নিশোর কাছে হেরেও জিতে গেলেন জাদুকর

পুরস্কার হাতে আফরান নিশোতানভীর আহাম্মেদ

আফরান নিশো, ছোট পর্দার বড় তারকা। প্রেম থেকে থ্রিলার, সবকিছুতেই মানিয়ে যান, তাঁর অভিনয় সুচারু অভিনয়দক্ষতা পেয়েছে দর্শকদের নিরন্তর ভালোবাসা। তবে এখন আর ছোট পর্দাতেই থেমে নেই নিশো। গেল বছরই বড় পর্দায় অভিষেক ঘটে, ছবি মুক্তি পেতেই বাজিমাত। টিভি তারকা থেকে সোজা প্রথম সারির হিরোর তালিকায় চলে আসে নিশোর নাম। সেটি ‘সুড়ঙ্গ’ দিয়ে। ব্যক্তিগত জীবনে আফরান নিশোরও আছেন প্রিয় অভিনেতা, যাঁর সঙ্গে মনের মিল, কথার মিল খুঁজে পান, তিনি হচ্ছেন তুমুল জনপ্রিয় অভিনেতা প্রয়াত হুমায়ুন ফরীদি। বিভিন্ন সময়ে প্রিয় তারকাকে নিয়ে ব্যক্তিগত দর্শন, ভালো লাগা-ভালোবাসার কথা বলেছেন নিশো। প্রিয় অভিনেতার কষ্টের কথাও অবলীলায় স্মরণ করেছেন। শুক্রবার মেরিল–প্রথম আলো পুরস্কার-২০২৩ অনুষ্ঠানের মঞ্চেও প্রিয় অভিনেতার নাম উচ্চারণ করলেন শ্রদ্ধাভরে।
তারা ঝলমলে সন্ধ্যায় আফরান নিশো পেয়েছেন দুটি পুরস্কার। সীমিত কাহিনিচিত্র বিভাগে ‘পুনর্জন্ম অন্তিম পর্ব’ এবং পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘সুড়ঙ্গ’র জন্য পেয়েছেন সেরা অভিনেতার পুরস্কার।

দুটি পুরস্কারই প্রিয় অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদিকে উৎসর্গ করেন নিশো। এমন ঘটনা সচরাচর দেখা যায় না। কিন্তু সেটিই করলেন আফরান নিশো। হুমায়ুন ফরীদির প্রতি নিশোর এই ভালোবাসার সাক্ষী হয়েছিলেন অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত থাকা সবাই।

জুয়েল আইচ
খালেদ সরকার

নিশো যখন হুমায়ুন ফরীদিকে সম্মাননা উৎসর্গ করছেন, তখন দর্শক সারিতে বসে ছিলেন হুমায়ূন ফরীদির আরেকজন ভক্ত, বাংলাদেশের প্রখ্যাত জাদুশিল্পী জুয়েল আইচ। এই প্রজন্মের শিল্পীর এমন আচরণে নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি সবার প্রিয় এই জাদুকর। আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন ফরীদি–ভক্ত জুয়েল আইচ।
নিশোর এমন আচরণে এতটাই মুগ্ধ এবং অভিভূত হওয়ার কথা সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশেও দ্বিধা করেননি জুয়েল আইচ। জাদুশিল্পী লেখেন, ‘ভালোবাসার মৃত্যু নেই। হুমায়ুন ফরীদি আজও আমার বুকের মধ্যে নড়েচড়ে কথা বলে। আজ আমি একজন অসাধারণ তরুণ অভিনেতাকে আবিষ্কার করলাম যে ফরীদিকে আমার চেয়েও বেশি ভালোবাসে। পরাজিত হতে যে এত সুখ, তা আমি এই প্রথম অনুভব করলাম।’

সবার প্রিয় এই জাদুকর বলেন, ‘মেরিল–প্রথম আলো পুরস্কারের মহোৎসবে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা আফরান নিশো বারবার পুরস্কার নিতে মঞ্চে উঠছিল। প্রতিবার পুরস্কারটি হাতে নিয়ে উঁচু করে ধরে গভীর শ্রদ্ধাভরে চিৎকার করে সে তার পুরস্কারটি প্রত্যেকবার হুমায়ুন ফরীদির স্মৃতির প্রতি উৎসর্গ করছিল। অবিশ্বাস্য কাণ্ড! এমনটি জীবনে আমি এর আগে কখনো পৃথিবীর কোথাও দেখিনি। একজন প্রয়াত মহান শিল্পীর স্মৃতির প্রতি কতটা সশ্রদ্ধ ভালোবাসা থাকলে বর্তমান প্রজন্মের একজন শিল্পী হাজারো সেলিব্রিটির সামনে পাগলের মতো এ রকম কাজ করতে পারে তা ভাবাই যায় না।’

জুয়েল আইচ আরও লিখেছেন, ‘নিশো যতবার এই পবিত্র কাজটি করছিল, ততবার আমার চোখ ভিজে উঠছিল। ফরীদিকে আমি আজও পাগলের মতো ভালোবাসি। কিন্তু নিশো আমায় হারিয়ে দিয়ে জিতিয়ে দিল। এ সুখ আমি কোথায় রাখি!’ জাদুকরের এই পোস্টের পর নিশো বন্দনায় ভরে উঠেছে কমেন্ট বক্স।

ইলিয়াস কাঞ্চনের হাত থেকে পুরস্কার নিচ্ছেন নিশো
দিপু মালাকার

‘সুড়ঙ্গ’ সিনেমার পর আর কোনো সিনেমায় দেখা যায়নি অভিনেতা নিশোকে। তবে সম্প্রতি একটি নয়, এক জোড়া সিনেমায় অভিনয়ের কথা জানিয়েছেন। দুটি সিনেমার জন্য এসভিএফ আলফা-আই এন্টারটেইনমেন্ট লিমিটেডের সঙ্গে দুটি সিনেমার চুক্তি সেরেছেন নিশো। দুই সিনেমার মূল চরিত্রে থাকছেন নিশো। তবে ছবির নাম, ছবিটি কে পরিচালনা করছেন, তা এখনো খোলাসা করেনি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানটি। শিগগিরই আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেওয়া হবে। তবে এখন নিশো–ভক্তদের অপেক্ষার পালা, দেখা যাক ‘সুড়ঙ্গ’র পর কত বড় চমক নিয়ে আসছেন এই অভিনেতা?