ঐশী এখন ডা. ফাতিমা তুয যাহরা এমবিবিএস
গানের মানুষ ঐশীর নতুন যাত্রা শুরু হলো। চিকিৎসক হওয়ার প্রথম ধাপ পার হলেন তিনি। এমবিবিএস পাস করেছেন ফাতিমা তুয যাহরা ঐশী। পড়াশোনার পরের ধাপগুলো পেরিয়ে মেডিসিনের চিকিৎসক হতে চান এই শিল্পী।
এমএইচ শমরিতা হসপিটাল অ্যান্ড মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেছেন ঐশী। ২০১৫ সালে মেডিকেলে ভর্তি হন ঐশী। আজ সোমবার ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে পাসের খবর জানিয়েছেন তিনি। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন বাবা–মা, শিক্ষক ও সংগীতাঙ্গনের সবার কাছে। ঐশী বলেন, ‘রেজাল্ট পাওয়ার পর খুব আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছি। এটা আমার সারা জীবনের পড়াশোনার ফসল।’ পরিবারের সদস্যরা ছাড়া কে কে অভিনন্দন জানিয়েছেন? ঐশী বলেন, ‘আমার দ্বিতীয় পরিবার গানবাংলা। বাবা–মায়ের পর আমি মুন্নী ভাবি (ফারজানা) ও তাপস ভাইয়াকে (কৌশিক হোসেন) খবরটা জানিয়েছি। তাঁরা আমার অভিভাবকের মতো। দুজনেই রেজাল্ট শুনে ভীষণ খুশি হয়েছেন। তাঁরা সব সময় পড়াশোনায় আমাকে উৎসাহ দিতেন।’
গানের পাশাপাশি মেডিকেলে পড়া কঠিন কাজ। শুরুতে সংগীতাঙ্গনের অনেকে ঐশীকে নিরুৎসাহিত করেছিলেন—পড়া আর গান একসঙ্গে হবে না। ঐশী বলেন, ‘নিজের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, কাজটা আমি করে দেখাব। যদিও দুটি কাজ একসঙ্গে করা ভীষণ কঠিন ছিল। সামনে যে বিশাল পথ বাকি, সেখানেও আমি গান ও ডাক্তারি দুটি একসঙ্গে চালিয়ে যেতে চাই।’
ঐশী জানান, তিনি সব সময় চেষ্টা করেছেন, গানের কারণে যেন পড়াশোনা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, শিক্ষকেরা যেন মনঃক্ষুণ্ন না হন। অতীত দিনগুলোর কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘অনুষ্ঠান করতে ঢাকার বাইরে যখন যেতাম, গাড়িতে বসে বই পড়তাম। দিনে অনুষ্ঠান শেষ করে রাতে ঢাকায় এসে পরীক্ষা দিতে বসেছি। প্রতিটি দিনই আমার জন্য ছিল একেক রকম গল্প।’
এ বছর নতুন কিছু গান প্রকাশ করতে গত বছরের প্রায় পুরোটা সময় পড়ালেখার পাশাপাশি প্রস্তুতি নিয়েছেন ঐশী। নিজের ইউটিউব চ্যানেল ঐশী এক্সপ্রেস ও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের চ্যানেলের জন্য বেশ কিছু নতুন গান করেছেন তিনি। সম্প্রতি নিজের চ্যানেলে প্রকাশ করেছেন ‘ভালোবাসা এমনই রোগ’। গানটির সুর ও সংগীতায়োজন করেছেন বাপ্পা মজুমদার, লিখেছেন সাহান কবন্ধ। এ ছাড়া আহমেদ হুমায়ুনের সুর ও সোমেশ্বর অলির লেখা সম্প্রতি প্রকাশিত ঐশীর আরেকটি গান ‘ঘোমটা পরা গান’।
২০০০ সালে রংপুর শিশু একাডেমিতে গান শেখা শুরু করেন ঐশী। ২০০৩ সালে নোয়াখালীতে মুহাম্মদ শরীফ ও পরে হাফিজ উদ্দীন বাহারের কাছে উচ্চাঙ্গ ও নজরুলসংগীতে তালিম নেন তিনি। ঢাকায় আসার পর ‘হৃদয় মিক্স থ্রি’ অ্যালবামের জন্য শিল্পী বাছাই প্রতিযোগিতার আয়োজন করে একটি মুঠোফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান। সেই প্রতিযোগিতার নানা ধাপ পেরিয়ে সেরা পাঁচে জায়গা করে নেন ঐশী। এই আয়োজনের সেরা প্রতিযোগীদের নিয়ে তৈরি এক অ্যালবামে ‘দখিন হাওয়া’ শিরোনামে একটি গানে কণ্ঠ দেন তিনি। সেই থেকে শুরু। ২০১৫ সালে প্রকাশিত হয় ঐশীর প্রথম একক অ্যালবাম ‘ঐশী এক্সপ্রেস’। ‘মায়া: দ্য লস্ট মাদার’ সিনেমার ‘মায়া’ গানটির জন্য ২০২০ সালে জাতীয় পুরস্কার লাভ করেন ঐশী।