গায়ক জুবিনের মৃত্যু নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য, আসলে মৃত্যুর কারণ কী

জুবিন গার্গশিল্পীর ফেসবুক থেকে

ভারতীয় গায়ক জুবিন গার্গের মৃত্যুর তদন্তে নতুন মোড় এসেছে। তাঁর ব্যান্ড সদস্য শেখর জ্যোতি গোস্বামী অভিযোগ করেছেন, জুবিনের ম্যানেজার সিদ্ধার্থ শর্মা ও নর্থইস্ট ইন্ডিয়া ফেস্টিভ্যালের আয়োজক শ্যামকানু মহন্ত তাঁকে বিষপ্রয়োগে হত্যা করেছেন এবং ঘটনাটিকে দুর্ঘটনা হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করেছেন।

ভারতীয় নাগরিক নিরাপত্তা সংহিতার (বিএনএনএস) অধীনে রেকর্ড করা সাক্ষ্য অনুযায়ী গোস্বামী তদন্তকারীদের জানিয়েছেন যে সিঙ্গাপুরে জুবিন গার্গের মৃত্যুর আগে-পরে সিদ্ধার্থ শর্মার আচরণ ছিল সন্দেহজনক।

আরও পড়ুন

জ্যোতি গোস্বামী জানান, ঘটনার দিন ইয়টে ভ্রমণের সময় শর্মা নাবিকের কাছ থেকে জোর করে ইয়টের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন, যার ফলে ইয়টটি মাঝসমুদ্রে বিপজ্জনকভাবে দুলতে থাকে এবং যাত্রীদের জীবন ঝুঁকিতে পড়ে। তিনি আরও বলেন, শর্মা ‘আসাম অ্যাসোসিয়েশন (সিঙ্গাপুর)’-এর সদস্য ও প্রবাসী তন্ময় ফুকনকে বলেছিলেন, তিনি যেন পানীয় সরবরাহ না করেন। কারণ, শর্মা নিজেই তা দেবেন।

জুবিন গার্গ
ইনস্টাগ্রাম থেকে

গোস্বামীর ভাষ্য অনুযায়ী, যখন জুবিন শ্বাস নিতে লড়াই করছিলেন ও প্রায় ডুবে যাচ্ছিলেন, তখন শর্মাকে বলতে শোনা যায়, ‘যেতে দে, যেতে দে।’ গোস্বামী জোর দিয়ে বলেন, জুবিন ছিলেন প্রশিক্ষিত সাঁতারু, যিনি নিজে তাঁদের দুজনকেও সাঁতার শিখিয়েছিলেন, তাই তাঁর মৃত্যু ডুবে যাওয়ার কারণে হওয়ার কথা নয়।

আরও পড়ুন

গোস্বামীর দাবি, শর্মা ও মহন্ত দুজনেই জুবিনকে বিষ প্রয়োগ করেছিলেন এবং ষড়যন্ত্র গোপন রাখতে ইচ্ছা করেই সিঙ্গাপুরকে বেছে নিয়েছিলেন। তিনি আরও জানান, শর্মা তাঁকে ইয়টের কোনো ভিডিও কাউকে না দিতেও নির্দেশ দিয়েছিলেন।

জিজ্ঞাসাবাদের সময় শর্মা ও মহন্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে গোস্বামী তদন্তকারীদের জানান, যখন জুবিনের মুখ ও নাক দিয়ে ফেনা বের হচ্ছিল, তখন শর্মা বলেছিলেন, এটি কেবল ‘অ্যাসিড রিফ্ল্যাক্স’, চিন্তার কিছু নেই। তিনি তৎক্ষণাৎ চিকিৎসক না ডেকে বরং এমন আচরণ করেন, যা জুবিনের ‘অকালমৃত্যু’ ত্বরান্বিত করে।

তদন্ত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নথি, আর্থিক লেনদেন, সাক্ষ্যসহ বিভিন্ন প্রমাণ প্রাথমিকভাবে শর্মার দোষী ভূমিকা প্রমাণ করছে।

এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) ও ইনকাম ট্যাক্স (আই-টি) বিভাগও এই মামলায় যোগ দিতে পারে—বিশেষ করে শ্যামকানু মহন্তের নামে আর্থিক অপরাধ ও বেনামি সম্পত্তি অর্জনের অভিযোগ রয়েছে।

বোন জনকি বোরঠাকুর ও জুবিন
ছবি: জুবিনের ফেসবুক

আসাম পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ইতিমধ্যে মহন্তের বিরুদ্ধে ২০ বছর আগের একটি নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চাকরির সময়ের আর্থিক অনিয়মও খুঁজে পেয়েছে। ঘটনাসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ইডি ও আয়কর দপ্তরের কর্মকর্তারা ইতিমধ্যে সিআইডি সদর দপ্তরে গিয়ে মামলার নথি পর্যালোচনা করেছেন।