আনন্দধ্বনি জাগানোর আহ্বান
“আনন্দধ্বনি জাগাও গগনে।/ কে আছ জাগিয়া পুরবে চাহিয়া,/ বলো ‘উঠ উঠ’ সঘনে গভীরনিদ্রাগমনে।” গীতবিতানের স্বদেশ পর্বের এই গানের নৃত্যগীতের মধ্য দিয়ে শুরু হলো সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানটের দুই দিনব্যাপী রবীন্দ্র-উৎসব ১৪৩০। রবীন্দ্রজয়ন্তী উপলক্ষে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ছায়ানট মিলনায়তনে শুরু হয় এ আয়োজন।
সম্মেলক নৃত্যগীতের পর ছিল ছায়ানটের যুগ্ম সম্পাদক জয়ন্ত রায়ের কথক। তিনি বলেন, বাঙালির জীবনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কত রকম করে অপরিহার্য সেই কথা। উঠে এল, ভয়কে অভয়ের মধ্য দিয়ে জয় করতে হয়, সেই শিক্ষা শিখিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ। রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টিকর্মে আনন্দে বাঁচার প্রেরণা রয়েছে সে বক্তব্যও শোনা গেল তাঁর কথনে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মজয়ন্তীর অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে আনন্দধ্বনি জাগানোর আহ্বানের সঙ্গে আসে অঙ্গীকারের কথাও। ‘আমি হব না তাপস, হব না, হব না,/ যেমনি বলুন যিনি। আমি হব না তাপস নিশ্চয় যদি/ না মেলে তপস্বিনী’।
‘প্রতিজ্ঞা’ কবিতা আবৃত্তির পর শুরু হয় ছায়ানাটের বিশেষ পরিবেশনা পর্ব ‘তুমি আমার চিরকালের’। ২৫টি উপস্থাপনা নিয়ে এ পর্বের শুরুতে পরিবেশন হলো ‘তোমার প্রেমে ধন্য কর যারে’ সম্মেলক গান। এরপর রবীন্দ্রসংগীতের সৃষ্টিধারায় বন্ধু উপবিভাগের গান নিয়ে পাঠ করলেন জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়।
ধারাবাহিকভাবে কখনো একক গান, কখনো পাঠ, নৃত্য, আবৃত্তি পরিবেশিত হলো মঞ্চে। ‘শুধু তোমার বাণী নয় গো, হে বন্ধু, হে প্রিয়’ অথবা ‘তোমায় নতুন করে পাব বলে’ সংগীত পরিবেশনের সময় মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে রইলেন শ্রোতারা।
একক গানে লাইসা আহমেদ লিসা, তানিয়া মান্নান, মহুয়া মঞ্জরী সুনন্দার মতো গেয়েছেন কয়েক প্রজন্মের শিল্পী। গানের মাঝে মাঝে কয়েকটি পর্বে পাঠ ছিল শিল্পী জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়ের।
অনুষ্ঠানে ছায়ানটের শিল্পী ছাড়াও অংশ নিয়েছেন আমন্ত্রিত শিল্পী ও দল। ছায়নাটের দুই দিনের রবীন্দ্র–উৎসব ১৪৩০–এ সারা দেশ থেকে দুই শতাধিক শিল্পী অংশ নিচ্ছেন। ছায়ানট মিলনায়তনে আয়োজিত সবার জন্য উন্মুক্ত এই উৎসব আজ মঙ্গলবারও শুরু হবে সন্ধ্যা সাতটায়।