বিএনপির ঘোষিত মনোনয়ন তালিকায় তারকাদের মধ্যে কেউ আছেন কি
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি থেকে কয়েকজন তারকার মনোনয়ন পাওয়া নিয়ে গুঞ্জন শোনা গিয়েছিল। কয়েকজন তারকা পেশাগত কাজের পাশাপাশি নিজেদের নির্বাচনী এলকায় জনসংযোগও করেছেন। কথা বলেছেন সেখানকার মানুষের সঙ্গে। ২৩৭ আসনে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণার তালিকায় দেখা যায়নি কোনো তারকার নাম। একমাত্র কনকচাঁপা যে আসন থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী বলে শোনা গিয়েছিল, সেই আসনের প্রার্থী এখনো ঘোষণা করা হয়নি।
এর আগে শোনা গিয়েছিল নীলফামারী–৪ থেকে বেবী নাজনীন, সিরাজগঞ্জ–১ থেকে রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা এবং ঝিনাইদহ–৩ থেকে মনির খান মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। এর বাইরে চলচ্চিত্র অভিনয়শিল্পী আশরাফ উদ্দিন আহমেদ উজ্জ্বল, শিবা সানু, সংগীতশিল্পী আসিফ আকবর, নাজমুন মুনিরা ন্যান্সি বিএনপির হয়ে নির্বাচনে লড়তে পারেন—এমনটা শোনা গিয়েছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রকাশিত তালিকায় আলোচনায় থাকা কোনো তারকার নাম আসেনি।
কোন আসনে বিএনপির মনোনয়ন কে পাচ্ছেন, তার তালিকা প্রকাশ করেছে দলটি। জাতীয় সংসদের আসন ৩০০টি। এর মধ্যে কিছু আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি আর কিছু আসন জোটের শরিকদের জন্য রেখে দিয়েছে বিএনপি। আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
নীলফামারী–৪ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন সংগীতশিল্পী বেবী নাজনীন, কিন্তু পেয়েছেন আবদুল গফুর সরকার। ঝিনাইদহ–৩ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন মনির খান, কিন্তু পেয়েছেন মেহেদী হাসান। সিরাজগঞ্জ–১ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন কনকচাঁপা কিন্তু সে আসনে এখনো প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হয়নি।
সংগীতের পাশাপাশি বিএনপির রাজনীতিতে বেশ সক্রিয় সংগীতশিল্পী রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা। সিরাজগঞ্জ–১ আসনে দ্বিতীয়বার লড়বেন, এমনটাই শোনা গিয়েছিল। ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সিরাজগঞ্জের কাজীপুরে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সরবও হন এই সংগীতশিল্পী।
২০১৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো সিরাজগঞ্জ-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে প্রার্থী হয়েছিলেন কনকচাঁপা, তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা মোহাম্মদ নাসিম। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বাধায় কনকচাঁপা নির্বাচনী প্রচার চালাতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত এলাকায় যেতে না পেরে তিনি পার্শ্ববর্তী জেলা বগুড়ায় সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। কনকচাঁপা সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য। এ ছাড়া তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের (জাসাস) কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্বে আছেন।
সংগীতশিল্পী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহসাংস্কৃতিক সম্পাদক মনির খানও ছিলেন মনোনয়নপ্রত্যাশীদের তালিকায়। জাসাসের সাবেক এই নেতা পেশাগত ব্যস্ততা ছাড়া তাই বেশির ভাগ সময় নির্বাচনী এলাকা ঝিনাইদহ–৩ আসনের মানুষের সঙ্গে কাটাতেন।
বিএনপির সাংস্কৃতিক সম্পাদক ও চলচ্চিত্র অভিনয়শিল্পী আশরাফ উদ্দিন আহমেদ উজ্জ্বল। ছাত্রজীবন থেকে তিনি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তিনিও নির্বাচনে লড়তে পারেন, এমনটা শোনা গিয়েছিল। তবে আজ সোমবার দুপুরে কথা প্রসঙ্গে উজ্জ্বল বলেন,‘চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক, কলাকুশলীসহ এ দেশের আপামর মানুষের ভালোবাসায় নায়ক হয়েছি। আমি রাজনীতিও করেছি। তবে রাজনীতির মাধ্যমে এমপি হব, মন্ত্রী হব—এমন লক্ষ্য কখনোই আমার ছিল না। এখন আমার দল যদি মনে করে, আগামী নির্বাচনে আমার কনটেস্ট করা দরকার, তাহলে আমি করব। দল যদি মনে করে, দলে উজ্জ্বলের যে দায়িত্ব, তা ঠিকঠাক পালন করছে, ভবিষ্যতে তাকে পার্লামেন্টে নেওয়ার জন্য যেসব যোগ্যতা থাকার দরকার, তা যথাযথ আছে, তাহলে আমি সেই দায়িত্বও ঠিকঠাকভাবে পালন করতে সব সময় প্রস্তুত।’
বিনোদন অঙ্গনের মানুষের নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়টি আওয়ামী লীগ আমলেও ছিল। অনেক তারকা রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। কেউ কেউ সংসদ সদস্য হয়েছেন, মন্ত্রিত্বও পেয়েছেন।