৫ দিন ধরে হাসপাতালে সুজেয় শ্যাম
ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি আছেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সুরকার ও সংগীত পরিচালক সুজেয় শ্যাম। শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে ১১ জুন তিনি এই হাসপাতালে ভর্তি হন। শুরু থেকেই তাঁকে হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মেয়ের স্বামী দীপংকর দে।
আজ শনিবার সকালে বাপ্পী জানান, তাঁর শ্বশুরের চিকিৎসার জন্য একাধিক বোর্ড মিটিং হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁর চিকিৎসার ব্যাপারে যথেষ্ট আন্তরিক। এনজিওগ্রাম করার কথা বলেছেন; দেখা যাক। তবে তিনি যে অবস্থা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, তার চেয়ে এখন কিছুটা ভালোর দিকে।
কথা হয় সুজেয় শ্যামের সঙ্গেও। আজ সকালে তিনি বলেন, ‘হঠাৎ হঠাৎ আমার শ্বাসকষ্টের সমস্যা হয়। হাসপাতালে ভর্তির পরও একবার হয়েছে। তবে এখন কিছুটা ভালো ফিল করছি। ডাক্তাররা বারবার বিভিন্ন পরীক্ষা–নিরীক্ষা করছেন। আজ সকালেও একটা বোর্ড মিটিং হয়েছে। তাঁরা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। আমি তো ক্যানসারের পেশেন্ট। কিডনির সমস্যাও আছে। তাই ট্রিটমেন্ট করার ক্ষেত্রে অনেক কিছু ভাবতে হয় ডাক্তারদের। তবে তাঁরা আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। আমার বয়স ৭৯ হয়েছে। সবাই আমার সুস্থতার জন্য দোয়া করবেন।’
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী হিসেবে দেশ স্বাধীনের ৪৫ বছর পর মুক্তিযোদ্ধার সনদ পান সুজেয় শ্যাম। তার আগপর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে কোনো ভাতা পেতেন না বরেণ্য এই সুরকার ও সংগীত পরিচালক। দুই বছর ধরে তা পাচ্ছেন। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শেষ গান এবং পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের পর প্রথম গানের সুর করেন সুজেয় শ্যাম।
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গীতিকার শহীদুল আমিনের লেখা ‘বিজয় নিশান উড়ছে ওই’ গানের সুর ও সংগীত পরিচালনা করেন তিনি। গানটির প্রধান কণ্ঠশিল্পী ছিলেন অজিত রায়। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত সুজেয় শ্যামের অন্য গানগুলোর মধ্যে আছে ‘রক্ত দিয়ে নাম লিখেছি’, ‘রক্ত চাই রক্ত চাই’, ‘আহা ধন্য আমার জন্মভূমি’, ‘আয়রে চাষি মজুর কুলি’, ‘মুক্তির একই পথ সংগ্রাম’ ও ‘শোন রে তোরা শোন’।
২০০৯ সালে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের ৫০টি গান এ প্রজন্মের শিল্পীদের দিয়ে নতুন সংগীতায়োজনে গাইয়েছেন সুজেয় শ্যাম। তাঁকে সহযোগিতা করেন পার্থ বড়ুয়া। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে ২০১৪ সালের স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে শুদ্ধ সুরে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়, এটিরও সংগীতায়োজন করেন সুজেয় শ্যাম।