কথা, গানে দুই গুণীকে স্মরণ

জাতীয় সংগীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে দ্বিজেন্দ্রলাল রায় স্মরণে সংগীত পরিবেশন করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মাহমুদুল হাসানশিল্পকলা একাডেমির সৌজন্যে

‘গানের মধ্যে প্রবল হাস্যরসের মাধ্যমেও যে বার্তা দেওয়া যায়, তা তো সৃষ্টি করেছেন দ্বিজেন্দ্রলাল রায়। তিনি গেয়েছেন, ‘এমন চাঁদের আলো মরি যদি সেও ভালো’র মতো গান। এসব সুর সংরক্ষণে তিনি কিছুটা উদাসীন ছিলেন। দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের পুরোনো গান যেগুলো রেকর্ড করা আছে, সেগুলোর স্বরলিপি করা হলে তা সংরক্ষিত থাকবে। এ ছাড়া হাসির গানগুলো সংরক্ষণ করা হলে তরুণ প্রজন্মও আগ্রহ নিয়ে গাইবে।’

জাতীয় সংগীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে ‘স্মৃতি সত্তা ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বক্তারা। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত ‘স্মৃতি সত্তা ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক বাংলাদেশের বরেণ্য শিল্পী, সুরকার ও সংগীতজ্ঞ স্মরণে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। চারজন বরেণ্য ব্যক্তি দ্বিজেন্দ্রলাল রায়, খন্দকার নূরুল আলম, আব্বাসউদ্দীন আহমদ এবং উদয় শংকর রায় স্মরণে ‘স্মৃতি সত্তা ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়। সোমবার ছিল আয়োজনের প্রথম দিন।

সোমবার সন্ধ্যায় দ্বিজেন্দ্রলাল রায় এবং সুরকার খন্দকার নূরুল আলম স্মরণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে শেষ হয় ‘স্মৃতি সত্তা ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক আয়োজনের প্রথম দিন। দ্বিজেন্দ্রলাল রায়কে নিয়ে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শাহনাজ নাসরিন ইলা এবং খন্দকার নূরুল আলম স্মরণে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন সরকারি সংগীত কলেজের সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান কমল খালিদ। আলোচক হিসেবে বক্তব্য উপস্থাপন করেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (উন্নয়ন ও পরিকল্পনা) মো. শামীম খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের প্রভাষক মেহফুজ আল ফাহাদ এবং সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব রাজীব কুমার সরকার।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সচিব সালাউদ্দিন আহাম্মাদ বলেন, ‘এ ধরনের আয়োজনের মাধ্যমে আমরা বাংলা সাহিত্য ও ইতিহাস সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারি। বরাবরই বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি গুণী মানুষদের সৃষ্টি করা গান, নাটক ও সাহিত্যচর্চা এবং সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। মূলত পরবর্তী প্রজন্মের নিকট এবং সৃষ্টিকর্ম তুলে ধরাই আমাদের মূল লক্ষ্য।’

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত ‘স্মৃতি সত্তা ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক বাংলাদেশের বরেণ্য শিল্পী, সুরকার ও সংগীতজ্ঞ স্মরণে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়
সংগৃহীত

আলোচনা পর্বের পর শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দ্বিজেন্দ্রলাল রায় স্মরণে শুরুতেই সংগীত পরিবেশন করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুল হাসান। তিনি পরিবেশন করেন ‘সে কেন দেখা দিল’ ও ‘আজি নতুন রতনে’ গান।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ও সংগীতশিল্পী অণিমা রায় শোনান ‘ধনধান্য পুষ্পভরা’ ও ‘আজি এসেছি এসেছি’ গান। আফরোজা খান পরিবেশন করেন ‘মম মনের বিজনে’ ও আজি তোমার কাছে ভাসিয়া যায়’ এবং হিমাদ্রী রায় পরিবেশন করেন ‘বেলা বয়ে যায়’ গান।
দ্বিতীয় পর্বে খন্দকার নূরুল আলম স্মরণে সংগীতশিল্পী স্বরলিপি পরিবেশন করেন ‘এক বরষার বৃষ্টিতে ভিজে’, সাবরিনা নওশিন পরিবেশন করেন ‘জনম জনম গেল’ ও ‘ওই রাত জাগে (ডুয়েট গান); এম এ মোমিন পরিবেশন করেন ‘তুমি এমন জাল পেতেছো সংসারে’ ও ‘এ আঁধার কখনো যাবে না মুছে’ এবং শিল্পী সোহনুর রহমান কণ্ঠে পরিবেশিত হয় ‘চোখ যে মনের কথা বলে’ ও ‘ওই রাত জাগে’ (দ্বৈত গান)।