটিং হাউসে চলছে এনটিভির ‘প্রবাসী পরিবার’ ধারাবাহিক নাটকের শুটিং।

‘প্রবাসী পরিবার’ ধারাবাহিক নাটকের শুটিংয়ের ফাঁকে
ছবি: সংগৃহীত

তিন দিন ধরে শুটিং হলেও শুরুর প্রথম দিন থেকেই বৃষ্টির মুখোমুখি হতে হয়েছে শুটিং ইউনিটকে। পরিচালক ও অভিনেতা সহিদ উন নবী শুটিং ইউনিট থেকে বলেন, ‘আমরা পরিকল্পনামতো শুটিং করতে পারিনি। বাধ্য হয়েই আমাদের কিছু অংশের শুটিং করেছি। আজ বিকেল থেকে কিছুটা শুটিং করতে পেরেছি। আর গতকাল বৃষ্টির জন্য শুটিংয়ে আটকা পড়েছিলাম। বৃষ্টির মধ্যে ঢাকায় ফেরা কঠিন হয়ে যায়। গতকাল আমাদের শুটিংয়ের গাড়ি সেটে আসার কথা রাত ১০টার মধ্যে; সেই গাড়ি এসেছে রাত দেড়টার পর। বাধ্য হয়ে টিমের অনেককে শুটিং বাড়িতেই থাকতে হয়েছে।’ বিলবিলাই শুটিং বাড়ির ম্যানেজার খোকন মিয়া বলেন, ‘এই বৃষ্টির মধ্যে কেউ ঠিকমতো শুটিং করতে পারছে না। ভাড়া দিয়ে গতকাল এক পার্টি চলে গেছে, আজ এক পার্টি আগেই শুটিং শেষ করে চলে গেছে।’