চাপ না নিয়ে পরিবারের সান্নিধ্যে আনন্দ খুঁজুন: আসিফ

দুই ছেলে রণ ও রুদ্র এবং স্ত্রী বেগম সালমা আসিফের সঙ্গে জনপ্রিয় গায়ক আসিফ আকবর
ছবি : ফেসবুক

সোজাসাপটা কথা বলতেই পছন্দ করেন জনপ্রিয় গায়ক আসিফ আকবর। বিনোদন অঙ্গনের মানুষের পাশাপাশি তাঁর ভক্ত-শুভাকাঙ্ক্ষীরাও আসিফের এই অভ্যাসের কথা জানেন। সময়–সুযোগ পেলেই আসিফ এখন তাঁর ভাবনাচিন্তা নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পোস্ট করে থাকেন। আজ সোমবার সকালে আসিফ তাঁর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘অনেক চাপ না নিয়ে পরিবারের সান্নিধ্যে আনন্দ খুঁজুন। দিন শেষে পরিবারই আসল আশ্রয়স্থল। সফল ফ্যামিলিম্যান হিসেবেই লেকচারটা দিলাম, জ্ঞানপাপী হিসেবে নয়।’

সংগীতশিল্পী আসিফ আকবর ও তাঁর স্ত্রী মিতুর সঙ্গে ছেলের শ্বশুর–শাশুড়ি (বামে)
ছবি : সংগৃহীত

শব্দযন্ত্রের ব্যবসা করবেন বলে ১৯৯৭ সালের ১৫ অক্টোবর ঢাকায় আসেন জনপ্রিয় গায়ক আসিফ আকবর। কুমিল্লার ইফতেখার আহমেদ তাঁকে নিয়ে যান সংগীত পরিচালক শওকত আলী ইমনের কাছে। ওখানে গানের ডেমো ভয়েস দিতেন। আরেক সংগীত পরিচালক আলী আকরামের সঙ্গেও পরিচয় হয় সেখানে। ‘ক্ষ্যাপা বাসু’ সিনেমার একটি গানে কণ্ঠ দেন আসিফ। এই গান শুনে আসিফকে ডাকলেন সুরকার ও সংগীত পরিচালক ইথুন বাবু। তখন আসিফ মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। ঢাকা-কুমিল্লা যাওয়া-আসা করেন। তখন তিনি দুই সন্তান—রণ ও রুদ্রর বাবা। চলতি বছর আসিফ রঙ্গন নামের একটি কন্যাসন্তানের বাবা হয়েছেন। সম্প্রতি বড় ছেলে রণকে বিয়ে করিয়েছেন। বউমা ঈশিতাকে নিয়ে উচ্ছ্বাসের শেষ নেই শ্বশুর আসিফের। তেমনই একটি ঘটনা ফেসবুক বন্ধু ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের সঙ্গে ভাগাভাগি করলেন।

আসিফের বড় ছেলে রন ও তাঁর স্ত্রী, ডান পাশে ছোট ছেলে রুদ্র

আজ সোমবার সকালে আসিফ লিখেছেন, ‘রাত প্রায় নয়টা বাজে। বাসায় বেগম (আসিফের স্ত্রী বেগম সালমা আসিফ) নেই, রণ, রুদ্রও নেই। ভাগনি সাহারার তত্ত্বাবধানে আছে আমার ছোট্ট মেয়ে আইদাহ্। বাসা থেকে বের হয়ে যাব স্টুডিওর দিকে, বউমা ঈশিতার সঙ্গে করিডরে দেখা। ক্লান্ত মেয়েটা মাত্র অফিস শেষ করে বাসায় ঢুকেছে। এবার ওর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে এলিভেটরে গ্রাউন্ড ফ্লোর প্রেস করার সময় অদ্ভুত একটা অনুভূতি মননে খেলে গেল। আমরা পুরোনো সদস্যরা বাসায় কেউ নেই, আমার বউমা এখন সর্বেসর্বা, ভাবতেই ভালো লাগছিল।’

আসিফ আকবর।

আসিফ এ–ও লিখলেন, ‘যাদের সঙ্গে শেয়ার করব, তাদের সময় নেই, আমারও অত অস্থিরতা নেই বোঝানোর। কারণ, আমি এসব অনুভূতি উপভোগ করতে চাই একান্তে, বোঝাতে গেলেই মজা নষ্ট হয়ে যাবে। এভাবেই পট পরিবর্তন হয়, নিজেকে সেয়ানা ভাবতে গিয়ে অধীশ্বর হয়ে ওঠার বিকারগ্রস্ত মানসিকতা সামাজিক কুলীনদেরই ভোগায়। ঐতিহ্য আর সংস্কৃতির ভুয়া বাণিজ্যে ঘরে প্রবেশ করা নতুন মেয়েটি আসলেই অসহায়। তার ওপর কিম জং–উনের মিসাইলতত্ত্ব চাপিয়ে দেওয়ার প্রবণতা সরব থাকে। আমার ঘরে মেয়ে এসেছে। আমার মেয়ে আরেক ঘরে গিয়ে মেয়ে হিসেবে ওই ঘরটাকে আলোকিত করবে। এটাই নারী জাতির আসল ক্যারিশমা। মাঝখানে যত ভজকট ঘটে, সেগুলো নিতান্তই বাজে উদাহরণ। প্রতিটা গৃহে কোনো মেয়ের বউ হয়ে আসা কিংবা মেয়ে হয়ে জন্ম নেওয়া সেই সংসারে কোনোভাবেই অনুপ্রবেশ নয়। সৌভাগ্য ওই ঘরটার, যেখানে মেয়েটির স্নিগ্ধতার পরশ বিরাজমান থাকবে জন্ম–জন্মান্তরে।’

ছেলে রণর স্ত্রীকে নিজের আরেকটা মেয়ে মনে করছেন আসিফ। বিভিন্ন সময় কথায় তা প্রকাশও করেছেন দেশের জনপ্রিয় এই নায়ক। আসিফ তাই লিখেছেন, ‘আমি মহা আনন্দিত, আমার বউমা ঈশিতা আর মেয়ে রঙ্গনকে নিয়ে। বোনাস হিসেবে বেগম সালমা এখনো হেড অব ফ্যামিলি পোস্ট হোল্ড করছেন। অনেক কারণ অকারণ খরা শেষে এই বসন্তবৃষ্টি খুব ভালো লাগছে আমার। অনেক চাপ না নিয়ে পরিবারের সান্নিধ্যে আনন্দ খুঁজুন, দিন শেষে পরিবারই আসল আশ্রয়স্থল। সফল ফ্যামিলিম্যান হিসেবেই লেকচারটা দিলাম, জ্ঞানপাপী হিসেবে নয়।’