বাংলা র‍্যাপার লাল মিয়া

ফকির লাল মিয়া
ফকির লাল মিয়া

বাংলাদেশের টিভি চ্যানেলে দেখানো হয়েছিল র‍্যাপ গান ‘বিচার চাই’। ধারালো রাজনৈতিক প্রতিবাদী বক্তব্যের কারণে সেটা নিয়ে শুরু হয় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। র‍্যাপারের নাম ফকির লাল মিয়া। ছোটবেলায় দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন নিউইয়র্কে।

দেশের মাটি ও মানুষের মায়া কাটেনি তাঁর। হিপহপ গানের সঙ্গে সিলেটের আঞ্চলিক বাংলায় গাইতে শুরু করেন নিজের লেখা গান। ২০০০ সালে নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত হয় লাল মিয়ার প্রথম মিক্সড অ্যালবাম ‘কোয়েস্ট ফর গ্লোরি’। এরপর বাংলাদেশের র‍্যাপার কাজীর তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান অগ্নিবীণা থেকে ২০১০ সালে প্রকাশিত হয় লাল মিয়ার প্রথম বাংলা অ্যালবাম ‘ছয় নং বিপদ–সংকেত’। সেই অ্যালবামের ‘সিলেটি র‍্যাপ’, ‘শোন ওগো সুন্দরী’, ‘লাল একলা এক শ’ গানগুলো তরুণদের আকর্ষণ করে। সেই গানগুলো সব হিপহপ। সিলেটের আঞ্চলিক বাংলায় সেসব গানে রাজনীতি থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত প্রেমের দ্বন্দ্বও স্থান পেয়েছে। ওই অ্যালবামের কয়েকটি গান নিয়ে তৈরি ভিডিও দেশের বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে দেখানো হয়। পরের বছর প্রকাশ হয় তাঁর দ্বিতীয় অ্যালবাম ‘কালাসাধক এক্সপ্রেস’।

ফকির লাল মিয়া
ফকির লাল মিয়া

লাল মিয়া জানালেন, লেখালেখির ব্যাপারে ছোটবেলা থেকেই উত্সাহিত করতেন তাঁর বাবা। স্মৃতি হাতড়ে লাল মিয়া বলেন, ছোটবেলায় বাবা তাঁকে ছড়া লিখে রাখার জন্য একটি নোটবই কিনে দিয়েছিলেন। সেটার ওপরে লেখা ছিল ‘আশার আলো’। সেদিনের সেই ‘আশার আলো’ প্রকৃত অর্থেই তাঁর লেখালেখির ক্ষেত্রে আশার আলো হয়ে ফুটেছিল। তাঁর মিয়ার কৈশোর কেটেছে সিলেটের সুনামগঞ্জে। সেখানকার সংগীত বিদ্যালয় খেলাঘরে ছিল নিয়মিত যাতায়াত। ছোটবেলায় তবলার তালে তালে কবিতা আবৃত্তি করতেন। শিশুকালেই কাজী নজরুল ইসলামের ‘লিচু চোর’ কবিতাটি আবৃত্তি করে শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছিলেন।
লাল মিয়া মনে করেন, হিপহপ র‍্যাপ গান হলো সত্যের প্রতিচ্ছবি। শ্রোতাদের সামনে অপ্রিয় সত্য উপস্থাপন করে তাঁদের ভেতরে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী মনোভাব জাগিয়ে তোলার জন্য এই গানই যথাযথ। অনেকে মনে করেন, র‍্যাপ গান শুধু তরুণ শ্রোতাদের জন্য। কিন্তু লাল মিয়া চান, তাঁর গান সব বয়সী, সব ধরনের শ্রোতা শুনুক। তাঁর ধারণা, বাঙালি এখনো র‍্যাপ গানকে এখনো স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করতে পারেননি। কিন্তু দিনবদলের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের মনও বদলাচ্ছে। বিশ্বসংগীতের শক্তিশালী ধারা র‍্যাপ একদিন বাংলাদেশেও গ্রহণযোগ্যতা পাবে।
শিগগিরই বাজারে আসছে লাল মিয়ার একেকটি গানের ভিডিও ‘পিরিত’। ভিডিও দেখার সাইট ইউটিউবে দেখা যাবে সেটা।