যে গানগুলোর জন্য কেকে’কে মনে রেখেছে মানুষ

গত বছরের এই দিনে ৫৪ বছর বয়সে পৃথিবীর ভ্রমণ শেষ হয়েছে ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় গায়ক কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ ওরফে কেকে। মালয়ালি মা-বাবার ঘরে দিল্লিতে জন্ম কেকের।ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে

ব্যতিক্রমী কণ্ঠস্বরের জাদুতে হিন্দি গানের শ্রোতাদের মনে তৈরি করেছিলেন আলাদা স্থান। সমকালীন হিন্দি চলচ্চিত্রের প্রথম সারির পুরুষ কণ্ঠগুলোর অন্যতম কেকে। নব্বইয়ের দশকে পেশাদার গানের জগতে পথচলা শুরু করা এই শিল্পী কয়েক প্রজন্মের শ্রোতাদের তাঁর কণ্ঠের জাদুতে মাতিয়ে রেখেছেন। আজ এই জনপ্রিয় গায়কের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী।

গত বছরের এই দিনে ৫৪ বছর বয়সে পৃথিবীর ভ্রমণ শেষ হয়েছে ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় গায়ক কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ ওরফে কেকে। মালয়ালি মা-বাবার ঘরে দিল্লিতে জন্ম কেকের। বেড়ে ওঠা ও পড়াশোনা নয়াদিল্লিতে। ক্যারিয়ারের শুরুতে হোটেলের কাজে যুক্ত ছিলেন কেকে। গানের স্বপ্ন সত্যি করতেই ১৯৯৪ সালে মুম্বাইতে যান। জীবনের শেষ কনসার্ট করেছেন কলকার নজরুল মঞ্চে। তার আগে তিনি শ্রোতাদের উপহার দিয়ে গেছেন অসাধারণ সব গান।
বলিউডের প্লেব্যাকের আগে সাড়ে তিন হাজার জিঙ্গেলে কণ্ঠ দিয়েছেন। ১৯৯৯ সালে ক্রিকেট বিশ্বকাপের সময় ভারতীয় ক্রিকেট দলের জন্য ‘জোশ অব ইন্ডিয়া’ গেয়েছেন তিনি। জিৎ গাঙ্গুলি, প্রীতম চক্রবর্তী, রাজেশ রোশন, সন্দেশ শান্দিলিয়া, বিশাল শেখর, ইসমাইল দরবার, নাদিম-শ্রাবণ, সাজিদ-ওয়াজিদ, শান্তনু মৈত্রের মতো জনপ্রিয় ও গুণী সংগীত পরিচালকদের সুরে গেয়েছেন কেকে। হিন্দির পাশাপাশি তামিল, তেলেগু, কন্নড়, মালয়ালম ও মারাঠি ছবিতেও গেয়েছেন তিনি।

কেকে চলে যাওয়ার এক বছর পেরিয়ে গেছে। তবে বেশ কিছু জনপ্রিয় হিন্দি গানের সূত্রে ভক্ত, শ্রোতারা তাঁকে মনে রেখেছেন। কেকের প্রথম প্রয়াণ দিবসে তাঁর সেরা কিছু গানের তালিকা রইল:

‘তাড়াপ তাড়াপ’ (হাম দিল দে চুকে সানাম): ইসমাইল দরবারের সংগীত পরিচালনায় কেকের কণ্ঠে এই গানের জাদু কে ভুলতে পারে। সালমান খান ও ঐশ্বরিয়া রাইয়ের ছবির অন্যতম জনপ্রিয় গান এটি। এক সাক্ষাৎকারে গায়ক বলেছিলেন, এটি তাঁর ক্যারিয়ারের অন্যতম ‘কঠিন’ গান।

কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ
ইনস্টাগ্রাম

‘কেয়া মুঝে প্যায়ার হ্যায় (ও লমহে): রোমান্টিক এই গানে প্রাণ ঢেলেছিলেন কেকে। ২০০৬ সালে মুক্তি প্রাপ্ত মোহিত সূরি পরিচালিত কঙ্গনা রনৌত ও শাইনি আহুজা অভিনীত ছবির গান এটি।
‘খোদা জানে’ (বাচনা অ্যা হাসিনো): বিশাল শেখরের সংগীত পরিচালনায় অন্বিতা দত্ত গুপ্তনের লেখা এই গান ২০০৮ সালের ছবির গান। কেকে ও শিল্পা রাওয়ের কণ্ঠে এই গান তরুণ শ্রোতাদের খুব পছন্দের।

‘আঁখো মে তেরি’ (ওম শান্তি ওম): ২০০৭ সালে মুক্তি পাওয়া শাহরুখ খানের ছবির এই গান বোধ হয় সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা লাভ করে। দীপিকা পাড়ুকোনের প্রথম ছবির সেই বিখ্যাত লুক এই গানে প্রকাশ পায়। বিশাল শেখরের তৈরি, বিশাল দাদলানির লেখা এই গান আজও সমান জনপ্রিয়।

আলভিদা (লাইফ ইন এ... মেট্রো): ২০০৭ সালে মুক্তি পায় এই ছবি। সেই ছবির বিখ্যাত গান ‘আলভিদা’ যেন কেকের মৃত্যুর পর আরও বেশি করে মানুষের মনে গেঁথে গেছে।

দিল ইবাদত (তুম মিলে): কেকের রোমান্টিক গানের তালিকায় আরও এক গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন। ২০০৯ সালে ইমরান হাশমি ও সোহা আলী খান অভিনীত ছবির বেশ জনপ্রিয় গান এটি।
জারা সা (জান্নাত): শ্রোতাদের প্রিয় ‘জারা সা’ গানও কেকের গাওয়া। নীলেশ মিশ্র ও সৈয়দ কাদরির লেখা প্রীতম চক্রবর্তীর সুরে কণ্ঠ দিয়েছিলেন কৃষ্ণকুমার কুন্নথ। ইমরান হাশমি ও সোনাল চৌহানের জন্য তৈরি ছিল গানটি।
জিন্দেগি দো পাল কি (কাইটস): ‘জিন্দেগি দো পাল কি, ইন্তেজার কাব তাক হাম কারেঙ্গে ভালা’... কেকের কণ্ঠে এই কথাগুলো মানুষের মনে তৎক্ষণাৎ জায়গা করে নেয়।

সাচ কাহে রাহা হ্যায় (রাহেনা হ্যায় তেরে দিল মে): কেকের দুর্দান্ত গায়কী, আর মাধবনের অনবদ্য অভিনয়ের মিশেল। এই গানের মাধ্যমেই পর্দার ম্যাডি পরতে পরতে নিজের মনের ভাব প্রকাশ করতে পেরেছিলেন।

কেকের পূর্ণ নাম কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ। ১৯৬৮ সালের ২৩ আগস্ট দিল্লিতে এক মালয়ালি পরিবারে জন্ম নেন তিনি
ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে

ইয়ারোঁ: কেকে মানেই ভালোবাসা ও বন্ধুত্বের মিশ্রণ। তাঁর কণ্ঠে নিজের অ্যালবামের গান ‘ইয়ারোঁ দোস্তি বড়ি হি হসিন হ্যায়’, বন্ধুত্বের সংজ্ঞা বদলে দিয়েছিল। হাজার হাজার যুবক-যুবতীর প্রিয় গায়কের আসনে কেকে-কে বসানোর পেছনে এই গানের অবদান অনেক।
তু জো মিলা’ (বজরঙ্গি ভাইজান): ‘বজরঙ্গি ভাইজান’ সিনেমায় ব্যবহৃত কাওসার মুনীরের লেখা ‘তু জো মিলা’ গানটির সংগীত পরিচালক প্রীতম। এ গানও দারুণ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল।