নিছক ভূতের গল্প নয়

অদ্ভুত এক গ্রাম। লোকমুখে প্রচলিত প্রায় সব কুসংস্কারের উৎপত্তি নাকি এই গ্রাম থেকে। এক দম্পতি ঘুরতে ঘুরতে এই গ্রামে পৌঁছায়। এ যেন সত্যিই এক আজব জায়গা। কুসংস্কারের এই গল্পগুলোর একটার চেয়ে আরেকটার পেছনের গল্প আরও অদ্ভুত। কী সেই কুসংস্কারের গল্পগুলো? সেগুলো কি কেবলই গল্প? নাকি এর পেছনে লুকিয়ে আছে কোনো অতিপ্রাকৃতিক রহস্য? দুই তরুণ–তরুণী কি বের হতে পারবে এই গ্রাম থেকে? সেটা নিয়েই ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম চরকির অ্যানথোলজি সিরিজ ‘ষ’–এর তৃতীয় পর্ব ‘লোকে বলে’। সাইকোলজিক্যাল হরর গল্পের এ পর্ব মুক্তি পাবে আজ রাত ১০টা ৫৯ মিনিটে।
পেশাগতভাবে কার্টুনিস্ট হিসেবে পরিচিত মোরশেদ মিশু। ক্যামেরার সামনে অভিনয় করার চেষ্টা এবারই প্রথম। অভিজ্ঞতা ছিল রোমাঞ্চকর।

মিশু বলেন, ‘নুহাশ হুমায়ূন আমার পছন্দের নির্মাতাদের মধ্যে একজন। প্রথমবারেই তার সঙ্গে কাজ করতে পারাটা আমার জন্য সৌভাগ্যের। শুটিংয়ের সময় আমি একই সঙ্গে ভয় ও উত্তেজনায় ছিলাম। উন্মাদ ম্যাগাজিনে প্রথম যখন আমার আঁকা কার্টুন ছাপা হয়, দিনটি ছিল আমার জন্য স্মরণীয়। সে সময় সিনিয়র কার্টুনিস্টদের নামের পাশে নিজের নাম দেখে চমকে গিয়েছিলাম। এবারও যখন দেখলাম আফজাল হোসেন, চঞ্চল চৌধুরীরা এই সিরিজে অভিনয় করেছেন, তখন কার্টুনিস্ট থেকে অভিনেতা হয়ে ওঠার চেষ্টা করেছি।’

সিরিজটির অভিনেত্রী তাসলিমা হোসেন। ভৌতিক সিরিজটি নিয়ে প্রথম থেকেই আলাদা প্রস্তুতি নিয়েছেন। তাসলিমা বলেন, ‘পেট কাটা ষ সিরিজের লোকে বলে গল্পে কাজ করার অভিজ্ঞতা দুর্দান্ত। অসাধারণ লোকেশন ও গল্প দর্শকদের ভীতিকর একটি পরিবেশের মধ্যে নিয়ে যাবে। বেশ কিছু প্রতিভাবান মানুষের সংস্পর্শে এসে কাজটি করা আমার জন্য প্রথম থেকেই চ্যালেঞ্জিং ছিল। এটুকুই বলব, দর্শক নতুন কিছু পাবেন। লোকে বলে দেখে লোকে কী বলবে, সেই অপেক্ষায় রয়েছি।’

দূরে একটি নদী। তার দুই পাশে বড় পাহাড়। মাঝ দিয়ে দুজন লোক হেঁটে যাচ্ছে। পরক্ষণেই একটি মেয়ের হাসি পরিবেশকে ভারী করে দেয়। পরপরই এক নারী কণ্ঠে ভেসে আসে, ‘রাতের বেলায় চুল খুইল্যা কোথাও যাইতে হয় না, বাবা।’ সেই সময় ঘুরতে আসা মেয়েটি নৌকার মাঝিকে জিজ্ঞাসা করে, ‘বলেন তো, এই গ্রামে দেখার মতো কী আছে?’ নৌকার চালকের অদ্ভুত উত্তর, ‘এখানে কেউ ঘুরতে আসে না, আপনাগো মতো ভুল করে আসে।’ রহস্য ঘনীভূত হতে থাকে। এটিই ছিল ‘লোকে বলে’ পর্বের ৩০ সেকেন্ডের ট্রেলার, যা দর্শকদের নিয়ে যায় ধাঁধার এক জগতে।

সিরিজটির পরিচালক নুহাশ হুমায়ূনের কাছে প্রশ্ন ছিল, সিরিজের নাম কেন পেট কাটা ষ? নুহাশ বলেন, ‘মূর্ধন্য ষ-কে আমরা সবাই ছোটবেলা থেকে পেট কাটা ষ বলি। কেউ বাংলা ভাষা শিখলেই এই অক্ষরটাকে পেট কাটা ষ বলে ও চেনে। কিন্তু কেন? কোনো বাংলা বই বা কোথাও কিন্তু পেট কাটা ষ লেখা নেই। আমার কাছে মনে হয়েছিল, এই ভূতের গল্পগুলোও একই রকম। কোথাও লেখা নেই। পুরোটা লোককথা। কিন্তু মুখে মুখে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে গেছে। সেই গল্পগুলোই দর্শকদের কাছে তুলে ধরেছি।’

১২ মাসে ১২টি ওয়েব সিরিজ ও ১২টি ওয়েব ফিল্ম দিয়ে সাজানো হয়েছে চরকির বিশেষ সব আয়োজন। এর বাইরেও চরকি প্রতি সপ্তাহে নতুন আকর্ষণীয় কনটেন্ট ও বিশেষ দিবসের কনটেন্ট দিয়ে দর্শকদের কাছে পরিচিত হয়ে উঠছে। অল্প সময়েই এটি দর্শকদের কাছে হয়ে উঠেছে বাংলা ভাষার বিনোদনের ১ নম্বর প্ল্যাটফর্ম।

চরকির প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা রেদওয়ান রনি বলেন, ‘চরকি সব সময় চেষ্টা করে দর্শকদের মৌলিক ও ভিন্ন কনটেন্ট উপহার দেওয়ার। সেই ধারাবাহিকতায় এবার ভৌতিক বা হরর কনটেন্ট নিয়ে আসছে চরকি। এর আগে চরকির পর্দায় এমন গল্প দর্শক দেখেননি। আশা করছি, সিরিজ ষ দেখে দর্শক হতাশ হবেন না।’
দারাজ নিবেদিত ওয়েব সিরিজটির তৃতীয় পর্বে অভিনয় করেছেন মোরশেদ মিশু, সাঈদা তাসলিমা হাসান, গীতশ্রী চৌধুরী প্রমুখ। এর আগের প্রচারিত অ্যানথোলজি সিরিজ ষ–এর এই বিল্ডিংয়ে মেয়ে নিষেধ ও মিষ্টি কিছু পর্ব দুটি সাড়া ফেলে।