রুনা লায়লার সঙ্গে গাওয়া, আকাশের চাঁদ হাতে পাওয়া
উপমহাদেশের প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী রুনা লায়লার গানের জীবন ৬০ বছরের। অন্যদিকে বাপ্পা মজুমদারের তাঁর অর্ধেক। এর আগে রুনা লায়লার জন্য গানের সুর ও সংগীত পরিচালনা করেছিলেন বাপ্পা মজুমদার, শফিক তুহিনের লেখা সেই গানটি একসঙ্গে গেয়েছিলেন সাবিনা ইয়াসমীনও। ১২ বছর আগের সেই গানটি ছিল দেশাত্মবোধক। সেই গানের পর এবার শুধু রুনা লায়লার জন্য নতুন একটি গানের সুর ও সংগীত পরিচালনা করেন।
‘অনায়াসে’ শিরোনামের এ গানটি তৈরির পর রুনা লায়লা শোনেন। এরপর তিনিই প্রস্তাব দেন গানটি দ্বৈতকণ্ঠে গাইবার। রুনা লায়লার কাছ থেকে এমন একটি প্রস্তাব পাওয়াকে আকাশের চাঁদ হাতে পাওয়ার সঙ্গে তুলনা করেছেন বাপ্পা মজুমদার। গত বৃহস্পতিবার রাতে গানটি প্রসঙ্গে কথা হয় রুনা লায়লা ও বাপ্পা মজুমদারের সঙ্গে।
‘অনায়াসে’ শিরোনামের গানটিতে কণ্ঠ দিতে গত বুধবার বাপ্পা মজুমদারের বনানীর স্টুডিওতে যান রুনা লায়লা। সৈয়দ গালিব হাসানের লেখা এই গানের রেকর্ডিং সেদিনই সম্পন্ন হয়। রুনা লায়লা বলেন, ‘খুব সুন্দর একটি গান। সংগীতায়োজনও অসাধারণ। গালিবের লেখাটাও আমার ভীষণ মনে ধরেছে। বাপ্পার সঙ্গে এর আগে একভাবে কাজ করা হয়েছিল, এবার হলো ভিন্নভাবে। এই গানটির কাজ করতেও আমার ভীষণ ভালো লেগেছে। প্রথমবারের মতো আমার ও বাপ্পার গাওয়া দ্বৈতকণ্ঠের গান। এই গানটি গেয়ে আমিও খুব তৃপ্তি পেলাম।’
গানটি নিয়ে কথা বলার শুরুতে বাপ্পা মজুমদার শোনালেন পেছনের গল্প। বললেন, ‘এই গানটি রুনা ম্যামের একক গান হিসেবে তৈরি করেছিলাম। আমরা যে গজলের প্রজেক্ট করছি, সেটারই একটা গান। গানটা রুনা ম্যামকে পাঠানোর পর তিনি আমাকে টেক্সট করে বললেন, গানটা খুব ভালো হয়েছে। এরপর তিনি প্রস্তাব দিলেন, “এক কাজ করো, তুমিও আমার সঙ্গে এই গানটা গাও।” আমি শুনে কী বলব বুঝে উঠতে পারছিলাম না। সত্যিকার অর্থে এটা আমার জন্য আকাশের চাঁদ হাতে পাওয়ার মতো বিষয়। আমি কাজটি করতে গিয়ে আরও ভালোভাবে উপলব্ধি করতে পেরেছি, ওনার বিশালত্বের ব্যাপারটা।’
‘অনায়াসে’ গানটির কাজ করতে গিয়ে রুনা লায়লা দারুণ অনুপ্রাণিত করেছেন বাপ্পা মজুমদারকে। তিনি বললেন, ‘তাঁর মতো একজন কিংবদন্তি যখন আমাকে এভাবে উৎসাহ দেন, সেটা নিয়ে বলার অপেক্ষা রাখে না।’
রেকর্ডিং সময়ের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বাপ্পা বলেন, ‘আমি তো রেকর্ডিংয়ের সময় নার্ভাস ছিলাম। একপর্যায়ে আমি তাঁকে বলেছিলামও, “ম্যাম আমি কিন্তু ভীষণ নার্ভাস।” এরপর পুরো আবহটা তিনি আমাকে আরও সহজ করে দিয়েছেন। বলেছেন, “কোথায় কী লাগবে আমাকে বলো।” তিনি যে কত বড় মাপের একজন শিল্পী, তাঁর এসব ঘটনায় নতুন করে উপলব্ধি হলো। আমার কাছে সবচেয়ে বড় প্রাপ্তির বিষয় হচ্ছে, উনি গানটা গেয়ে খুশি হয়েছেন। আমি এই অসম্ভব সম্ভব করার পুরো কৃতিত্ব দিতে চাই গীতিকার গালিব হাসান ভাইকে। কারণ, তিনিই প্রথম রুনা ম্যামকে দিয়ে গানটি গাওয়ানোর এই স্বপ্ন ও সাহসটা দেখেছিলেন। শুরু থেকে তিনিই রুনা ম্যামের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। এরপর রুনা ম্যাম গান শুনে রাজি হয়েছেন, গাইবার সম্মতি দিয়েছেন।’