৬২ সালে বিষ খাইয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল

করোনা–পরবর্তী জটিলতায় মৃত্যু হলো লতা মঙ্গেশকরের

মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে আজ রোববার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন লতা মঙ্গেশকর। মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসার পর তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কোভিড নেগেটিভ এলেও করোনা–পরবর্তী শারীরিক জটিলতা ঘিরে ধরেছিল তাঁকে। ৩০ দিনের লড়াইয়ের ইতি ঘটিয়ে সকাল ৮টা ১২ মিনিটে চিরঘুমে চলে গেলেন সুরসম্রাজ্ঞী। তাঁর মৃত্যুর সংবাদ নিশ্চিত করেছেন ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এন সান্থানাম। করোনা–পরবর্তী জটিলতায় মৃত্যু হলো লতা মঙ্গেশকরের। চিকিত্সক জানান, মাল্টি অর্গান ফেইলিউরের কারণেই মৃত্যু হলো লতা মঙ্গেশকরের।

৩০ দিনের লড়াইয়ের ইতি ঘটিয়ে সকাল ৮টা ১২ মিনিটে চিরঘুমে চলে গেলেন সুরসম্রাজ্ঞী

শুধু ভারতেরই নয়, কণ্ঠের জাদুতে তিনি জয় করেছেন সারা বিশ্বের সংগীতপ্রেমীদের মন। ভারতের অসংখ্য মানুষের কাছে এই শিল্পী রীতিমতো পূজনীয়। সাত দশকের বেশি সময় ধরে গানের সঙ্গে ছিলেন তিনি।

১৪টির অধিক ভাষায় গান করার অভিজ্ঞতা আছে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এই গায়িকার। ৮৭ বছর বয়সী এই উজ্জ্বলতম সংগীত তারকার জীবনে প্রাপ্তির শেষ নেই। কিন্তু বলা হয়, গুণী ব্যক্তিদের নাকি শত্রুরও অভাব হয় না। বলা বাহুল্য, লতা মঙ্গেশকরের ক্যারিয়ার যখন তুঙ্গে, তখন তাঁকে নিয়ে হিংসা করার লোকও কম ছিল না। কিন্তু শুনলে অনেকেই হয়তো অবাক হবেন, একবার এই শিল্পীকে হত্যার চেষ্টাও করা হয়েছিল। ভাগ্যক্রমে সে যাত্রায় বেঁচে গিয়েছিলেন ‘ভারতরত্ন’ লতা মঙ্গেশকর।
১৯৬২ সালে লতা মঙ্গেশকরকে বিষ খাইয়ে ধীরে ধীরে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল। যদিও আজ এত বছর পরও জানা যায়নি কে কিংবা কেন, লতাকে বিষ পান করিয়েছিলেন। ভারতের বর্ষীয়ান লেখিকা পদ্মা সাচদেবের ‘লতা মঙ্গেশকর: অ্যায়সা কাহা সে লাঁয়ু’ বইতে লতার জীবনের এই মারাত্মক ঘটনার কিছু অংশ বর্ণনা করা হয়েছে।

লতা মঙ্গেশকর
এএনআই

পদ্মা সাচদেব তাঁর বইতে লিখেছেন, ‘লতাজি (লতা মঙ্গেশকর) আমাকে এই ঘটনা বলেছিলেন। ১৯৬২ সালে একদিন খুব সকালে তিনি প্রচণ্ড পেটব্যথা অনুভব করেন এবং বেশ কয়েকবার বমি করেন। তাঁর ব্যথা এত তীব্র ছিল যে তিনি হাত-পা নাড়াতে পর্যন্ত পারছিলেন না। তাঁর বয়স তখন ৩৩ বছর।’ সে সময় চিকিৎসক জানান কেউ সম্ভবত বিষপ্রয়োগ করে লতা মঙ্গেশকরকে হত্যার চেষ্টা করছেন। এরপর অনেক দিন গায়িকা গরম খাবার খেতে পারতেন না। বরফের টুকরা মেশানো তরল খাবার তাঁকে খেতে হতো।

আরও পড়ুন

কিন্তু কে এভাবে বিষপ্রয়োগ করার চেষ্টা করেছিল? তা অবশ্য জানা যায়নি। কিন্তু এক সাক্ষাৎকারে লতা জানিয়েছিলেন যে তাঁর বাড়ির পরিচারিকাই নাকি এই ঘটনার পর হঠাৎ মাসমাইনে না নিয়েই কাজ ছেড়ে চলে যান। সেই সময় রোজ তাঁর বাড়িতে খ্যাতনামা গীতিকার মজরুহ সুলতানপুরী আসতেন প্রিয় গায়িকা লতার সঙ্গে আড্ডা দিতে। এমনকি লতার উদ্দেশে আনা স্যুপ আগে নিজে চেখে তারপরই খেতে দিতেন তাঁকে।

ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে
এএনআই

লতাকে নিয়ে লেখা অন্য একটি প্রতিবেদনে জানা যায়, এই ঘটনার পর হাসপাতালে টানা তিন দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করেছিলেন তিনি। ১০ দিন পার হওয়ার পর তাঁর অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়। সে সময় তিন মাস তিনি শয্যাশায়ী ছিলেন।

আরও পড়ুন