১ বিলিয়ন ডলারের মালিক, কীভাবে এত ধনী বিয়ন্সে
বিশ্বখ্যাত পপ তারকা বিয়ন্সে এখন বিলিয়নিয়ার। ফোর্বসের তথ্য অনুযায়ী, তিনি সংগীতশিল্পীদের মধ্যে পঞ্চম ব্যক্তি, যিনি এই ঐতিহাসিক মাইলফলকে পৌঁছালেন। এই তালিকায় বিয়ন্সের আগে আছেন তাঁর স্বামী জে–জেড, পাশাপাশি টেইলর সুইফট, ব্রুস স্প্রিংস্টিন ও রিয়ানা। সংগীতজগতের এই অভিজাত ‘বিলিয়নিয়ার ক্লাব’-এ যুক্ত হলেন বিয়ন্সেও।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অভূতপূর্ব সাফল্য
গত কয়েক বছরে বিয়ন্সের ক্যারিয়ার একের পর এক বড় সাফল্যের সাক্ষী হয়েছে। ২০২৩ সালে তাঁর রেনেসাঁ ওয়ার্ল্ড ট্যুর বিশ্বজুড়ে প্রায় ৬০০ মিলিয়ন ডলার আয় করে।
এরপর ২০২৪ সালে তিনি প্রকাশ করেন কান্ট্রি ঘরানার অ্যালবাম ‘কাউবয় কার্টার’। এই অ্যালবামই পরবর্তী সময়ে ২০২৫ সালে বিশ্বের সর্বোচ্চ আয়কারী কনসার্ট ট্যুরের ভিত্তি হয়ে ওঠে।
নিজস্ব প্রতিষ্ঠান পার্কউড এন্টারটেইনমেন্ট
২০০৮ সালে বিয়ন্সে প্রতিষ্ঠা করেন নিজের বিনোদন প্রতিষ্ঠান পার্কউড এন্টারটেইনমেন্ট। ফোর্বসের তথ্য অনুযায়ী, এই প্রতিষ্ঠানই বিয়ন্সের পুরো ক্যারিয়ার পরিচালনা করে এবং তাঁর সব সংগীত, তথ্যচিত্র ও কনসার্ট প্রযোজনা করে।
ফোর্বস জানায়, পার্কউড অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রযোজনার বড় অংশের খরচ নিজে বহন করে, যাতে পরবর্তী মুনাফার বড় অংশ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। এর ফলে বিয়ন্সে অন্য শিল্পীদের তুলনায় অনেক বেশি আর্থিক সুবিধা আদায় করতে পেরেছেন।
‘কাউবয় কার্টার’ ট্যুরে শতকোটি ডলারের ব্যবসা
ব্যবসাবিষয়ক প্রকাশনাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, ‘কাউবয় কার্টার’ ট্যুরে শুধু টিকিট বিক্রি থেকেই আয় করেছে ৪০০ মিলিয়নের বেশি ডলার।
এ ছাড়া কনসার্টে বিক্রি হওয়া পণ্যসামগ্রী থেকে আয় হয়েছে আরও প্রায় ৫০ মিলিয়ন ডলার, যা ফোর্বসের অনুমান।
পুরো ট্যুরটির প্রযোজনা যেহেতু পার্কউড নিজেই করেছে, তাই বিয়ন্সে তুলনামূলকভাবে উচ্চ মুনাফা নিশ্চিত করতে পেরেছেন।
ফোর্বসের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৫ সালে কনসার্ট ট্যুর, সংগীত ক্যাটালগ থেকে আয় এবং বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সঙ্গে চুক্তি মিলিয়ে কর পরিশোধের আগে বিয়ন্সের মোট আয় ছিল প্রায় ১৪৮ মিলিয়ন ডলার। এর ফলে তিনি ২০২৫ সালে বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া সংগীতশিল্পী হন।
সিনেমা, স্ট্রিমিং ও বিশেষ পারফরম্যান্স থেকেও বড় আয়
একক শিল্পী হিসেবেও বিয়ন্সের আয়ের উৎস ছিল বহুমুখী। ফোর্বস জানায়—২০১৯ সালের তথ্যচিত্র ‘হোমকামিং: আ ফিল্ম বাই বিয়ন্সে’–এর জন্য তিনি নেটফ্লিক্স থেকে আনুমানিক ৬০ মিলিয়ন ডলার পেয়েছিলেন।
২০২৪ সালে নেটফ্লিক্সের প্রথম ক্রিসমাস ডে এনএফএল ম্যাচের হাফটাইম শোতে পারফর্ম করার জন্য তিনি পেয়েছিলেন আরও ৫০ মিলিয়ন ডলার।
এর আগের বছর তিনি নিজের ‘রেনেসাঁ ওয়ার্ল্ড ট্যুর’ নিয়ে একটি কনসার্ট ফিল্ম নির্মাণ করেন, যা সরাসরি এএমসি থিয়েটার চেইনের মাধ্যমে পরিবেশিত হয়। ছবিটি বিশ্বজুড়ে প্রায় ৪৪ মিলিয়ন ডলার আয় করে, যার প্রায় অর্ধেকই বিয়ন্সের ঝুলিতে যায়।
সংগীতের বাইরেও ব্যবসায়িক দূরদর্শিতা
এসব আয় ও বিনিয়োগ মিলিয়েই বিয়ন্সে আজ সংগীতশিল্পী থেকে বিশ্বের প্রভাবশালী ধনকুবেরদের একজন। শিল্পীসত্তার পাশাপাশি প্রযোজক ও উদ্যোক্তা হিসেবেও তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
ফোর্বসের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, এই সম্মিলিত আয়ই বিয়ন্সেকে পৌঁছে দিয়েছে এক বিলিয়ন ডলারের ক্লাবে—যা সংগীত ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন।
ভ্যারাইটি অবলম্বনে