ঘৃণা প্রকাশ করা খুব সহজ হয়ে গেছে, সাক্ষাৎকারে খোলামেলা বিটিএসের আরএম
বিশ্বসংগীতের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যান্ড বিটিএসের সদস্য আরএম সম্প্রতি হারপার্স বাজার কোরিয়ার সেপ্টেম্বর সংখ্যার প্রচ্ছদে হাজির হয়েছেন এক নতুন আঙ্গিকে। উইভার্সে ভক্তরা ঝাঁপিয়ে পড়েছেন সাময়িকীটি প্রি-অর্ডার করতে। এর মধ্যেই প্রকাশিত হয়েছে সাময়িকীর একঝলক ছবি ও সাক্ষাৎকারের অংশবিশেষ; যেখানে উঠে এসেছে সামরিক দায়িত্ব শেষে তাঁর জীবনের নতুন ভাবনা, বিলাসবহুল ব্র্যান্ডের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে যাত্রা, আর ক্যামেরার সামনে লাজুক এক তরুণ থেকে গভীরতর শিল্পীসত্তার সন্ধান—সবই। প্রকাশিত তিনটি ছবিতে দেখা গেছে এক আত্মবিশ্বাসী আরএমকে
ব্র্যান্ডের মুখপাত্র হওয়ার চ্যালেঞ্জ
সাক্ষাৎকারে আরএম স্বীকার করেছেন, এই সময়ে ব্র্যান্ড প্রতিনিধিত্ব করা সহজ নয়। বোতেগা ভেনেটার শুভেচ্ছাদূত হওয়ার পাশাপাশি সম্প্রতি স্যামসাং আর্ট টিভির বৈশ্বিক শুভেচ্ছাদূত হিসেবে যোগ দিয়েছেন তিনি। শুভেচ্ছাদূত মানেই প্রচারের প্রচুর কাজ, বিজ্ঞাপনচিত্র আর ক্যামেরার সামনে অনেক অনেক কাজ। আরএমের সঙ্গে তাই ক্যামেরার সম্পর্কও বদলেছে।
‘আগে আমি শুধু ছবিতে ভালো দেখানোর চেষ্টা করতাম। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে পোজ, মুখভঙ্গি—সব অনুশীলন করতাম। এখন ছবি তোলা যেন আরও দায়িত্বপূর্ণ মনে হয়’, বলেছেন আরএম। তবে পরিচিত গণমাধ্যম, আলোকচিত্রী আর টিমের সঙ্গে কাজ করায় প্রক্রিয়াটা সহজ হয়েছে, এমনকি উপভোগ্যও লেগেছে তাঁর কাছে।
আরএমের সোজাসাপ্টা উত্তর দেওয়ার ধরন নিয়ে তাঁর এজেন্সি মাঝেমধ্যেই অস্বস্তিতে পড়ে। তবু প্রশ্ন এলে তিনি নিজেকে খোলসবন্দী না করে সহজাতভাবে উত্তর দেন। তিনি বলছিলেন, ‘বিটিএসের আরএম হিসেবে, মঞ্চে ওঠা, নতুন অ্যালবাম প্রকাশ, বা আত্মবিশ্বাসীভাবে ফ্যানদের সামনে দাঁড়ানো—এসব মুহূর্তে নিজেকে সবচেয়ে জীবন্ত মনে হয়। কিন্তু কিম নামজুন (তাঁর আসল নাম) হিসেবে, যখন আমি পছন্দের মানুষদের সঙ্গে নির্ভয়ে, নিজের মতো সময় কাটাই, বা এমন জায়গায় থাকি যেখানে কেউ আমাকে চেনে না—সেই সময়েই আমি নিজের আসল সত্তার কাছে পৌঁছাই।’
তাঁর ভ্রমণপ্রীতি আর আর্ট গ্যালারিতে ঘোরাঘুরি ভক্তদের অজানা নয়। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ঘুরতে ভালো লাগে, কিন্তু বেশি দিন বাইরে থাকতে পারি না। দ্রুত বাড়ি ফিরতে ইচ্ছা করে। আর আবার গানে ডুবে যাওয়াই আমাকে বাঁচিয়ে রাখে।’
খ্যাতি ও ভালোবাসার টানাপোড়েন
খ্যাতি নিয়ে তাঁর মিশ্র অনুভূতির কথা আরএম আগেও বলেছেন। বিশ্বমঞ্চে অন্যতম বড় ব্যান্ডের নেতা হিসেবে তিনি জানেন এর ওজন কতটা ভারী। ভালোবাসা নিয়ে সংগীতে এত লেখালেখি কেন হয়, সেই প্রশ্নও তাঁর মনে আসে। তিনি বলেন, ‘আজকের দিনে সামাজিক ঘৃণা প্রকাশ করা খুব সহজ হয়ে গেছে। আমি মনে করি, অন্যের প্রতি এত ঘৃণা পোষণ কুৎসিত ব্যাপার। দুঃখ, ঘৃণা—এসব নিয়ে অবশ্যই কথা বলা যায়, কিন্তু দিনের শেষে ভালোবাসা আর ইতিবাচকতা ছড়ানোই একধরনের গুণ, আর আমি সেটাই বিশ্বাস করি।’
বিটিএস ২০২৬ সালের কামব্যাক অ্যালবামের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত। যুক্তরাষ্ট্রে তাদের নতুন প্রজেক্টের শুটিংও চলছে জোরকদমে।