ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে ইতিহাস গড়ল ব্ল্যাকপিঙ্ক
এদিন ব্ল্যাকপিঙ্ক যেন পণ করে এসেছিল, প্রমাণ করবে, তারাই এ সময়ের দুনিয়ার সেরা গার্ল গ্রুপ। গত শুক্রবার রাতে লন্ডনের ঐতিহাসিক ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিটের গান ও নাচ মিলিয়ে দর্শকেরা যেন চলে গিয়েছিলেন জাদুবাস্তবতার দুনিয়ায়।
জিসু, জেনি, রোজে ও লিসা—এই চার সদস্যের দল প্রথম কে-পপ গার্ল ব্যান্ড হিসেবে ওয়েম্বলির মঞ্চে পারফর্ম করল। তাদের আগে এই মঞ্চে পারফর্ম করে গেছেন মাইকেল জ্যাকসন, টেলর সুইফট, বিটিএস, ওয়েসিসসহ পৃথিবীর নানা দেশের বিখ্যাত সব ব্যান্ড ও শিল্পীরা। ফ্রেডি মার্কারির কুইন ব্যান্ডের বিখ্যাত ‘লাইভ এইড’ কনসার্টটি এখানেই হয়েছিল। সব মিলিয়ে এটা ছিল ব্ল্যাকপিঙ্কের জন্য স্বপ্নপূরণের মতো।
এদিন কনসার্টের ফাঁকে লিসা বলেন, ‘ওয়েম্বলিতে পারফর্ম করা আমাদের জন্য এক সম্মানের। ৭০ হাজার দর্শক আমাদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে এই রাতকে অসাধারণ করে তুলেছেন।’ জেনি যোগ করেন, ‘এটা এক মহাকাব্যিক স্বপ্ন। এখনো বিশ্বাস করা মুশকিল।’ রোজে আরও বলেন, ‘লন্ডনে শেষবারের মতো আসা ছিল দারুণ এক স্মৃতি কিন্তু এবারের অভিজ্ঞতা একেবারেই ভিন্ন মাত্রার।’
এদিন শো শুরু হয় লেজার লাইট, ধোঁয়া ও পিরোটেকনিকের ঝলমলে ঝলক দিয়ে। মঞ্চে উঠেই ‘কিল দিস লাভ’, ‘হাউ ইউ লাইক দ্যাট’ ও ‘পিঙ্ক ভেনম’-এর মতো তিনটি হিট গান পরিবেশন করেন ব্ল্যাকপিঙ্ক। দর্শকেরা ততক্ষণে মজে গেছেন সুর আর নাচের জাদুতে।
এদিন মঞ্চের কোরিওগ্রাফিও ছিল নিখুঁত; শো শেষ হওয়ার পর বিভিন্ন গণমাধ্যম পুরো কনসার্টের প্রশংসা করেছে। এদিন প্রত্যেক সদস্য একে একে গানের লাইন ধরেন; এরপর সমবেত কণ্ঠে বাকিটা শেষ করেন; যাকে সমালোচকেরা বলছেন—‘ম্যাজিক্যাল ফরমেশন’।
ব্ল্যাকপিঙ্কের সদস্যরা কয়েক বছর ধরে নিজেদের একক ক্যারিয়ার নিয়ে ব্যস্ত, লিসা, জিসুর মতো কেউ আবার অভিনয়েও নাম কামিয়েছেন। তাই অনেকেরই আশঙ্কা ছিল একসঙ্গে মঞ্চে পারফর্ম করতে গিয়ে হয়তো ব্যান্ডের আগেই সেই রসায়ন খুঁজে না–ও পাওয়া যেতে পারে। তবে এদিন সব আশঙ্কা ভুল প্রমাণ করেছেন তাঁরা। শোতে দেখা যায়, দীর্ঘ সময়ের পরও তাদের চারজনের বন্ধুত্ব ও পরস্পরের রসায়ন মঞ্চে আরও শক্তিশালী হয়েছে।
জিসু থাম্বস-আপ দেখিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন। এরপর চারজন একসঙ্গে আলিঙ্গন করেন, ভক্তরা তখন সমস্বরে চিৎকার করে ওঠেন। মনে রাখার মতো একটি কনসার্টের স্মৃতি নিয়ে বাড়ির পথ ধরেন।
গতকাল শনিবারও ওয়েম্বলিতে পারফর্ম করেছে ব্ল্যাকপিঙ্ক, এটি তাদের চলমান ডেডলাইন ট্যুরের অংশ। লন্ডনে দুই দিনের কনসার্টের মাধ্যমে ট্যুরের ইউরোপ অংশ শেষ হলো, এরপর ব্যান্ডটি আসবে এশিয়ায়। ২০২৬ সালের ২৫ জানুয়ারি হংকংয়ে শেষ হবে এই কনসার্ট ট্যুর।
২০১৬ সালের ৮ আগস্ট যাত্রা করে চার সদস্যের ব্ল্যাকপিঙ্ক। এ সময়ের মধ্যেই বহুভাষী পারফরম্যান্স দিয়ে দেশের সীমানা পেরিয়ে তারা যুক্ত হচ্ছে নানা দেশের নানা বয়সের ভক্তদের সঙ্গে। জিসু, জেনি, রোজে আর লিসা অগণিত ভক্তকে টেনেছেন ব্ল্যাকপিঙ্কের দিকে। এই ব্যান্ডের ভক্তদের বলা হয় ‘ব্লিঙ্ক’।
তথ্যসূত্র : বিবিসি