বিজয় সরকারের গানের সেই স্বাদ

‘এ পৃথিবী যেমন আছে, তেমনই ঠিক রবে, সুন্দর এই পৃথিবী ছেড়ে একদিন চলে যেতে হবে’, ‘পোষা পাখি উড়ে যাবে, সজনি গো আমি একদিন ভাবিনী মনে’, ‘ও তুমি জানো না জানো নারে প্রিয় তুমি মোর জীবনের সাধনা’—এমনই অসংখ্য জনপ্রিয় বিচ্ছেদ গানের স্রষ্টা কবিয়াল বিজয় সরকার। চারণ কবি হিসেবে পরিচিত এই সংগীত সাধক একজন বাউলশিল্পী, গীতিকার ও সুরকার। ১৯৮৫ সালের ৪ ডিসেম্বর গুণী এই চারণকবি পৃথিবী থেকে বিদায় নেন। নবীন শিল্পী সাইফুল ইসলামের কণ্ঠে বিজয় সরকারের গানের মূল গায়কির স্বাদ পেয়েছেন তাঁরই ছেলে কাজল অধিকারী। সাইফুল ইসলামের গান নিয়ে ঈদ উপলক্ষে বেঙ্গল ফাউন্ডেশন প্রকাশ করেছে ‘মর্মের মাঝে’ শিরোনামের নতুন অ্যালবাম।
এ সপ্তাহে চারটি অ্যালবাম প্রকাশ করেছে বেঙ্গল ফাউন্ডেশন। এর মধ্যে ব্যতিক্রম প্রয়াত শিল্পী সাইফুল ইসলামের অ্যালবাম। অ্যালবামটিতে যন্ত্রানুষঙ্গ পরিচালনা করেছেন মানব মুখার্জি। বিচ্ছেদ নয়, বিজয় সরকারের ইসলামি গান গেয়েছেন তিনি। গানগুলো হলো ‘নবী নামের নৌকা’, ‘কী যেন কী দিলে রে আল্লা’, ‘জ্বেলে মর্মের মাঝে’, ‘এবার ফেলে দিয়ে মায়ার বোঝা’, ‘নাম হারা ওই নদীর কিনারা’, ‘তুমি জান না রে বাঁশি’, ‘তোমার কাছে যখন থাকি’ এবং ‘তোমার একটি দিনের একটু পরশ’।
একেবারেই নিভৃতচারী শিল্পী ছিলেন সাইফুল ইসলাম। খুব বেশি তথ্য পাওয়া যায় না তাঁর সম্পর্কে। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের কাছেও তেমন তথ্য মেলেনি। স্থানীয়ভাবেই গান করতেন। একসময় হৃদরোগে আক্রান্ত হন। হৃদযন্ত্রে অস্ত্রোপচার হয়েছিল। শারীরিক দুর্বলতা তাঁর কণ্ঠ থামাতে পারেনি, যতক্ষণ না জীবন তাঁকে থামিয়েছে—এমন তথ্য দিলেন বিজয় সরকারের ছেলে কাজল অধিকারী। তিনি জানান, মৃত্যুর কিছুদিন আগে তাঁর কণ্ঠে কিছু গান রেকর্ড করে ধরে রাখার আয়োজন হয়েছিল। সে কাজে সহযোগিতা করেছিলেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের লোকসংগীত বিশেষজ্ঞ শুভেন্দু মাইতি ও তাঁর লালন আকাদেমি।
কাজল অধিকারী এখন থাকেন ভারতে। ফোনে কথা হলো তাঁর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘সাইফুলের গানে বাবার গানের মূল গায়কির স্বাদ পেয়েছি!’ দেশের আনাচকানাচে ঘুরে আসরে আসরে গান করতেন সাইফুল ইসলাম। তাঁর গান তেমন রেকর্ড করা হয়নি। ভারতে চিকিৎসাকালীন কিছু গান ধারণ করা হয়েছিল। সেগুলোই এবার প্রকাশ করা হলো।