২৩-এ দেখা, ২৪–এ প্রেম, ২৫ সালে পরিচালক ও নায়িকার বিয়ে
স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমায় অভিনয়ের সূত্রেই পরিচয়। সেই পরিচয় থেকেই একসময় মন দেওয়া–নেওয়া শুরু হয়। তারপর একসময় বুঝতে পারেন বিয়েটা সেরে ফেলা যায়। কিন্তু কবে সেই বিয়ে? এ নিয়ে দীর্ঘদিন কথা হলেও সময়টা ঠিক হচ্ছিল না। পরে হঠাৎ করেই ২৬ অক্টোবর বিয়ে করেন পরিচালক স্বজন মাঝি ও অভিনেত্রী তাহুয়া লাভিব। তুরা নামে তিনি পরিচিত।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অভিনেত্রী তাহুয়া প্রথম আলোকে জানান, তাঁদের কমন ফ্রেন্ড ছিল। কিন্তু পরিচয়টা সেভাবে ছিল না। এর মধ্যে একদিন স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব পান। স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রটির নাম ‘প্রাচীন বংশের নিঃস্ব সন্তান’। এটি সৈয়দ শামসুল হকের গল্প থেকে নেওয়া। পরিচালক স্বজন মাঝি। এই অনুদানের স্বল্পদৈর্ঘ্যের শুটিং শুরু হয় ২০২৩ সালে। পরের বছর শুটিং শেষ হয়।
তাহুয়া বলেন, ‘আমাদের ২৩–এ পরিচয়, ২৪ সালে প্রেম, ২৫–এ হঠাৎ করেই বিয়ে করা (হাসি)। ছবি করতে গিয়েই প্রেম, শেষ হতে হতেই বিয়ে।’ কথাগুলো বলেই হাসতে থাকেন তিনি। ‘কারণ, এ বছর কয়েক দিন আগেই সিনেমাটির সব কাজ শেষ হয়। মন্ত্রণালয়ে স্ক্রিনিং হয়েছে স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবিটির। সব কাজ শেষেই আমরা বিয়ের সিদ্ধান্ত নিই। বিয়েতে দুই পরিবারের লোকজন ছিলেন,’ বলেন তাহুয়া।
কেন মনে হলো বিয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়? এমন প্রশ্নে এই অভিনয়শিল্পী বলেন, ‘শুরুতে শুটিংয়ে আমাদের প্রয়োজন ছাড়া কোনো কথাই হতো না। শুটিংয়ে খুবই ব্যস্ত থাকতে হতো। আমাদের আয়োজন ছিল বড়। পরে স্বজন মাঝিই আমাকে জানায়, শুটিংয়ে কথা হলো না। একদিন দেখা করে কথা বলবে। পরে দেখা হলো। আমাদের মধ্যে অনেক বিষয়ে মিল খুঁজে পেলাম। রাজনীতি, আদর্শগত দিকে মিল ছিল, সিনেমাসহ সব বিষয়েই আমাদের প্রচুর কথা হতো। এভাবেই ভালো লাগার শুরু।’
এ সময় তাহুয়া আরও বলেন, ‘ওর (স্বজন মাঝি) সঙ্গে প্রেমের পরে সে আমাকে অনেক দিক থেকে অনুপ্রাণিত করেছে। সে অনেক কেয়ারিং। আমার থার্ড ইয়ারের পড়ার সময় পরিচয়। থার্ড ইয়ার থেকেই আমার রেজাল্ট অনেক ভালো। সে সব সময় আমার পাশে ছিল। পথচলার জন্য এমন মানুষকেই দরকার মনে করেছি।’
পরিচালক স্বজন মাঝি জানান, তাঁর ‘প্রাচীন বংশের নিঃস্ব সন্তান’ চলচ্চিত্রের প্রি-প্রোডাকশনের সময় অভিনয়শিল্পী খুঁজছিলেন। তখন টিমের এক সদস্য বোষ্টমী চরিত্রের জন্য তাহুয়ার কথা বলেন। পরে এই পরিচালক দেখেন তাঁদের মধ্যে কোনো কথা না হলেও ফেসবুকে বন্ধু হিসেবে ছিলেন। ‘তুরা (তাহুয়া) আর আমার কমন ফ্রেন্ডও আছে কয়েকজন। তার কিছু ছবি ও অভিনয়ের কিছু দৃশ্য দেখে মনে হলো বোষ্টমী চরিত্রে তাকে নেওয়া যায়। পরে কাস্ট করে ফেলি।’
পরে শুরু হয় শুটিং। সেই সময়ের ঘটনাও স্বজনের কাছে বেশ মজার। সেই শুটিংয়ের দিনগুলোর অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করে তিনি বলেন, ‘শুটিংয়ে এত ব্যস্ত ছিলাম যে তুরার (তাহুয়া) সঙ্গে আসলে সেভাবে কথা হয়নি। এরপর একদিন দেখা করে অনেক আড্ডা হলো। ওর অভিনীত মঞ্চনাটক দেখলাম। সবকিছু মিলিয়ে একটা ভালো লাগা তৈরি হয়। আমরা একজন আরেকজনকে বুঝতে পারি। দুই বছর ধরে আমরা নিজেদের জেনেছি-বুঝেছি। পরে কয়েক দিন আগে একদম হঠাৎ করেই বিয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া।’
স্বজন মাঝি এর আগে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বানিয়ে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। ভবিষ্যতে তিনি সিনেমা বানাতে চান। এদিকে তাহুয়া অভিনয় ক্যারিয়ার শুরু হয় ‘গাঙকুমারী’ সিনেমার নায়িকা হিসেবে। পরে তিনি ‘বিল ডাকিনী’ সিনেমার নির্বাহী প্রযোজক হিসেবে কাজ করেছেন। দুটি সিনেমাতেই প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন মোশাররফ করিম। ‘দাঁড়কাক’সহ একাধিক কাজে তাঁকে দেখা গেছে। সামনে অভিনয় ও পরিচালনা নিয়েই থাকতে চান।