জন্মদিনে ঢাকায় সুমনকে নিয়ে তিন গান

ভক্তদের কাছে জীবনমুখী গানের শিল্পী হিসেবে পরিচিত ভারতীয় সংগীতশিল্পী কবীর সুমনের জন্মদিন উপলক্ষে ঢাকা থেকে তিনটি গান প্রকাশিত হয়েছে। এর মধ্যে ‘সুন্দরকেই মানি’ শিরোনামে একটি গান গেয়েছেন আসিফ আকবর, ‘সুমনের গান খাই’ গেয়েছেন শতাব্দী ভব এবং ‘যাচ্ছে জীবন’ গেয়েছেন কবীর সুমন নিজে।  

কবীর সুমন
ছবি: সংগৃহীত

গান প্রকাশ ও সুমনের জন্মদিন উপলক্ষে গায়ক আসিফ আকবর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘গ্রেটেস্ট কবীর সুমন, একজন জীবন্ত মহিরুহ। শ্রদ্ধেয় অগ্রজ কবীর সুমনের সঙ্গে আমার দেখা হয়নি কখনো, সবার মতো আমিও তাঁর একজন গুণমুগ্ধ কেউ। কথা হয়েছে কিছু, টেক্সট চালাচালি হয় পেশাদারত্বের কারণে। কবীর সুমনের গান আর ব্যক্তিত্ব নিয়ে এ দেশের মানুষের অনেক আগ্রহ। তিনি অনন্য ও সেরা। আজ শ্রদ্ধেয় কবীর সুমনের জন্মদিন। আজই মুক্ত হলো উনার লেখা, সুর ও সংগীতভাবনার গান—সুন্দরকেই মানি। দিনটি হোক আনন্দের। শুভ জন্মদিন শ্রদ্ধেয় অগ্রজ।’

অন্যদিকে ‘যাচ্ছে জীবন’ গানটি গেয়েছেন কবীর সুমন নিজেই। সুরও করেছেন তিনি। এই গানের কথা লিখেছেন এনামুল কবির সুজন। গানটি প্রসঙ্গে এক অডিও বার্তায় কবীর সুমন বলেন, ‘সুজন ও আমার একটি মাইলস্টোন মেলোডি হিসেবে বেঁচে থাকবে এটি।’ রূপকথা মিউজিকের ইউটিউব চ্যানেল ও এনটিভির ফেসবুকসহ আমাজান, স্পোটিফাই, অ্যাপেল স্টোর ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে গানটি থাকছে। গানটির ভিডিও নির্মাণ করেছেন ইয়ামিন ইলান এবং গানটিতে গীতিকবি এনামুল কবির সুজন, জিয়াউল হাসান কিসলুসহ অনেকে অভিনয় করেছেন।

‘সুন্দরকেই মানি’ শিরোনামে একটি গান গেয়েছেন আসিফ আকবর

কবীর সুমন ১৯৪৯ সালের ১৬ মার্চ ভারতের ওডিশায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পূর্ব নাম সুমন চট্টোপাধ্যায়। তাঁর বাবা সুধীন্দ্রনাথ এবং মাতা উমা চট্টোপাধ্যায়। বাংলাদেশের কিংবদন্তি গায়িকা সাবিনা ইয়াসমীনকে বিয়ে করার জন্য ২০০০ সালে ধর্মান্তরিত হয়ে নিজের নাম নিজেই রেখেছেন কবীর সুমন।

যাচ্ছে জীবন’ গানটি গেয়েছেন কবীর সুমন নিজেই

কবীর সুমন সাধারণত নিজের গান নিজেই লিখেন, নিজেই সুর করেন। শিল্পীজীবনের প্রথম দিকে তিনি ‘নাগরিক’ নামের কলকাতার একটি ব্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পরবর্তী সময়ে সুমন নিজেই একটা ব্যান্ড গঠন করেন, নাম দেন ‘সুমন দ্য ওয়ান ম্যান ব্যান্ড’। তিনিই সে ব্যান্ডের একজন এবং একমাত্র সদস্য। তাঁর কনসার্টে অন্য কোনো যন্ত্রশিল্পীর দরকার হয় না। একই সঙ্গে গিটার, হারমোনিকা, কি–বোর্ড বাজিয়ে নিজেই নিজের গান করেন।

ভারতীয় শিল্পী কবীর সুমন মূলত তাঁর জীবনমুখী গানের জন্যই ভক্তদের কাছে বেশি প্রিয়। ১৯৯২ সালে ‘তোমাকে চাই’ অ্যালবামের মাধ্যমে তিনি বাংলা গানে এক নতুন ধারার প্রবর্তন করেন। তাঁর স্বরচিত গানের অ্যালবামের সংখ্যা ১৫। সংগীত রচনা, সুরারোপ, সংগীতায়োজন ও কণ্ঠদানের পাশাপাশি গদ্যরচনা ও অভিনয়ের ক্ষেত্রেও তিনি স্বকীয় প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। প্রথম জীবনে রেডিও জার্নালিস্ট হিসেবে কাজ করেছেন ডয়চে ভেলেতে। কাজ করেছেন অল ইন্ডিয়া রেডিওতে। বন্ধু অঞ্জন দত্তের অনুরোধে অভিনয় করেছেন ‘রঞ্জনা আমি আর আসব না’সহ একাধিক ভারতীয় বাংলা চলচ্চিত্রেও। সৃজিতের ‘জাতিস্মর’ চলচ্চিত্রেও ছিল কবীর সুমনের উপস্থিতি। বহুদিন পর সেই সিনেমায় সুর-সংগীত করে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। অর্জন করেন ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও।