৬৫ বছর বয়সে ম্যাডোনা ঝড়, কোপাকাবানায় কনসার্টে ১৬ লাখ দর্শক!

গানে গানে মঞ্চ মাতান ম্যাডোনা। ছবি: এএফপি

বয়স ৬৫। সেরা সময় ফেলে এসেছেন আরও আগে, যৌবনে মঞ্চে তিনি যেভাবে ‘আগুন’ ঝরাতেন, এখন অনেক সময়ই সেই উত্তাপ পাওয়া যায় না। গত বছর তো গুরুতর অসুস্থতায় প্রায় মরতেই বসেছিলেন। তবু তিনি ম্যাডোনা বলে কথা। তিনি গাইবেন আর ঝড় উঠবে না, তা কি হয়! এবার ম্যাডোনা-ঝড়ের সাক্ষী হয়ে রইল ব্রাজিলের বিখ্যাত কোপাকাবানা সৈকত। গত শনিবার রাতে এখানেই হয় ম্যাডোনার কনসার্ট। ব্রাজিলের পর্যটন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নিখরচার এই কনসার্ট দেখতে এসেছিলেন ১৬ লাখের বেশি দর্শক! যা একক শিল্পীর কনসার্টে দর্শক উপস্থিতির দিক থেকে সর্বকালের সবচেয়ে বড় কনসার্ট।

কোপাকাবানা সৈকতে কনসার্ট উপলক্ষে দুপুরের পর থেকেই ভিড় বাড়তে থাকে ব্রাজিলের প্রখ্যাত এই সমুদ্রসৈকতে। সন্ধ্যার পর আক্ষরিক অর্থেই পরিণত হয় জনসমুদ্রে।। ছবি: এএফপি

১৯৮৩ সালে পেশাদার গানের দুনিয়ায় যাত্রা শুরু করেন ম্যাডোনা। গানে চার দশক পূর্তি উপলক্ষে গত বছর শুরু হয় তাঁর ‘দ্য সেলিব্রেশন ট্যুর’ কনসার্ট। ২০২৩ সালের ১৪ অক্টোবর লন্ডনে শুরুর পর শনিবার রাতে রিও ডি জেনিরোতে ঐতিহাসিক শো দিয়ে শেষ হলো আলোচিত এই কনসার্ট ট্যুর।

‘সবাই কি প্রস্তুত?’ কনসার্ট শুরুর আগে ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেছিলেন ম্যাডোনা। সবাই যে কতটা প্রস্তুত ছিলেন, সেটা বোঝা গেছে কনসার্ট শুরুর পর।

কোপাকাবানা সৈকতে ম্যাডোনার কনসার্টে হাজির হয়েছিলেন ১৬ লাখের বেশি দর্শক। ছবি: এএফপি

কনসার্ট উপলক্ষে দুপুরের পর থেকেই ভিড় বাড়তে থাকে ব্রাজিলের প্রখ্যাত এই সমুদ্রসৈকতে। সন্ধ্যার পর আক্ষরিক অর্থেই পরিণত হয় জনসমুদ্রে।

আরও পড়ুন

ব্রাজিলের স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১০টার দিকে কোপাকাবানা প্যালেস হোটেল থেকে বিশেষ এলিভেটেড ব্রিজে মঞ্চে আসেন ম্যাডোনা। পরনে কালো পোশাক, পপ তারকা শো শুরু করেন নব্বইয়ের তুমুল জনপ্রিয় গান ‘নাথিং রিয়েলি ম্যাটার্স’ দিয়ে। জনসমুদ্র ততক্ষণে উল্লাসে ফেটে পড়েছে, কোপাকাবানা সৈকত পরিণত হয়েছে উৎসবের কেন্দ্রে।

‘রিও, দুনিয়ার সবচেয়ে সুন্দর জায়গায় আমরা আছি’, গান থামিয়ে হঠাৎ বলতে শুরু করেন ম্যাডোনা। উপস্থিত দর্শক হাত নেড়ে আর ক্রমাগত চিৎকারে দেন যোগ্য সংগত। রাত যত বাড়তে থাকে, ম্যাডোনা-জাদুতে বুঁদ হয়ে যান সবাই।

গাইছেন ম্যাডোনা। এএফপি

‘লাইক আ প্লেয়ার’, ‘ভোগ’-এর মতো একের পর এক বিখ্যাত সব গান আর ম্যাডোনার আবেদনময়ী নাচে তখন পুরোপুরি মজে গেছেন সবাই।

এদিন কনসার্টটি ভালোভাবে উপভোগ করার জন্য সৈকতে অনেকগুলো বড় পর্দা লাগানো হয়েছিল। এ ছাড়া পুরো সৈকতে ছিল টি-শার্ট, স্যুভেনিরসহ নানা উপকরণের দোকান। এই কনসার্ট ব্রাজিলের স্থানীয় অর্থনীতিতে ৪০ লাখ ডলারের বেশি অবদান রেখেছে বলে জানা গেছে। কনসার্ট দেখতে সারা দুনিয়া থেকে এসেছিলেন অনেক ম্যাডোনা-ভক্ত। এ জন্য রিও ডি জেনিরোতে ১৭০টি অতিরিক্ত ফ্লাইট নেমেছে। স্থানীয় হোটেলগুলোও ছিল প্রায় শতভাগ পূর্ণ। নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন ৩ হাজার ২০০ সেনাসদস্য, প্রস্তুত ছিলেন ১ হাজার ৫০০ পুলিশ সদস্য।

তথ্যসূত্র: বিবিসি, এএফপি