মালদ্বীপ থেকে ফিরে বড় ঘোষণা, চরকিতে প্রথমবার মিম
মালদ্বীপের নীল জলরাশি আর ছুটির আমেজ পেরিয়ে দেশে ফিরেই সুখবর দিলেন অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহা মিম। কাজ থেকে কিছুদিন বিরতিতে থাকলেও নতুন কোনো গল্পের খোঁজ যে থেমে ছিল না, সেটাই এবার স্পষ্ট হলো। দেশে ফিরেই জানা গেল, প্রথমবারের মতো ওটিটি প্ল্যাটফর্ম ‘চরকির’ একটি অরিজিনাল ফিল্মে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন তিনি। গ্ল্যামারের চেনা ছক ভেঙে ভিন্ন এক চরিত্রে মিমকে দেখার প্রস্তুতি শুরু হলো চরকিতে।
দেশের ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলোয় এখন নিয়মিতভাবেই যুক্ত হচ্ছেন বড় পর্দার তারকারা। সিরিজ ও অরিজিনাল ফিল্ম—দুই মাধ্যমেই পরিচিত মুখগুলোর উপস্থিতি বাড়ছে। সেই ধারাবাহিকতায় চরকির নতুন এই প্রজেক্টে যুক্ত হওয়াকে বিদ্যা সিনহা মিমের ক্যারিয়ারের একটি নতুন অধ্যায় হিসেবেই দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। কারণ, এই ফিল্মে তাঁকে দেখা যাবে তাঁর পরিচিত গ্ল্যামার ইমেজের বাইরে, এক ভিন্ন ধরনের চরিত্রে।
১৩ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে নাম চূড়ান্ত না হওয়া এই চরকি অরিজিনাল ফিল্মে চুক্তিবদ্ধ হন মিম। ছবিটি পরিচালনা করছেন নির্মাতা কাজী আসাদ। এর আগে তিনি চরকির জন্য নির্মাণ করেছিলেন আলোচিত সিরিজ ‘আধুনিক বাংলা হোটেল’, যেখানে অভিনয় করেছিলেন মোশাররফ করিম।
নতুন সিনেমাটি প্রসঙ্গে কাজী আসাদ জানান, এটি একটি আবেগনির্ভর গল্প। চলতি মাসেই সিনেমাটির শুটিং শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘এটা ইমোশনাল একটা গল্প। বিদ্যা সিনহা মিম আমাদের ইন্ডাস্ট্রির একজন পরীক্ষিত, মেধাবী ও গ্ল্যামারাস অভিনেত্রী। আমরা তাঁকে সাধারণত গ্ল্যামার লুকেই দেখি। কিন্তু মজাটা হচ্ছে—এই গ্ল্যামারের বাইরেও তাঁকে ভেঙে একেবারে নতুন ধরনের চরিত্রে কীভাবে উপস্থাপন করা যায়। আমরা সেই চ্যালেঞ্জটাই নিয়েছি।’
চরকির সঙ্গে এটি কাজী আসাদের দ্বিতীয় কাজ। প্রথমটি ছিল একটি সিরিজ, এবার অরিজিনাল ফিল্ম। চরকির সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি বলেন, ‘চরকির সঙ্গে কাজ করার সবচেয়ে বড় আনন্দ হচ্ছে স্বাধীনতা। নির্মাতা হিসেবে নিজের গল্পটা নিজের মতো করে বলার সুযোগ পাওয়া যায়। প্রথম কাজের অভিজ্ঞতা থেকে আশা করছি, ভবিষ্যতেও এই স্বাধীনতার জায়গাটা বজায় থাকবে।’
গতকাল ১৩ ডিসেম্বর দুপুরে চরকির কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তি স্বাক্ষর হয়। এ সময় চরকির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন প্ল্যাটফর্মটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেদওয়ান রনি। তিনি বলেন, ‘একটা অসাধারণ গল্পের মাধ্যমে বিদ্যা সিনহা মিমকে চরকিতে উপস্থাপন করতে পারছি—এটা আমাদের জন্যও আনন্দের। বড় পর্দায় মিম মানেই ধামাকা। এবার চরকিতে দর্শকেরা তাঁর কাছ থেকে তেমনই কিছু পেতে যাচ্ছেন। বিদ্যা সিনহা মিমকে চরকিতে স্বাগত এবং শুভকামনা।’
চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পর থেকেই ছবির স্ক্রিপ্ট নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন মিম। দীর্ঘদিন পর নতুন কোনো প্রজেক্টে যুক্ত হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গল্পই ছিল তাঁর কাজ বেছে নেওয়ার প্রধান কারণ। মিম জানান, ‘অনেকে জিজ্ঞেস করেন, কাজ কম করছি কেন। কাজের প্রস্তাব তো অনেক আসে, কিন্তু গল্প বা আনুষঙ্গিক বিষয়গুলো মিলছিল না। কাজী আসাদ যখন এই গল্পটা শোনালেন এবং আমি চরকিতে তাঁর আগের কাজ দেখলাম, তখনই মনে হলো—এই কাজটা করা দরকার।’
এই সিনেমায় তিনি কোন ধরনের চরিত্রে অভিনয় করবেন, সে বিষয়ে আপাতত কোনো আভাস দেননি মিম। শুধু ইঙ্গিত দিয়েছেন, গল্পে বড় চমক থাকবে এবং সেই চমক তৈরি হবে তাঁর চরিত্রের জার্নির মধ্য দিয়েই।
তিনি বলেন, ‘চরকি দেশের বড় একটি প্ল্যাটফর্ম। এখানকার সিরিজ ও ফিল্ম আমি নিয়মিত দেখি। তাদের কাজ ভালো হয়, ভালো লাগে। আশা করছি, চরকিতে আমার প্রথম কাজটা দর্শকদের ভালো লাগবে।’
এদিকে দর্শকদের জন্য আগাম সুখবরও দিয়েছেন মিম। তিনি জানিয়েছেন, ২০২৬ সালে তাঁর আরও কিছু নতুন কাজের ঘোষণাও আসবে। অর্থাৎ এই চরকি অরিজিনাল ফিল্ম দিয়েই শুরু হচ্ছে তাঁর নতুন কাজের অধ্যায়।
নাম চূড়ান্ত না হওয়া এই চরকি অরিজিনাল ফিল্মটির গল্প লিখেছেন মাহমুদুল হাসান। কাজী আসাদের সঙ্গে যৌথভাবে চিত্রনাট্য করেছেন আসাদুজ্জামান আবীর। ছবিটিতে এরই মধ্যে যুক্ত হয়েছেন আরও কয়েকজন গুণী অভিনয়শিল্পী। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের নামও ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছে চরকি কর্তৃপক্ষ।
সব মিলিয়ে, মালদ্বীপ ভ্রমণ শেষে বিদ্যা সিনহা মিমের এই নতুন ঘোষণা—চরকির অরিজিনাল ফিল্মে তাঁর অভিষেক—ওটিটি দর্শকদের জন্য নতুন এক অভিজ্ঞতার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে।