শুটিংয়ের কর্মী ভেবে ফোন রাখতে দিলেন ফারিণ, এরপর যা হলো

তাসনিয়া ফারিণ। ফেসবুক থেকে

একটি ওয়েব ফিল্মের শুটিংয়ে গিয়ে ফোন হারালেন অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণ। গতকাল দুপুরে এফডিসির প্রশাসনিক ভবনের এক পাশে দাঁড়িয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলার সময় তাঁর মুঠোফোনটি চুরি হয়। এ ঘটনায় ওই দিনই সন্ধ্যায় তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন এই অভিনেত্রী।

আরও পড়ুন

জানা যায়, গতকাল বুধবার সকাল থেকে এফডিসিতে কাজল আরেফিন অমির ‘অসময়ে’ ওয়েব ফিল্মের শুটিং করছিলেন ফারিণ। দুপুরের পর খাবার বিরতি দেয় ইউনিট। ফারিণ বাসায় গিয়ে খেয়ে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সেই সময় বেশ কয়েকজন সংবাদকর্মী ওয়েব ফিল্মে তাঁর চরিত্র নিয়ে ফারিণের সঙ্গে কথা বলতে চান। অল্প সময়ের জন্য গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হন তিনি। ইউনিটের লোক ভেবে পাশে দাঁড়ানো একজনের হাতে ফোনটি দিয়ে কথা বলছিলেন। এক-দেড় মিনিটের মাথায় কথা শেষ হয়। পরে ওই লোককে আর পাওয়া যায়নি।

ফারিণ বলেন, ‘সাধারণত শুটিংয়ে প্রধান শিল্পীদের ইউনিটে লোকজন খোঁজখবর রাখেন, সমাদর করেন। ফোন হারানোর অনেকক্ষণ আগ থেকেই আমার পিছু পিছু ছিলেন ওই লোকটি। আমি ভাবছিলাম, হয়তো ইউনিটের লোক। সংবাদকর্মীদের সঙ্গে কথা বলার সময় সামান্য বৃষ্টিও হচ্ছিল। লোকটা আমার মাথায় ছাতাও ধরেছিলেন। আমি কথা বলছিলাম। লোকটি আমার কাছে ফোনটি চান। আমি ভাবছি, কথা বলার সময় ফোন আসতে পারে, ইউনিটের লোক ভেবে ফোনটি তাঁর হাতে দিয়ে কথা বলছিলাম। মনে হয় এক-দেড় মিনিটের মধ্যেই কথা বলা শেষ হয়। পরে ওই লোকটিকে আর খুঁজে পাইনি। সঙ্গে সঙ্গে ইউনিটের লোকজন এফডিসির বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে তাঁকে আর ধরতে পারিনি।’

তাসনিয়া ফারিণ
ছবি: ফেসবুক

ফারিণ আরও বলেন, ‘ফোন হারালে নতুন ফোন কেনা যাবে। কিন্তু অনেক মানুষের নম্বর আছে, সেগুলো নতুন করে সংগ্রহ করতে কষ্ট হবে। তা ছাড়া নিজের দৈনন্দিন জীবনের গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট আছে ফোনে। এটা নিয়ে চিন্তা করছি।’

প্রশাসনিক ভবনের সামনের এক পাশে কথা বলার সময় ফোনটি হারায়। ওই জায়গাটি দুটি সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় ছিল। সঙ্গে সঙ্গে প্রশাসনিক ভবনে সিসিটিভি ক্যামেরার নিয়ন্ত্রণকক্ষে গিয়ে ফুটেজে দেখা যায়—ফোনটি হাতে নেওয়ার পরপরই সংবাদকর্মীদের ভিড়ের মধ্য দিয়ে বেরিয়ে কড়ইতলা হয়ে অস্থায়ী মূল ফটক দিয়ে বের হয়ে যাচ্ছেন ওই ব্যক্তি।

আরও পড়ুন

ফারিণ জানান, ফোনটি হারিয়ে যাওয়ার পর এফডিসির কেউই খোঁজখবর নেননি। কাউকে খুঁজেও পাননি তিনি। এফডিসির মতো এমন সংরক্ষিত এলাকায় দিনদুপুরে এভাবে চোর ঢুকে চুরি করার বিষয়ে হতাশ এই অভিনেত্রী।

আফসোস করে বলেন, ‘এফডিসি নিরাপত্তাঘেরা শুটিংয়ের জায়গা। অথচ এখানে তারকারা এসে হয়রানি হচ্ছেন। তাহলে এটি কিসের শুটিংয়ের জায়গা? আমার তো মনে হচ্ছে না। এভাবে বাইরের লোকজন ঢুকে পড়ছে যখন-তখন। ফটকে এফডিসির নিরাপত্তাকর্মীরা বসা। তাহলে বাইরের লোক ঢুকছে কীভাবে? এখানে যাঁরা শুটিং করতে আসেন, তাঁদের জীবনেরও তো নিরাপত্তা নাই দেখছি।’

একজন শিল্পীর ফোন চুরির ঘটনায় এফডিসির দায়িত্বহীনতা, অবহেলা নিয়ে ফারিণ আরও বলেন, ‘আমার ফোন চুরি হলো। এফডিসির কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়ল না। কোনো অনুশোচনাও দেখলাম না। এফডিসির এক কর্মীকে বলতে শুনলাম, এখানে নাকি এমন প্রায়ই ঘটে। আমাকে জিডি করার পরামর্শ দিলেন। অথচ এত মানুষের মধ্যে একজন অভিনেত্রীর ফোন চুরি করে নিয়ে গেল, তাঁরা কোনো দায়িত্বই নিলেন না। অবাক করা ঘটনা।’

তাসনিয়া ফারিণ। ফেসবুক থেকে

ফারিণের অভিযোগ নিয়ে যোগাযোগ করা হয় এফডিসির সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) কে এম আমিনুল করিমের সঙ্গে। আজ রাত ৯টার দিকে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ বিষয়টি এখনো আমি জানি না।’ পরে এফডিসির সার্বিক নিরাপত্তা নিয়ে নিতে জানতে চাইলে কে এম আমিনুল করিম বলেন, ‘এফডিসিতে এত সমিতি, এসব সমিতির সদস্যের সঙ্গে প্রচুর মানুষ আসেন। প্রধান ফটকে নিরাপত্তাকর্মীরা সবাইকে চেক করতে পারেন না। এ ছাড়া অনেক সিনেমার অনেক এক্সট্রা শিল্পী আছেন, যাঁদের পরিচয় জানতে চাইলেও রাগারাগি করেন। সবচেয়ে বড় সমস্যা, এফডিসির পরিসর অনুযায়ী আমাদের নিরাপত্তাকর্মী কম, সব দিকে খেয়াল রাখা মুশকিল হয়ে পড়েছে।’