ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ে যে গীতিকবির সর্বাধিক গান

আসিফ ইকবালের লেখা তিনটি গান একসঙ্গে ইউটিউবের সেরা দশ ট্রেন্ডিংয়ে আছেকোলাজ

এবারের ঈদে মুক্তি পায় হিমেল আশরাফ পরিচালিত সিনেমা ‘রাজকুমার’। এ সিনেমার ‘রাজকুমার’ গানটি ইউটিউবে প্রকাশ পায়। প্রকাশের পর থেকেই দর্শক-শ্রোতারা পছন্দ করেন গানটি। দ্রুত সময়ে গানটি চলে আসে ট্রেন্ডিংয়ে। ঈদের ১০ দিন পার হয়ে গেলেও এখনো ইউটিউবে রাজত্ব করছে ‘রাজকুমার’। আকাশ সেনের সুরে বালাম ও কোনালের গানটি লিখেছেন আসিফ ইকবাল।
শুধু এ গান নয়, আসিফ ইকবালের লেখা তিনটি গান একসঙ্গে ইউটিউবের সেরা দশ ট্রেন্ডিংয়ে আছে। যিনি মূলত গত বছর থেকে সমৃদ্ধ সংগীত ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করেছেন সিনেমার মাধ্যমে। ‘যদি লক্ষ্য থাকে অটুট, বিশ্বাস হৃদয়ে/ হবেই হবেই দেখা, দেখা হবে বিজয়ে’ রিয়েলিটি শোয়ের জন্য সাড়া জাগানো গানটি তাঁর লেখা।
গান লেখার চার দশকের ক্যারিয়ারে সিনেমার জন্য গান লেখা শুরু করেছিলেন ২০১৮ সালে। ‘ঢাকা অ্যাটাক’, ‘ভয়ংকর সুন্দর’, ‘ইউটার্ন’ ও ‘যদি একদিন’ হয়ে শাকিব খানের ‘প্রিয়তমা’ আর মাহফুজ আহমেদের ‘প্রহেলিকা’ সিনেমার জন্য লিখে তিনি আলোচনায় আসেন। সেই ধারায় এবারের ঈদে মুক্তি পাওয়া সবচেয়ে বড় ছবি ‘রাজকুমার’-এর টাইটেল গানও তাঁরই লেখা। যে গান মুক্তির পর থেকেই অবস্থান করছিল ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ে বাংলাদেশের এক নম্বর গান হিসেবে।

আসিফ ইকবাল
ছবি : প্রথম আলো

২১ এপ্রিল ইউটিউব ট্রেন্ডিং তালিকায় দেখা গেছে, আসিফ ইকবালের লেখা আরও দুটি গান অবস্থান করছে সেরা ১০টি গানের মধ্যে। এর মধ্যে ৭ নম্বরে রয়েছে ইমরান ও তৃষার গাওয়া স্বাধীন গানচিত্র ‘ভালোবাসি বলে যাও’। যা এই ঈদে প্রকাশ করা হয়েছে ইমরানের নিজের ইউটিউব চ্যানেলে। আর ট্রেন্ডিংয়ের ৯ নম্বর তালিকায় অবস্থান করছে গত বছরের সুপারহিট গান ‘ও প্রিয়তমা’। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

গত বছর মুক্তি পাওয়া হিমেল আশরাফের সিনেমা প্রিয়তমার হিট গান ‘ও প্রিয়তমা’। আসিফ ইকবালেরই লেখা বালাম ও কোনাল জুটির এই গান মুক্তির পরই সাড়া ফেলেছিল। প্রায় এক বছর পরও গানটি ট্রেন্ডিংয়ের সেরা দশে থাকা নিঃসন্দেহে বড় ঘটনা।

‘রাজকুমার’-এর টাইটেল গান মুক্তির পর থেকেই অবস্থান করছিল ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ে বাংলাদেশের এক নম্বর গান হিসেবে

নিজের আলোচিত গান প্রসঙ্গে আসিফ ইকবালের ভাষ্য, ‘আমি শুধুই একজন গীতিকবি। শিল্পী বা সুরকার নই। ফলে এই বহুমাত্রিক সময়ে শুধু গান লিখে নিজেকে প্রমাণ করাটা বেশ কঠিন। সেই কঠিন সময়ে ট্রেন্ডিংয়ে নিজের লেখা তিনটি গান একসঙ্গে দেখলে নিজেরই অবাক লাগে। চোখ ঝাপসা হয়ে আসে। চার দশক ধরে আমার গান লেখার অভিজ্ঞতা। শ্রোতাদের ভালোবাসা ছাড়া এত দিন টেকা যেত না। তবে গত বছর থেকে সিনেমায় নিয়মিত হওয়ার পর গান লেখার আনন্দটা যেন নতুন করে অনুভব করছি। এই গুড-ফিল অনুভূতিটা বাঁচিয়ে রাখতে চাই। ধন্যবাদ জানাতে চাই, আমার সুরকার, শিল্পী, নির্মাতা ও নায়ক-নায়িকাদের। কারণ, সিনেমার কাজটি আসলেই টিমওয়ার্ক।’

চার দশকে আসিফ ইকবাল লিখেছেন পাঁচ শতাধিক গান। যার প্রায় সব কটি সিনেমার বাইরে, বেতার, টেলিভিশন আর অডিওতে। তার লেখা প্রথম গান প্রকাশিত হয় ১৯৮৪ সালে বিটিভিতে। সৈয়দ মনসুরের সুরে বন্ধন শিল্পীগোষ্ঠীর জন্য লেখা সেই গানের নাম ‘অনেক তো বলেছি’।

‘ও প্রিয়তমা’ গানের দৃশ্য। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

এরপর আর থামেননি। লিখেছেন হাতভরে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো কুমার বিশ্বজিতের ‘সুখ ছাড়া দুখ’, ‘তারা ভরা রাত’, ‘মেঘ রঙ মেয়ে’; জেমসের ‘অনন্যা’; নকীব খানের ‘স্বপ্ন জড়ানো’; নকীব-সামিনা চৌধুরীর ‘তুমি এলে পায়ে পায়’; আইয়ুব বাচ্চুর ‘ভাঙা মন’, ‘বহুদূর যেতে হবে’, ‘পরিত্যক্ত ডায়েরিটা’; আশিকুজ্জামান টুলুর ‘এই দূর পরবাসে’; সামিনা-ফাহমিদা নবীর ‘আমার সকল সুখে বুবু’; নিলয়ের ‘হ্যাপি তোকে মনে পড়লে’; মাহাদির ‘সুনীল বরুনা’, ‘মেঘ হয়ে কাঁদো বলে’, ‘অন্যরকম’; মাহাদি-এলিটার ‘হৃদয়ের ঝড়ে’, ‘নিঝুম রাত’, ‘ভোরের শিশির’; সোয়েব-এলিটার ‘ঘুম হয়ে আজ থাকতে যদি’; ন্যান্‌সির ‘আমি ছুঁয়ে দিলেই’; মিনারের ‘কী তোমার নাম’, ‘বাড়াবাড়ি’, ‘একটুখানি’, ‘বাবা–মায়ের জন্য’ প্রভৃতি।
ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ের তালিকা এই লিংকে://www.youtube.com/feed/trending?bp=4gINGgt5dG1hX2NoYXJ0cw%3D%3D