প্রিন্স মাহমুদের পঞ্চাশে পঞ্চকন্যা

ফাহমিদা নবী, ন্যান্‌সি, কনা, এলিটা, কোনাল ও প্রিন্স মাহমুদ
ফাহমিদা নবী, ন্যান্‌সি, কনা, এলিটা, কোনাল ও প্রিন্স মাহমুদ

একসময় ঈদ মানেই ছিল প্রিন্স মাহমুদের গান। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। ‘প্রিন্স মাহমুদ মিক্সড’ নামে নতুন অ্যালবাম নিয়ে শ্রোতাদের সামনে আসছেন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় এই গীতিকার, সুরকার ও সংগীত পরিচালক। আর এটি তাঁর জীবনের ৫০তম অ্যালবাম। এই অ্যালবামে এ সময়ের বাংলা গানের পঞ্চকন্যা কণ্ঠ দিয়েছেন। এই শিল্পীরা হলেন ফাহমিদা নবী, ন্যান্‌সি, কনা, এলিটা ও কোনাল।

এরই মধ্যে ‘প্রিন্স মাহমুদ মিক্সড’ অ্যালবামের গানগুলোতে কণ্ঠ দেওয়ার কাজ শেষ করেছেন শিল্পীরা। এখন চলছে মিক্স মাস্টারিংয়ের কাজ। গানের শিরোনামগুলো হচ্ছে ‘কত দূর’, ‘বাড়ি’, ‘কবি’, ‘ঘোর’, ‘ভালো থাকব’। ‘কত দূর’ ও ‘বাড়ি’ শিরোনামের গান দুটির কথা লিখেছেন যথাক্রমে ইব্রাহিম ফাতেমী ও জাহিদ আকবর।

প্রিন্স মাহমুদের সুরে এর আগে ফাহমিদা নবী গেয়েছেন ‘ঘুমাও’, ন্যান্‌সির ‘ভুবন ডাঙ্গার হাসি’, কনার ‘ছিপ নৌকো’, এলিটার ‘আসমানের তারা জানে’ গাইলেও এবারই প্রথম কোনাল তাঁর সুরে ও কথায় কোনো গান গেয়েছেন। কোনালের গাওয়া গানটির শিরোনাম ‘ভালো থাকব’।

আজ শুক্রবার দুপুরে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা হয় ফাহমিদা নবীর। প্রিন্স মাহমুদের সঙ্গে গান করার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে তিনি বললেন, ‘প্রিন্সের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা বরাবরই ভালো। সে প্রতি মুহূর্তে গান নিয়ে ভাবে। কিছুদিন আগে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছে। সেখানে সে লিখেছে, “ঈদ আসে, আসে নতুন গান। এখনো কেমন যেন ওলট-পালট লাগে, এসএসসির পরীক্ষার পূর্ব রাতগুলোর মতো।” আসলেই তাই, প্রিন্স যখন কাজ করে, পরীক্ষা মনে করেই করে।’

ফাহমিদা নবী আরও বলেন, ‘আমার সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে, যতক্ষণ না পর্যন্ত তার মনমতো হয়, প্রিন্স ততক্ষণ আদায় করার চেষ্টা চালিয়ে যায়। তার চাওয়া হচ্ছে, গানগুলো হয়তো খুবই সাধারণ, কিন্তু হতে হবে অসাধারণ। শেষ পর্যন্ত তেমনটাই হয়ে যায়। ওর কাজগুলো দেখার পর সবাই এ ব্যাপারে একমত হবেন।’

এর আগে প্রিন্স মাহমুদের সুরে ‘ভুবন ডাঙার হাসি’, ‘নিমন্ত্রণ’ শিরোনামের গানে কণ্ঠ দিয়েছিলেন ন্যান্‌সি। এবার ঈদে আবারও একটি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন ন্যান্‌সি। গানটির কথা লিখেছেন জাহিদ আকবর। ন্যান্‌সি বলেন, ‘এর আগে প্রিন্স ভাইয়ের সঙ্গে আমার গাওয়া গানগুলো শ্রোতাপ্রিয়তা পেয়েছে। আশা করছি, এবারের গানটিও শ্রোতাদের ভালো লাগার তালিকায় জায়গা করে নেবে।’

প্রিন্স মাহমুদের সুরে কনা গেয়েছেন ‘ঘোর’ শিরোনামের গানটি। এর আগে তিনি তাহসানের সঙ্গে দ্বৈতকণ্ঠে গেয়েছিলেন ‘ছিপ নৌকো’। কনা বলেন, ‘প্রিন্স মাহমুদ আমাদের সবার কাছে অন্য রকম একটা ব্যাপার, তাঁর কথা ও সুরে গান গাওয়ার জন্য উৎসুক হয়ে থাকি। সব গান তো আর একভাবে গাওয়া হয় না। প্রিন্স ভাইয়ের গান গাই আনন্দ থেকে।’

এলিটা বলেন, ‘আমি “কবি” শিরোনামের নামের চমৎকার একটি গান গেয়েছি। আমার কেন জানি মনে হয়েছে, এই গানের কথায় গীতিকবি ও সুরকার প্রিন্স মাহমুদের জীবনের একটি প্রতিচ্ছবি খুঁজে পাওয়া যাবে। একই সঙ্গে বিশ্বের কবিদের জীবনের একটি ধারণা দিয়েছেন তিনি। প্রিন্স ভাইয়ের গান গাইতে আমার এমনিতে অনেক কঠিন লাগে। সুরও অসাধারণ হয়েছে।’

এলিটা একটু আক্ষেপ করে বললেন, ‘প্রিন্স মাহমুদ অসাধারণ সব গান করেন। তাঁর কথা ও সুরের গানগুলোর মান অনেক উঁচু। কিন্তু যেসব প্রতিষ্ঠান থেকে তাঁর গানগুলো প্রকাশিত হয়, সেসব গানের সঠিক প্রচারণা হয় না। আমার মতে, প্রিন্স মাহমুদের এসব গানের ভিডিও বানিয়ে প্রচারণা যদি আরও বাড়ানো যায়, তাহলে এই গানগুলো মানুষের মনে আজীবনের জন্য জায়গা করে নেবে। এ ব্যাপারে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের আরও অনেক বেশি মনোযোগী হওয়া দরকার।’

কোনাল বলেন, ‘প্রিন্স মাহমুদ ভাইয়ের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা ম্যাজিক্যাল। ঈদ উৎসব মানেই প্রিন্স ভাইয়ের গান। তাঁর কথা ও সুরে এবারই প্রথম কাজ করেছি। এটা অসম্ভব ভালো লাগার অনুভূতি।’

প্রিন্স মাহমুদ বলেন, ‘আমি আমার মতো কাজ করে যাই। কিছু জেনে বা বুঝে গান বানাই না। কোনো হিট গানকে টার্গেট করি না যে এমন একটি গান করতে হবে। নিজের ভেতরের অনুভূতিগুলো কথা-সুরের মাধ্যমে প্রকাশ করি। সেটাই হয়তো নতুন হয়ে ধরা দেয় শ্রোতাদের কাছে। অনেক দিন ধরে কাজ করছি, এটাই আনন্দের। ভিডিওর চেয়ে গানের দিকেই খেয়াল বেশি করেছি।’

জি-সিরিজ থেকে ১১ জুন ‘প্রিন্স মাহমুদ মিক্সড’ অ্যালবামটির ডিজিটাল ও ফিজিক্যাল ভার্সন প্রকাশিত হবে।