
‘তুমি ছুঁয়ে দিলে মন, আমি উড়ব আজীবন’—নতুন প্রজন্মের শিল্পী শাকিলাকে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য এই গানটিই যথেষ্ট। ২০১৪ সালের শেষ দিকে ছুঁয়ে দিলে মন ছবির এই গানটি প্রকাশিত হয়। এরপর দেশে ও দেশের বাইরের শ্রোতাদের মনে জায়গা করে নেয় গানটি। এফএম রেডিওর টপচার্ট, টেলিভিশনে নাচের অনুষ্ঠান আর স্টেজ শোতে গানটির প্রতি সবার অন্য রকম আগ্রহ তৈরি হয়। গানটির জন্য যতটা আলোচনায় ছিলেন গায়ক তাহসান, ঠিক ততটাই অগোচরে থেকে গেছেন শাকিলা। পুরো নাম তাঁর শাকিলা সাকি। এই গানটি গেয়েই রীতিমতো বাজিমাত করেন তিনি। ৮ ফেব্রুয়ারি বিকেলে কথা হয় শাকিলার সঙ্গে। অনুষ্ঠান শেষে তিনি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় ফিরছেন। রাতে কথা বলবেন।
: কেমন আছেন?
: ভালো আছি। গত কিছুদিন আমার ওপর দিয়ে ঝড় বয়ে গেছে। মাসহ পরিবারের অনেকে অসুস্থ ছিল। হাসপাতালে ছুটোছুটি করতে হয়েছে। এখন অবশ্য সবাই ভালো।
: ‘ছুঁয়ে দিলে মন’ গানের সঙ্গে যুক্ত হলেন কীভাবে?
: গানটির সুরকার ও সংগীত পরিচালক সাজিদ সরকারের সঙ্গে আমি কয়েকটি গান করেছি। এই ভরসায় তিনি ছবির পরিচালক শিহাব শাহীনের কাছে আমার নাম প্রস্তাব করেন। শুরুতে শিহাব শাহীন দোটানায় ছিলেন। শেষ পর্যন্ত রাজি হন তিনি। গাওয়ার পর তো গানটি সবাই পছন্দ করেছে।
ছুঁয়ে দিলে মন ছবিতে আরও একটি গানে কণ্ঠ দেন শাকিলা সাকি। ওই গানে তাঁর সহশিল্পী শাওন। ‘চলে গেছ তুমি’ গানটির জন্যও প্রশংসা পান শাকিলা।
শাকিলা বললেন, ‘শুনেছি, পরের গানটি আমার গাওয়ার কথা ছিল না। পরিচালক চেয়েছিলেন অন্য কাউকে দিয়ে গাওয়াতে। সংগীত পরিচালকের কারণেই এই গানেও আমি কণ্ঠ দিই।’
‘ছুঁয়ে দিলে মন’ গানটি এখন অনেকের মুখে মুখে। গাওয়ার সময় এমনটা হবে ভেবেছিলেন? ‘গানের ধুনটা শুনেই কেন জানি মনে হয়েছিল, কিছু একটা অবশ্যই হবে। তখন আমরা নিজেরাও এ নিয়ে আলোচনা করছিলাম। তবে এতটা হবে, ভাবিনি।’ বললেন শাকিলা সাকি।
শাকিলা সাকি প্রথম চলচ্চিত্রে গান করেন ২০১১ সালে। ছবির নাম পাগল তোর জন্যরে। আর দ্বিতীয় ছবি ছুঁয়ে দিলে মন। বলা যায়, দ্বিতীয় ছবিতে গান গেয়ে বাজিমাত করেছেন তিনি। এই সাফল্য কেমন উপভোগ করছেন জানতে চাইলে শাকিলা বলেন, ‘দারুণ। স্বপ্ন ছিল চলচ্চিত্রের গান গাইব। আর দ্বিতীয় ছবিতে গেয়ে সাফল্য আসার ব্যাপারটা একজন শিল্পীর জন্য তো বিরাট সৌভাগ্যের। বাংলাদেশের আনাচকানাচে পৌঁছে গেছে এই গান। বন্ধুমহলে আমাকে নিয়ে সবাই খুব গর্ব করে। স্টেজ শো করতে গিয়ে হরহামেশাই প্রমাণ পাচ্ছি।’
ঢাকার উত্তরার প্রেমবাগান এলাকায় বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকেন শাকিলা। অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মকর্তা বাবার দুই ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে সবার ছোট তিনি। ছোটবেলা থেকেই গানের প্রতি শাকিলা সাকির ঝোঁক ছিল। গানের প্রতি প্রেম দেখে পরিবারের সবাই মনে করল তাঁকে দিয়ে গান হবে। শুরু হয় গানের তালিম। দীর্ঘ সময় ধরে তালিম নিয়েছেন শাস্ত্রীয় সংগীতে।
আট বছর ধরে গান নিয়েই আছেন শাকিলা সাকি। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজতত্ত্বে স্নাতক করেছেন। গত বছর ভালোবাসা দিবসে প্রকাশিত হয় শাকিলার প্রথম একক গানের অ্যালবাম শাকিলা সাকি: ভলিউম ওয়ান। এ ছাড়া এখন পর্যন্ত ডজন খানেক মিশ্র অ্যালবামে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি। এ বছর শেষ দিকে নিজের দ্বিতীয় একক অ্যালবামের কাজ শুরুর পরিকল্পনাও করে ফেলেছেন তিনি। বলেন, ‘প্রথম অ্যালবামে একজন সুরকার ও সংগীত পরিচালক কাজ করেছেন। এবার অবশ্য কয়েকজন থাকবেন। নতুন কিছু করার স্বপ্ন দেখছি।’